প্রিয়তমা, জানি আমাদের আর দেখা হবে না।
অস্ত্রের উষ্ণতা পাবো কিন্তু তোমার ভালোবাসার
উষ্ণতা জানি আর কখনোই পাবো না।
এই অজানার জীবনে শুধু আমি একাই নই
তুমিও যাচ্ছো, দেশের হাজার হাজার
নাগরিক যাচ্ছে, প্রাণ হাতে নিয়ে
ছুটে যাচ্ছে অনিশ্চিত জীবনের লক্ষ্যে।
তোমার গায়ে এখনো নব বিবাহিতার
লজ্জা জড়ানো গন্ধ, প্রথম স্পর্শের শিহরণ।
এই নরম হাতে তুমিও তুলে নিয়েছো
আধুনিক অস্ত্র, বিনম্র তোমার আজ সংহারমূর্তি।
তোমার বড্ড ইচ্ছা ছিলো একসাথে
শুভ্র তুষারপাত দেখার,
সেই তুমি আমি আজ দেখবো গুলির বর্ষণ।
বিদায় মুহূর্তে তোমার সেই ছলছল চোখ
আমি ভুলতে পারি না।
সেই চোখের ভাষা, সেই চোখের জিজ্ঞাসা
‘যুদ্ধ কেন হয়?’
যুদ্ধ কেন হয়, তা যারা ক্ষমতার চেয়ারে বসে
এই রক্তের হোলি খেলার কলকাঠি নাড়ে
তারাই কী জানে?
প্রিয়তমা, আমি তোমাকে বলতে পারি নি
যারা যুদ্ধ চাপিয়ে দেয়
তারা কখনো এভাবে স্বশরীরে যুদ্ধে গিয়ে
সর্বস্বান্ত হয় না,
আর যারা সর্বস্বান্ত হয়, তারা যুদ্ধ চায় না।
আচ্ছা, তুমিই বলো তোমার সাদা পর্দায়
অবগুণ্ঠিত মুখ যুদ্ধের পোষাকে ঢাকা পড়ুক
তা কী আমি চেয়েছিলাম?
নাকি তুমি চেয়েছিলে তোমার হাত ছেড়ে
যুদ্ধ নামক অগ্নিকুন্ডে ঝাঁপিয়ে পড়ি আমি!
তোমার আমার মতো আর সবাই
কারো স্ত্রী, কারো স্বামী, কারো পিতা- মাতা
বা সন্তান কেউই চায় নি
এই যুদ্ধ ঘটুক, এমনকী
যারা আমার দেশকে রক্তাক্ত করতে প্রতিজ্ঞ
সেই দেশের সেনাদের স্ত্রী, সন্তান, পিতা- মাতাও
চায় নি কোন যুদ্ধ হোক।
কিন্তু সত্যিটা কী জানো প্রিয়া
ক্ষমতার কুৎসিত নেশাটা যখন পেয়ে বসে
মানুষকে তখন গিনিপিগ মনে হয়
আমরা সবাই এখন গিনিপিগ
ক্ষমতাসীনের খেলার পুতুল।
প্রিয়তমা, আমার এই লেখা
তোমার কাছে কখনোই পৌঁছাবে না
কিন্তু যেখানেই থাকো
যেভাবেই থাকো আমার ভালোবাসা
তোমার কাছে ঠিকই পৌঁছে যাবে।
পৃথিবীতে উদিত প্রতিদিনের সূর্যোদয়
আমাদের ভালোবাসার গৌরব গাঁথা
ছড়িয়ে দেবে, তার উষ্ণ কিরণে।
ভালো থেক প্রিয়তমা,
ভালো থেক ভালোবাসা..
যুদ্ধ সর্বদাই অনাকাঙ্ক্ষিত, যেকোন দেশের জন্যই অনভিপ্রেত। যুদ্ধ মানেই শত্রু শত্রু খেলা। তারই প্রেক্ষাপটে বর্তমান রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে নিচের ছবিটি সাম্প্রতিক সময়ে আলোচিত হয়। এই নবদম্পতি যুদ্ধ সুনিশ্চিত জেনেও বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়, তারপর দিন চলে যায় যুদ্ধের অনিশ্চিত জীবনে। সবার মতো এই ছবি ও তদসংশ্লিষ্ট নিউজটি আমার হৃদয়ে ভীষণভাবে রেখাপাত করেছে, হৃদয়ের সেই রক্তক্ষরণ থেকেই এই কবিতা..)