এফএনএস বিদেশ : উত্তর আফ্রিকার দেশ সুদানে সামরিক বাহিনীর সাথে দেশটির আধা-সামরিক বাহিনীর সংঘাত চলছে। সংঘাত বন্ধে সাময়িক যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করা হলেও তাতে খুব বেশি কাজ হয়নি। এই পরিস্থিতিতে আলোচনার জন্য সৌদি আরবে গেছেন সুদানের যুদ্ধরত দুই পক্ষের প্রতিনিধিরা। গতকাল রোববার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সুদানের যুদ্ধরত সেনাবাহিনী বা আধাসামরিক বাহিনীর প্রতিনিধিরা তাদের প্রথম মুখোমুখি আলোচনার জন্য সৌদি আরবে পৌঁছেছেন। গত শনিবার জেদ্দায় সুদানের সেনাবাহিনী এবং আধাসামরিক র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেস (আরএসএফ)-এর মধ্যে ‘প্রাক-সংলাপ আলোচনা’ শুরু হওয়ার কথা ছিল। আলোচনায় পৃষ্ঠপোষকতা করছে যুক্তরাষ্ট্র ও সৌদি আরব। গত ১৫ এপ্রিল শুরু হওয়া সেনাবাহিনী এবং আরএসএফের মধ্যকার এই লড়াইয়ের অবসান ঘটাতে বেশ কয়েক দফায় যুদ্ধবিরতি কার্যকরের চেষ্টা চালানো হলেও তা কার্যত ভেঙ্গে গেছে। উভয় পক্ষই বলেছে, তারা একটি মানবিক যুদ্ধবিরতি নিয়ে আলোচনা করবে, কিন্তু সংঘাতের অবসান নিয়ে নয়। বিবিসি বলছে, সেনাবাহিনী বা আধাসামরিক বাহিনীর প্রতিনিধিরা তাদের প্রথম মুখোমুখি আলোচনার জন্য সৌদি আরবে পৌঁছালেও সেখানে কোনো বৈঠক হয়েছে কি না বা উভয় পক্ষের প্রতিনিধি কারা সে বিষয়ে এখন পর্যন্ত কোনো কথা বলা হয়নি। সৌদি আরবের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ফয়সাল বিন ফারহান উভয় পক্ষের প্রতিনিধিদের স্বাগত জানিয়েছেন। তিনি বলেন, বিবদমান উভয়পক্ষের মধ্যে এই আলোচনা ‘সংঘাতের অবসান ঘটাবে এবং সুদানে নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনবে’ বলে তিনি আশা করেন। আরএসএফ-এর নেতৃত্বদানকারী জেনারেল মোহাম্মদ হামদান ডাগলো টুইটারে বলেছেন, যুদ্ধবিরতি কার্যকর এবং সুদানের জনগণকে সহায়তা প্রদানের সমস্ত প্রচেষ্টার প্রশংসা করছে তারা। তিনি জোর দিয়ে বলেন, আরএসএফ ‘বেসামরিক নেতৃত্বাধীন সরকারে রূপান্তর’ করতে প্রতিশ্রæতিবদ্ধ। সংবাদমাধ্যম বলছে, সুদানের রাজধানী খার্তুমে ক্রমাগত সংঘর্ষের খবরের মধ্যে গত শনিবারের এই আলোচনার খবরটি সামনে এসেছে। দুই বাহিনীর মধ্যে যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে সুদানে শত শত মানুষ নিহত হয়েছেন এবং প্রায় চার লাখ ৫০ হাজার বেসামরিক লোক বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। ইন্টারন্যাশনাল অর্গানাইজেশন ফর মাইগ্রেশন বলছে, লড়াই শুরুর পর থেকে ১ লাখ ১৫ হাজারেরও বেশি মানুষ সুদানের প্রতিবেশী দেশগুলোতে আশ্রয় চেয়েছে। এদিকে সুদানের সংঘাত নিয়ে একটি যৌথ বিবৃতি দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ও সৌদি আরব। ওই মার্কিন-সৌদি বিবৃতিতে লড়াইরত উভয় পক্ষকে সুদানী জাঁতি ও জনগণের স্বার্থ বিবেচনায় নেয়ার এবং যুদ্ধবিরতি ও সংঘাতের অবসানের জন্য সক্রিয়ভাবে আলোচনায় অংশগ্রহণ করার’ আহŸান জানানো হয়েছে। জাতিসংঘের শিশুবিষয়ক সংস্থার মুখপাত্র জেমস এল্ডার বলেছেন, শুধুমাত্র সংঘাতের প্রথম ১১ দিনেই আনুমানিক ১৯০ জন শিশু নিহত হয়েছে এবং আরও ১৭০০ জন আহত হয়েছে। তিনি আরও বলেন,‘বাস্তবতা আরও খারাপ হতে পারে। এছাড়া লড়াইয়ের তীব্রতা ব্যাপক আকার ধারণ করায় সেটি অত্যন্ত প্রয়োজনীয় সহায়তা বিতরণকেও বাধাগ্রস্ত করছে।