শনিবার, ১১ জানুয়ারী ২০২৫, ০৬:০৪ অপরাহ্ন

মেট্রোরেলের আগারগাঁও-মতিঝিল অংশ ও এমআরটি লাইন-৫ উদ্বোধন

দৃষ্টিপাত ডেস্ক :
  • আপডেট সময় রবিবার, ৫ নভেম্বর, ২০২৩

এফএনএস: যানজটের নগরী ঢাকার দক্ষিণের মতিঝিল থেকে অপরপ্রান্তের উত্তরাকে এক সুতোয় বাঁধলো ঢাকার প্রথম মেট্রোরেল। এমআরটি-৬ নামে পরিচিত এ মেট্রোরেলের আগারগাঁও থেকে মতিঝিল অংশের উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গতকাল শনিবার দুপুর ২টা ৩৪ মিনিটে আগারগাঁও-মতিঝিল অংশ উদ্বোধন করেন। পরে হেমায়েতপুর-ভাটারা রুটের এমআরটি লাইন-৫ উদ্বোধন করেন তিনি। এর আগে ঢাকাকে যানজটমুক্ত করতে গত বছরের ২৮ ডিসেম্বর মেট্রোরেলের উদ্বোধন করা হয়। সে সময় মেট্রোরেলের প্রথম অংশ উত্তরা উত্তর থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তার ১০ মাস পরে এসে গতকাল শনিবার (৪ নভেম্বর) আগারগাঁও থেকে মতিঝিল পর্যন্ত দ্বিতীয় অংশের উদ্বোধন করা হলো। ২০ কিলোমিটার দূরত্বের উত্তরা-মতিঝিল রুটে কর্মব্যস্ত দিনে লেগে যায় দুই থেকে আড়াই ঘণ্টা। যানজটের শহরে জাদুর মেট্রোরেল এ পথ অতিক্রম করবে মাত্র ৩১ মিনিটে। আর আধুনিক এ গণপরিবহন আজ রোববার থেকে সর্বসাধারণের জন্য খুলে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন ডিএমটিসিএল-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক এমএএন ছিদ্দিক। প্রথমে চালু হবে তিন স্টেশন: এমআরটি লাইন-৬ এর দ্বিতীয় অংশের আগারগাঁও থেকে মতিঝিল পর্যন্ত স্টেশন রয়েছে মোট সাতটি। এর মধ্যে প্রথমে চালু হবে তিন স্টেশন – ফার্মগেট, সচিবালয় ও মতিঝিল। এরপর নভেম্বর মাসেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় স্টেশন চালু হবে বলে জানিয়েছেন ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এমএএন ছিদ্দিক। তারপর আগামী দুই মাসের মধ্যে একে একে চালু হবে শাহবাগ, কাওরানবাজার ও বিজয় সরণী স্টেশন। সকাল-রাতে সময় বাড়ানো হয়েছে আধাঘণ্টা: বর্তমান সকাল ৮টা থেকে মেট্রোরেল চলাচল করার কারণে ৮টায় যাদের অফিস তাদের পৌঁছাতে দেরি হয়ে যেতো। যাত্রীদের এ দাবির প্রেক্ষিতে আগামী ৫ নভেম্বর থেকে মেট্রোরেল সকাল সাড়ে ৭টা থেকে চলাচল শুরু করবে। এদিকে রাত ৮টার পরে যাদের এমআরটি বা র‌্যাপিড পাস রয়েছে তারা রাত সাড়ে ৮টা পর্যন্ত চলাচল করতে পারবেন। কিন্তু যেসব যাত্রী স্টেশন থেকে একক টিকিট কাটবেন তারা রাত ৮টা পর্যন্তই সর্বশেষ মেট্রোরেলে চড়তে পারবেন। যদিও আগারগাঁও থেকে মতিঝিল অংশের যাত্রীরা সকাল সাড়ে সাতটা থেকে বেলা সাড়ে ১১টা পর্যন্ত চলাচল করতে পারবেন। ধীরে ধীরে এ অংশেও সময় বাড়ানো হবে বলে জানিয়েছেন ডিএমটিসিএল এমডি। ৩১ মিনিটে মতিঝিল-উত্তরা, মেট্রো ভাড়া ১০০ টাকা: যেসব যাত্রী উত্তরা উত্তর স্টেশন থেকে মতিঝিল পর্যন্ত যেতে সময় লাগবে ৩১ মিনিট আর