এফএনএস লাইফস্টাইল: উচ্চ রক্তচাপ নিজেই একটি রোগ, আবার একই সঙ্গে অন্য রোগের কারণ। আর নিম্ন রক্তচাপ সাধারণভাবে কোনো রোগ নয়, বরং নিরাপদ। কিন্তু কিছু জটিল মুহূর্তে (যেমন-কার্ডিওজেনিক শক ও অন্যান্য শক) নিম্ন রক্তচাপ জীবনসংহারী হতে পারে। আর তাই আমাদের জানতে হবে কিভাবে রক্তচাপ মাপতে হয়, কখন সেটিকে রোগ হিসেবে বিবেচনা করতে হবে, কখন কতটা গুরুত্ব দিতে হবে।
রক্তচাপ মাপা
বাসায় রক্তচাপ মাপা উচ্চ রক্তচাপের চিকিৎসার গুরুত্বপূর্ণ অংশ। ভালোভাবে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে এর ভ‚মিকা অনস্বীকার্য। কিন্তু এ ক্ষেত্রে ভালো মানের রক্তচাপ মাপার যন্ত্র এবং সঠিকভাবে রক্তচাপ মাপতে জানা থাকা দরকার।
রক্তচাপ মাপার যন্ত্র
পারদস্তম্ভসহ বøাড প্রেশার মেশিনকে আদর্শ বিবেচনা করা হয়।
পারদ ম্যানোমিটারের সঙ্গে প্রপারলি কেলিব্রেটেড স্প্রিং বেইসড ডায়াল ম্যানোমিটারগুলো সহজে বহনযোগ্য। কিন্তু সময়ের সঙ্গে স্প্রিংয়ের কার্যকারিতা কমে যায়। তখন এই যন্ত্রের পরিমাপ নির্ভরযোগ্য থাকে না। অটোমেটিক বøাড প্রেশার মেশিনকে পারদ ম্যানোমিটারের সঙ্গে যাচাই করে নিতে হবে।
রক্তচাপ মাপার পদ্ধতি
– কমপক্ষে পাঁচ মিনিট শান্তভাবে চেয়ারে বসুন। পা মাটিতে আর হাত হার্টের সমান্তরালে টেবিল বা কিছুর ওপর সাপোর্টেড থাকবে।
– উপযুক্ত সাইজের কাফ। হাতের বাহুতে বাঁধার কাফের ভেতরের রাবার ব্যাগটি বাহুর কমপক্ষে ৮০ শতাংশ আবৃত করবে।
– রক্তচাপ মাপার সময় হাতের রেডিয়াল পালসে হাত রেখে কাফের ব্যাগের বাতাসের চাপ বাড়াতে হবে।
যে মাত্রার প্রেশারে রেডিয়াল পালস আর পাওয়া যাবে না, তা থেকে ৪০ মিমি বেশি চাপ বাড়াতে হবে। তারপর ধীরে ধীরে চাপ কমিয়ে আনার সময় স্টেথোস্কোপ দিয়ে কনুইয়ের সামনে ব্রাকিয়াল আর্টারিতে শব্দ শুনতে হবে। যে মাত্রায় প্রথম শব্দ শোনা যাবে, সেটি সিস্টলিক প্রেশার আর যে মাত্রায় শব্দ বন্ধ হবে তা ডায়াস্টলিক প্রেশার।
– কোনো অভিজ্ঞ ব্যক্তির কাছে রক্তচাপ মাপার পদ্ধতি শিখে নিতে হবে।
রক্তচাপ কখন মাপতে হবে
– যেকোনো শারীরিক সমস্যায় রক্তচাপ মাপা একটি রুটিন পরীক্ষা।
– ডায়াবেটিস, কিডনির রোগ, গর্ভাবস্থা এবং অন্য রোগের রুটিন ফলোআপের সময়।
– প্রথমবার রক্তচাপ মাপার সময় দুই হাতে মাপতে হবে। দুই হাতে রক্তচাপের মাত্রায় পার্থক্য থাকলে তা রক্তনালির রোগ নির্দেশ করবে।
রক্তচাপের মাত্রা
স্বাভাবিক রক্তচাপ : সিস্টলিক প্রেশার ১০০ থেকে ১৪০ মিমি মার্কারি, ডায়াস্টলিক ৬০ থেকে ৮৫ মিমি মার্কারি। এই রেঞ্জের ভেতর ওঠানামা করবে। এক মাত্রায় স্থির থাকবে না। হাঁটার পর বা সিঁড়ি দিয়ে ওঠা বা শারীরিক পরিশ্রমের পর সঙ্গে সঙ্গে রক্তচাপ মাপলে বেশি পাওয়া যাবে। কিন্তু তাকে উচ্চ রক্তচাপ বলা যাবে না। বিশ্রাম নেওয়ার পর আবার মাপতে হবে।
উচ্চ রক্তচাপ : সিস্টলিক ১৪০ মিমি মার্কারি (+/-), ডায়াস্টলিক ৯০ মিমি মার্কারি। তবে অন্য কোনো কারণে উত্তেজিত বা পরিশ্রান্ত অবস্থায় বøাড প্রেশার না মেপে সুস্থির হওয়ার পর মাপতে হবে।
(পরামর্শ দিয়েছেন ডা. মো. ফখরুল ইসলাম খালেদ সহযোগী অধ্যাপক, কার্ডিওলজি বিভাগ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়)