এফএনএস স্পোর্টস: কলকাতার যুব ভারতী ক্রীড়াঙ্গনের আশপাশ এলাকা নিরাপত্তার চাদরে ঢাকা। ভারতীয় সেনাবাহিনী ডুরান্ড কাপ ফুটবলের আয়োজক। তাদেরই এই টুর্নামেন্ট। ভারতের যতগুলো ফুটবল টুর্নামেন্ট ছিল তার মধ্যে অন্যতম ডুরান্ড কাপ উপমহাদেশের ফুটবল বেশ পরিচিত। বাংলাদেশের ফুটবলে এর ব্যাপক পরিচিতি। এবার সেই টুর্নামেন্টের মঞ্চে অনেক বছর পর ভারতের বাইরের দল অংশগ্রহণ করছে। এর মধ্যে একটি বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। আন্তর্জাতিক ফুটবল টুর্নামেন্টের মর্যাদা পাচ্ছে। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের প্রস্তুতিও শেষ করে অপেক্ষায় সাংস্কৃতিক শিল্পীরা। অন্যদিকে স্টেডিয়ামের বাইরে ডুরান্ড কাপ ফুটবলের উদ্বোধন করতে প্রধান অতিথি কলকাতার মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি আসবেন তাই তাকে অভ্যর্থনা জানাতে স্বামী বিবেকানন্দ স্টেডিয়ামের ভিভিআইপি গেটের সামনে সবার প্রস্তুতি। স্টেডিয়ামের সাধারণ গ্যালারিতে ছুটছে সমর্থক। বাস ভরে দূরদূরান্ত থেকে স্কুলকলেজের শিক্ষার্থীদের আনা হয়েছে। সবার হাতে টিকিট দেওয়া হয়েছে এবং জাল টিকিট ঠেকাতে প্রত্যেকের টিকিট ডিজিটাল পদ্ধতিতে হ্যান্ডমেশিনে স্ক্যান করে প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে। দুই দিন আগেই মোহন বাগান ক্লাব তাদের টেন্ট থেকে তাদের সমর্থকদের জন্য বিনা টাকায় একটি করে টিকিট উপহার দিয়েছে। ভিআইপি গ্যালারির প্রত্যেক চেয়ারে দর্শকের জন্য রাখা ছিল একটি করে ব্যাগ। যেখানে উপহার রাখা ছিল। উদ্বোধনী অনুষ্ঠান তখন শেষ প্রায়। স্টেডিয়ামে বাইরে দর্শক লাইন। মোহন বাগান সুপার জায়ান্টের সমর্থক সবুজ মেরুন জার্সি গায়ে এসেছেন। মাথায় ব্যান্ড। এ যেন একটা উৎসবমুখর ফুটবল অনুষ্ঠান। প্রতিপক্ষ বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ফুটবল দল সম্পর্কে বাগানের সমর্থকদের শক্তির কথা জানা আছে। তাদের কথায় পরিষ্কার ফুটে ওঠে সেনা ফুটবল দলের খেলোয়াড়দের সম্পর্কে সব আপডেট নিয়েই গ্যালারিতে বসেছেন। তার পরও মোহন বাগানের সমর্থকদের দুশ্চিন্তার যেন শেষ ছিল না। কখন গোল হবে সেই প্রার্থনাও দেখা গেল। গোল পেতে ১৫ মিনিট লেগেছে। লিস্টান, পেনাল্টিতে জাতীয় দলের তারকা মানবীর সিং, সুয়েল ৪০ মিনিটে গোল করেন, ৩-০। ম্যাচের ৪৫ মিনিটে দুই হলুদকার্ডে লালকার্ড পেয়ে মাঠ ছাড়লেন সেনাবাহিনীর মিজানুর রহমান। দ্বিতীয়ার্ধে লালরিং রিয়ানা নামতে এবং খেলার শেষ মুহূর্তে কিয়ান গোল করেন ৫-০। ম্যাচ সেরা হলো লিস্টান। এমনিতেই মোহন বাগানের মতো শক্তিশালী দলের বিপক্ষে লড়াই করে উঠতে পারছিল না। তার উপর পরের ৪৫ মিনিট ১০ জন নিয়ে লড়াই করতে হলো সেনাবাহিনীকে। দ্বিতীয়ার্ধে দুই গোল হজম করল। এ ধরনের দলের বিপক্ষে কঠিন প্রস্তুতি নিয়ে আসতে হয়, মোহন বাগান হয়ত সেটাই মনে করিয়ে দিল। কঠিন গ্রæপে সেনাবাহিনী। শক্তিশালী মোহন বাগান ছাড়াও ইস্ট বেঙ্গল ক্লাব এবং পাঞ্জাব ফুটবল দল রয়েছে। সেনাবাহিনীর প্রতিপক্ষ প্রত্যেক দল পেশাদার ফুটবল খেলছে। বিশেষ করে মোহন বাগান, ইস্ট বেঙ্গলের মতো দলের সঙ্গে পেরে উঠারও কথা না। মোহন বাগান তাদের সিনিয়র দল নিয়ে খেলেনি। তার পরও শক্তিতে অনেক বেশি এগিয়ে। এর মধ্যেও গোলকিপার রানার পারফরম্যান্স হতাশ করেছে। শেষ বাঁশি বাজার আগে রানাকে তুলে নিলেন কোচ আবদুর রাজ্জাক। খেলার শেষ বাঁশিটিও বাজিয়ে দিলেন রেফারি রাহুল কুমার গুপ্ত।
বাংলাদেশ সেনাবাহিনী একাদশ: আশরাফুল ইসলাম রানা, মেহেদি হাসান, কামরুল ইসলাম, মুরাদ হাসান, রাজিব হোসেন, মিনহাজুর আবেদিন রাকিব, সাজ্জাদ হোসেন, জাফর ইকবাল, শাহরিয়ার ইমন, মিজানুর রহমান, শামীমুল হক (অধিনায়ক)।