ভাড়া লাগবে ১০০ টাকা। তবে যাদের র‌্যাপিড পাস রয়েছে তারা ১০ শতাংশ ডিসকাউন্ট পাবেন। উত্তরা উত্তর থেকে মতিঝিল পর্যন্ত সর্বোচ্চ ভাড়া ১০০ টাকা। আর আগারগাও থেকে মতিঝিল পর্যন্ত ৪০ টাকা। মতিঝিল থেকে উত্তরা সেন্ট্রার ও দক্ষিণ ৯০ টাকা, পল্লবী ৮০ টাকা, মিরপুর- ১১ ৭০ টাকা, মিরপুর ১০ ও কাজীপাড়া ৬০ টাকা, শেওড়াপাড়া ও আগারগাও ৫০ টাকা, বিজয় সরণী ৪০ টাকা, ফার্মগেট ও কারওয়ান বাজার ৩০ টাকা, শাহাবাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও সচিবলায় ২০ টাকা। অন্যদিকে ফার্মগেট থেকে মতিঝিলের ভাড়া ৩০ টাকা। মিরপুর-১০ নম্বর থেকে ফার্মগেট ৩০ টাকা ও কারওয়ান বাজার স্টেশনে ভাড়া লাগবে ৪০ টাকা। মিরপুর-১০ স্টেশন থেকে শাহবাগ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাড়া ৫০ টাকা। মিরপুর-১০ থেকে সচিবালয় ও মতিঝিল স্টেশনে যেতে ৬০ টাকা লাগবে। ফার্মগেট স্টেশন থেকে উঠে কারওয়ান বাজারে নামলেও এক স্টেশন থেকে আরেক স্টেশনের সর্বনিম্ন ২০ টাকা ভাড়া দিতে হবে। তবে একই ভাড়া দিয়ে যাওয়া যাবে শাহবাগ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় স্টেশন পর্যন্ত। আর ফার্মগেট থেকে সচিবালয় ও মতিঝিল স্টেশনের ভাড়া ৩০ টাকা। হেমায়েতপুর-ভাটারা রুটের এমআরটি লাইন-৫: সাভারের হেমায়েতপুরে ডিপোর মাটি ও ভূমি উন্নয়নের জন্য প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি ও জনবল সংগ্রহ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন এমআরটি লাইন-৫ প্রকল্পের পরিচালক আফতাব হোসেন খান। এক হাজার ১৮৯ কোটি টাকার একটি চুক্তির অধীনে জাপানের টিএও করপোরেশন ও বাংলাদেশের স্পেকট্রা ইঞ্জিনিয়ার্স লিমিটেডের যৌথ উদ্যোগের এ প্রকল্পের কাজ উদ্বোধনের পর ডিপোর জন্য ৯৯.২৫ একর জমির উন্নয়নকাজ শুরু হবে। ১৩.৫ কিলোমিটার ভূগর্ভস্থ অংশ ও ৬.৫ কিলোমিটার এলিভেটেড অংশ নিয়ে ২০ কিলোমিটার দীর্ঘ এ প্রকল্প ২০১৯ সালে অনুমোদন পায়। ২০ কিলোমিটারের মধ্যে নির্মাণ করা হবে ১৪টি স্টেশন। এর মধ্যে নয়টি হবে আন্ডারগ্রাউন্ডে। ২০২৮ সালের মধ্যে প্রকল্পের কাজ শেষ করার লক্ষ্য ডিএমটিসিএলের। এ রুটের মেট্রোরেলে প্রতিদিন প্রায় ১.২৩ মিলিয়ন মানুষ যাতায়াত করতে পারবে বলে আশা করা হচ্ছে। এ বিষয়ে ডিএমটিসিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম এ এন সিদ্দিক বলেন, প্রধানমন্ত্রী এমআরটি লাইন-৫ (উত্তর রুট) নির্মাণকাজেরও উদ্বোধন করবেন। এ লাইন হেমায়েতপুর থেকে ভাটারা হয়ে গাবতলী, মিরপুর-১০, গুলশান পর্যন্ত ২০ কিলোমিটার হবে। ৪১ হাজার ২৩৯ কোটি টাকার এ প্রকল্পের কাজ শেষ হবে ২০২৮ সালে।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর
© All rights reserved © 2013-2022 dainikdristipat.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com