এফএনএস আন্তর্জাতিক ডেস্ক: যুক্তরাষ্ট্রে অবৈধভাবে অবস্থানকারী অভিবাসীদের দেশ ত্যাগে উৎসাহ দিতে নতুন এক প্রণোদনা কর্মসূচি চালু করেছে ট্রাম্প প্রশাসন। স্বেচ্ছায় যুক্তরাষ্ট্র ত্যাগ করলে অভিবাসীদের এক হাজার ডলার (প্রায় ১ লাখ ২১ হাজার টাকা) এবং যাত্রার সম্পূর্ণ খরচ বহনের প্রতিশ্রম্নতি দেওয়া হয়েছে। প্রশাসনের মতে, এটি হবে অবৈধ অভিবাসীদের জন্য ‘সবচেয়ে নিরাপদ, সাশ্রয়ী এবং সম্মানজনক’ পথ।
মার্কিন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ক্রিস্টি নোম গত সোমবার এক বিবৃতিতে বলেন, “গ্রেফতার এড়িয়ে যুক্তরাষ্ট্র ত্যাগের সবচেয়ে কার্যকর উপায় হচ্ছে স্বেচ্ছাপ্রস্থান।” প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প আরও বলেন, এই প্রণোদনার সুযোগ গ্রহণকারীরা ভবিষ্যতে বৈধ পথে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের সুযোগ পেতে পারেন।
স্বেচ্ছাপ্রস্থান কর্মসূচির আওতায় আগ্রহী ব্যক্তিদের ‘সিবিপি হোম’ (ঈইচ ঙহব) নামের একটি অ্যাপের মাধ্যমে আবেদন করার আহ্বান জানানো হয়েছে। অ্যাপটির মাধ্যমে নিজ নিজ দেশে ফেরার আগ্রহ প্রকাশ করলে, কতৃর্পক্ষ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে।
যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা বিভাগ (উঐঝ) জানিয়েছে, এই কর্মসূচিতে নাম লিখানো ব্যক্তিদের অগ্রাধিকারভিত্তিতে আটক করা হবে না। বরং স্বেচ্ছায় ফিরে যেতে উৎসাহিত করা হবে। ইতোমধ্যে একজন অভিবাসী শিকাগো থেকে হন্ডুরাসে ফেরার টিকিট পেয়েছেন এই প্রণোদনার আওতায়।
ডিএইচএস—এর হিসেবে, একজন অভিবাসীকে গ্রেফতার, আটক ও নির্বাসনের গড় খরচ প্রায় ১৭ হাজার ডলার। ফলে এই কর্মসূচি সরকারের ব্যয় সাশ্রয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে আশা করা হচ্ছে।
যদিও ট্রাম্প প্রশাসন এই কর্মসূচিকে ‘সহানুভূতিশীল বাস্তবতা’ হিসেবে দেখাচ্ছে, সমালোচকরা একে মানবিক মূল্যবোধের পরিপন্থী বলছেন। ডেমোক্র্যাট কংগ্রেসম্যান আদ্রিয়ানো এসপেইয়াত সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লিখেছেন, “আমরা কাউকে টাকা দিয়ে দেশ ছাড়তে বলি না। আমরা এমন একটি আমেরিকা চাই, যেখানে সবাই স্থান পায়।”
দ্বিতীয় মেয়াদে প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই ট্রাম্প অবৈধ অভিবাসন দমনে কঠোর পদক্ষেপ নিচ্ছেন। এর মধ্যে রয়েছে পুরনো যুদ্ধকালীন আইন প্রয়োগের মতো বিতর্কিত সিদ্ধান্ত, যা বর্তমানে আইনি চ্যালেঞ্জের মুখে রয়েছে।
তবে তার প্রশাসনের দাবি, এই কঠোর অবস্থানের সুফল মিলতে শুরু করেছে। যুক্তরাষ্ট্র—মেক্সিকো সীমান্তে অবৈধ প্রবেশের হার কমছে বলে দাবি করছে তারা। মার্চ মাসে সীমান্তে মাত্র ৭ হাজারের কিছু বেশি অভিবাসী গ্রেফতার হয়েছে, যা সাম্প্রতিক সময়ের মধ্যে সর্বনিম্ন।