এফএনএস বিদেশ: পুনর্দখলে নেয়া এলাকা থেকে রাশিয়ান বাহিনীকে পুরোপুরি হটাতে অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে ইউক্রেন। প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি দাবি করেছেন, তাদের সৈন্যরা আট হাজার এলাকা পুনর্দখল করেছে। এর অর্ধেক এলাকায় পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। বাকি এলাকায় নিয়ন্ত্রণ কার্যকর করতে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। মূলত খারকিভ অঞ্চলের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের এসব এলাকা পুনরায় দখলে নিয়েছে ইউক্রেনের বাহিনী। যেসব এলাকাকে স্বাধীন করা হয়েছে বলে ইউক্রেন জানিয়েছে, সেখানে স্বস্তি ফিরে আসার পাশাপাশি রাশিয়ার দখলে থাকার সময় নির্যাতন আর হত্যার নানা তথ্য বেরিয়ে আসছে। স্বাধীন এলাকা বলতে সেসব এলাকাকে বোঝানো হচ্ছে, গত কয়েকমাসে যেসব এলাকা রুশ বাহিনী দখল করেছিল। নির্যাতনের অভিযোগ : খারকিভ অঞ্চলের বালাকলিয়া শহরের বাসিন্দা আর্টেম বিবিসিকে বলেছেন, রুশ বাহিনী তাকে ৪০ দিন ধরে আটকে রেখেছিল এবং বৈদ্যুতিক শক দিয়ে নির্যাতন করেছে। এই এলাকা গত ছয় মাস ধরে দখল করে রেখেছিল রাশিয়া। সেখানকার পুলিশ স্টেশনকে সদরদফতর হিসেবে ব্যবহার করতো রুশরা। সেখানেই এসব নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ। আর্টেম বলেছেন, অন্যান্য সেল থেকে তিনি আর্তনাদ শুনতে পেতেন। এখন এসব এলাকায় রুশ বাহিনীর নির্যাতনের নানা তথ্য সংগ্রহ করছে ইউক্রেনের কর্তৃপক্ষ। পুতিনের প্রতি ক‚টনৈতিক সমাধানের আহŸান : বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভাদিমির পুতিনের সাথে ৯০ মিনিট ধরে চলা একটি টেলিফোন আলাপে ইউক্রেনে যুদ্ধবিরতি কার্যকর করে ক‚টনৈতিক সমাধান বের করার আহŸান জানিয়েছেন জার্মান চ্যান্সেলর শুলৎজ স্কোলৎজ। তিনি রাশিয়াকে পুরোপুরি সৈন্য প্রত্যাহার করে নেয়া এবং আঞ্চলিক অখন্ড রক্ষার জন্য অনুরোধ করেছেন। যুক্তরাষ্ট্রের নতুন সামরিক সহায়তা : যুক্তরাষ্ট্র জানিয়েছে, আগামী কিছুদিনের মধ্যে তারা ইউক্রেনের জন্য নতুন একটি সামরিক প্যাকেজ ঘোষণা করতে যাচ্ছে। এর আগেও ইউক্রেনকে অর্থ ও সামরিক সহায়তা পাঠিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন, রাশিয়ান বাহিনীকে হটিয়ে দেয়ার ক্ষেত্রে ভালো সাফল্য পেয়েছে ইউক্রেনের সেনাবাহিনী। তবে এটা যুদ্ধের পালাবদল ঘটাবে কিনা, তা বলা এখনি সম্ভব নয়। বিদেশে প্রভাব খাটাতে ৩০ কোটি ডলার ব্যয়ের অভিযোগ : যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দফতর অভিযোগ করেছে, বহির্বিশ্বে প্রভাব তৈরি করতে ২০১৪ সাল থেকে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভাদিমির পুতিন ৩০ কোটি ডলার ব্যয় করেছেন। স¤প্রতি অগোপনীয় ঘোষণা করা মার্কিন গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে এই অভিযোগ করেছে পররাষ্ট্র দফতর। জো বাইডেন প্রশাসনের একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা বলেছেন, ‘আমরা মনে করি, এটা আসল ঘটনার একটি খন্ডিত চিত্র মাত্র।’ রাশিয়া এই বিষয়ে প্রকাশ্যে কোনো মন্তব্য করেনি। মস্কো এর আগে অনেকবার যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধেও বিদেশে প্রভাব বিস্তারের মতো অভিযোগ তুলেছে। এ বছরের ২৪ ফেব্র“য়ারি ইউক্রেনে পুরোদমে অভিযানের নির্দেশ দেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভাদিমির পুতিন। এখনো দেশটির এক-পঞ্চমাংশ এলাকা দখল করে রেখেছে রাশিয়া। কিন্তু ইউক্রেনের বাহিনীর সফলতার সাথে সাথে তাদের পিছু হটতে হচ্ছে। সূত্র : বিবিসি