দৃষ্টিপাত রিপোর্ট ॥ রমজানের শুরুর আগেই বাজার চড়া ছিল, নিত্য পন্যের বাজার স্থিতিশীলতাকে টপকিয়ে অস্থিতিশিল করার চেষ্টায় ছিল অসাধু ব্যবসায়ীরা আর রমজান শুরু হতে না হতেই এক শ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ীরা রমজান কেন্দ্রীক পন্যের মূল্য বৃদ্ধির অশুভ তৎপরতাকে পূর্ণতায় নিয়েছে। রমজান কেন্দ্রীক পন্যের মধ্যে বিক্ষোভ করে খেজুর,বিভিন্ন ধরনের ফল, গরুর মাংস, সোনালী এবং পোল্ট্রি উভয় মাংস, ব্যাসন, চিনি, ছোলা, আলু, লেবু, ডিম, আটা, ময়দা, দেশী ফলের মধ্যে বেল, আনারস, তরমুজ, সপেদার মুল্য বৃদ্ধি আকাশ ছোয়া, বাজার স্থিতিশীল রাখতে এবং অশুভ ব্যবসায়ীদের অপতৎপরতা বন্ধে পদক্ষেপ গ্রহন করলেও কর্তৃপক্ষের উক্ত পদক্ষেপের কোন প্রভাব দৃশ্যমান নয়, রমজানের সময় গুলোতে এমনিতেই মানুষের জীবন যাপনের খরচ অন্য সময় গুলো অপেক্ষা অধিক পরিমান বৃদ্ধি পায় কারন রমজানের সময় রোজাদাররা যেহেতু রোজা পালন করে থাকে বিধায় খাদ্য সামগ্রী বেশী বেশী ক্রয় করতে হয় সে কারনে খরচের খাতটি বেড়ে যায়। সকালে বাজার এবং বিকালের ইফতারি বাজার দুই খরচ অনেকে তৈরী করা ইফতারি সামগ্রী ক্রয় করে থাকেন আবার রোজাদাররা ইফতার উপকরন ক্রয় করে ইফতারি তৈরী করেন। প্রথম রোজাহতেই যে পণ্য সামগ্রীর মূল্য বৃদ্ধি ঘটছে তা নয় রোজা শুরুর আগেই অস্থির হয় রোজার প্রথমদিন এবং রোজা পূর্ব দিনে সাতক্ষীরার হাটবাজারে প্রতি কেজি খিরাই একশত টাকায় বিক্রি হয়েছে বর্তমান কেজি প্রতিখেরাই ষাট,সত্তর টাকা বিক্রি হচ্ছে অথচ খেরাইয়ের স্বাভাবিক বাজার দরকেজি প্রতি ত্রিশ চল্লিশ টাকা, ডিম বর্তমানে প্রতি পিচ সাড়ে নয় টাকা বা তার কম বেশী সাতক্ষীরার বাস্তবতায় এক শ্রেনির অসাধু মাংস ব্যবসায়ীরা মাংস বাজারকে অস্থির করছে অনুরুপভাবে অসাধু ব্যবসায়ীরা সবজি ও ইফতারী বাজার এবং ফল বাজারকে আগুনে ভরা পরিস্থিতির অবতরনা ঘটাচ্ছে। সাতক্ষীরা গরুর মাংস কেজি প্রতি সাত থেকে সাড়ে সাতশত টাকায় বিক্রি হচ্ছে কোথাও কোথাও অবশ্য সৎ ব্যবসায়ীরা ছয়শত বা সাড়ে ছয়শত কেজি প্রতি বিক্রি করছে। ভোক্তা অধিকার সহ সাধারন ক্রেতাদের বক্তব্য গরুর মাংস কোন যুক্তিতে সাড়ে সাতশত টাকা হবে। গরু লালন পালন, পরিচর্যা সহ সব কিছু মিলে গরুর মাংস ছয়শত টাকার নিচে কেজি প্রতি বিক্রি করা সম্ভব। ব্রয়লার মুরগীর মূল্য বৃদ্ধির ঘটনা বর্তমান রমজান কেন্দ্রীক পণ্য