আলোচনাসভা, বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা, বেলুন উড়িয়ে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদ্বোধন, বন্দর ব্যবহারকারী ও কৃতিত্বর্পূণ কাজের জন্য কর্মকর্তা—কর্মচারীদরে সম্মাননা ক্রেস্ট প্রদান, বিদায়ী কর্মকর্তা—কর্মচারীদের সংবর্ধনা, কর্মকর্তা—কর্মচারীদের শুভেচ্ছা উপহার, দোয়া অনুষ্ঠানসহ বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্য দিয়ে মোংলা বন্দরের ৭৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন করা হয়। এ উপলক্ষ্যে রবিবার সকালে মোংলা বন্দরের স্টাফিং এন্ড আনস্টাফিং শেড এ আলোচনাসভা ও সম্মাননা ক্রেস্ট প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল শাহীন রহমান। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি বলেন, দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে মোংলা বন্দর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে চলেছে। বন্দরের সক্ষমতা পূর্বের তুলনায় বর্তমানে অনেক গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। প্রতি বছর বিদেশি জাহাজ, কার্গো হ্যান্ডলিং ও গাড়ি আমদানিতে রেকর্ড সৃষ্টি হচ্ছে। দক্ষিণ—পশ্চিমাঞ্চলের প্রাণকেন্দ্র এ বন্দরের মাধ্যমে মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। ঐতিহ্য ও উন্নয়নের ধারাবাহিকতা বজায় রাখার জন্য সংশ্লিষ্ট সবাইকে নিষ্ঠার সাথে দায়িত্ব পালন করার আহবান জানান। অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন বাংলাদেশ শিপিং এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশন খুলনার ভারপ্রাপ্ত সভাপতি সৈয়দ জাহিদ হোসেন, মার্কস বাংলাদেশের কান্ট্রি অপারেশন ম্যানেজার মাহমুদুল করিম ও মোংলা বন্দরের সিবিএর সাধারণ সম্পাদক কাজী খুরশীদ আলম পল্টু। এতে স্বাগত বক্তৃতা করেন মোংলা বন্দররে পরিচালক (প্রশাসন) মোঃ নুরুজ্জামান। অনুষ্ঠানে মোংলা বন্দরের ক্যাপ্টেন মোহাম্মদ কিবরিয়া, সদস্য (হারবার ও উন্নয়ন) কাজী আবেদ হোসেন, সদস্য (অর্থ) ড. এ কে এম আনিসুর রহমানসহ ব্যবহারকারী ও কর্মকর্তা—কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, বন্দর চ্যানেলে বিদেশি জাহাজ চলাচলে সুবিধার জন্য ৬৯টি নেভিগেশন বয়া স্থাপন করা হয়েছে। জেটি, মুরিং বয়া এবং এ্যাংকোরাজে একই সাথে ৪৭টি জাহাজ নোঙ্গরের সুবিধা রয়েছে বন্দরে। এছাড়া আমদানি—রপ্তানিকারকদের জন্য ট্রানজিট শেড, ওয়্যার হাউজ, কন্টেনার ইয়ার্ড, হিমায়িত খাদ্য সংরক্ষণের জন্য ১৬১টি রিফার প্লাগপয়েন্ট, কার পাকিংর্ ইয়ার্ড, ১৩৬টি আধুনিক হ্যান্ডলিং যন্ত্রপাতি, টাগবোটসহ ৩২টি সহায়ক জলযানের সুবিধা বিদ্যমান। বন্দরে চারটি উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ চলমান রয়েছে। পশুর চ্যানেলের ইনার বারে ড্রেজিং প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে মোংলা বন্দরে জেটি পর্যন্ত ১০ মিটার ড্রাফটের জাহাজ হ্যাল্ডলিং এর সুবিধা সৃষ্টি হবে। মোংলা বন্দরে আধুনিক বর্জ্য ও নিসৃত তেল অপসারণ ব্যবস্থাপনা প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে এ বন্দরে আগত সমুদ্রগামী জাহাজের বর্জ্য ও নি:সৃত তেল দূষণ থেকে বন্দর চ্যানেল ও সুন্দরবন রক্ষা পাবে। ২০২৩—২৪ অর্থবছরে প্রবৃদ্ধি যথাক্রমে বিদেশি বাণিজ্যিক জাহাজ আগমনের ক্ষেত্রে ২.৩০ শতাংশ, কার্গো ৯.৭২ শতাংশ, কন্টেইনার ১৬.৭৮ শতাংশ, এবং গাড়ির ক্ষেত্রে ১৩ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছে। বর্তমান অর্থবছরের প্রথম চার মাসে ২৯ লাখ মেট্রিকটন আমদানি ও রপ্তানি হয়েছে। এছাড়া আধুনিক যন্ত্রপাতি সংগ্রহের ফলে প্রথমবারের মতো প্রতি ঘন্টায় ২৪ টিরও বেশি কন্টেইনার হ্যাল্ডিলিং করা সম্ভব হচ্ছে এবং জেটির সম্মুখে নিয়মিত ড্রেজিং এর ফলে নাব্যতা থাকার কারণে পাঁচটি জেটিতে একই সাথে পাঁচটি জাহাজ হ্যাল্ডলিং করা সম্ভব হচ্ছে। অনুষ্ঠানে বন্দর ব্যবহারকারী ২৯টি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিদের মাঝে সম্মাননা ক্রেস্ট ও সনদপত্র, কৃতিত্বপূর্ণ কাজের জন্য ৩২ কর্মকর্তা—কর্মচারীদের মাঝে সম্মাননা ক্রেস্ট এবং পিআরএল এ থাকা ৬২জন কর্মকর্তা—কর্মচারীদের মাঝে সম্মাননা ক্রেস্ট প্রদান এবং কর্মকর্তা—কর্মচারীদের মাঝে শুভেচ্ছা উপহার প্রদান করা হয়।—তথ্য বিবরণী