বৃদ্ধির অন্যতম ক্ষেত্র। রোজাদাররা রাতের খাবারে মাংস এবং ইফতারিতে মাংস রাখায় আগ্রহী। ছোলা প্রতিকেজি একশত টাকার উপরে বিক্রি হচ্ছে। সব ধরনের মাছের মূল্য বৃদ্ধির পারদ অগ্রগামী হয়েছে। চাষী পাঙ্গাশ মাছেরও মূল্য উর্ধমুখি, দেশী প্রজাতির কম মুল্যের তেলাপিয়ার মূল্যও বৃদ্ধি পেয়েছে। চাষী মাগুর ও চাষী কইয়ের চাহিদা রোজার সময়গুলোতে খুব বেশী না থাকলেও মূল্য হ্রাসের লক্ষ্য নেই। দেশী ও মিঠা পানির রুই, কাতলা, মৃগেল, চিতল মাছের দুষপ্রাপ্যতা না হলেও মূল্য বৃদ্ধির পাগলা ঘোড়া ছুটে চলেছে। কাগুজি লেবু সারা বছরই পাওয়া যায় বিশ,পঁচিশ টাকা প্রতি হালি লেবুর মূল্য অনেক অনেক বেশী, রোজাদররা ইফাতরের সময়ে শরবতের লেবুর ব্যবহার করে এবং ঔষধী ফল হিসেবে লেবুর বিকল্প না থাকায় রোজার সময়গুলোতে লেবুর চাহিদা বিশেষভাবে অগ্রগামী যে কারনে বাজারে বর্তমান সময়গুলোতে প্রতি হালি লেবু চল্লিশ থেকে পঞ্চাশ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। সব ধরনের ফলের মূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে আমদানী করা আপেল, কমলা, আনার, আঙ্গুর এবং দেশী ফল তরমুজ, বেল, ছবেদা সহ সব ধরনের ফলের মূল্য আকাশ চুম্বী। রমজান কেন্দ্রীক পণ্য সামগ্রীর ও নিত্য প্রয়োজনীয় পন্যের মূল্য বৃদ্ধি পাওয়ায় নিম্ন বিত্ত ও মধ্য বিত্ত উভয় ধরনের জনসাধারন চরম দুর্ভোগে দিন যাপন করছেন। কষ্টে রোজার সময়গুলো অতিক্রম করছে। ক্রেতারা চাহিদা অনুযায়ী খাবার, পন্য সহ রমজান কেন্দ্রীক সবজির বাজারেও অস্থিরতা লেগেই আছে। মূল্য বৃদ্ধির পাগলা ঘোড়া যেন ছুটেই চলেছে। অন্যান্য রমজানের সময় গুলোতে বেগুনের মূল্য কেজি প্রতি পঞ্চাশ,ষাট টাকা স্থলে এবারের রোজার সময় গুলোতে বেগুনের মূল্য কিছুটা সহনীয় কেজি প্রতি বিশ,ত্রিশ টাকা, লাউ, মেটে আলু, গোল আলু, উচ্ছে, কাচকলা, মিষ্টি কুমড়া, ছিম, বাঁধাকপি, পুইশাক সব সবজির মূল্য আকাশছোয়া। রোজার দিন গুলোতে অসাধু ব্যবসায়ীরা অনৈতিকতাকে সঙ্গী করে পণ্য সামগ্রীর মূল্য বৃদ্ধির যে অপচেষ্টা করছে তার বিরুদ্ধে ভোক্তার অধিকার সংরক্ষন কর্তৃপক্ষ তৎপর হবেন, কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি ও সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে কর্তৃপক্ষ অভিযান পরিচালনা করবেন এবং বাজার মনিটরিং এর মাধ্যমে পণ্য মূল্য স্থিতিশীল রাখবেন এটাই প্রত্যাশা।