এফএনএস স্পোর্টস: টপ অর্ডারের তিন ব্যাটসম্যানের ফিফটির পর শেষ দিকে ঝড় তুললেন ওয়াশিংটন সুন্দর। তিনশ ছাড়িয়ে গেল ভারতের সংগ্রহ। তবে সেটিকে মামুলি বানিয়ে ছাড়লেন কেন উইলিয়ামসন ও টম ল্যাথাম। তাদের অবিচ্ছিন্ন রেকর্ড জুটিতে অনায়াসে জয় তুলে নিল নিউ জিল্যান্ড। অকল্যান্ডে শুক্রবার প্রথম ওয়ানডেতে ৭ উইকেটের জয়ে সিরিজে এগিয়ে গেল স্বাগতিকরা। ভারতের ৩০৬ রান তারা পেরিয়ে যায় ১৭ বল বাকি থাকতে। নিউ জিল্যান্ডের এই জয়ের কারিগর উইলিয়ামসন ও ল্যাথাম চতুর্থ উইকেটে গড়েন ২২১ রানের জুটি। ভারতের বিপক্ষে ওয়ানডেতে যেকোনো উইকেটে যা কিউইদের সর্বোচ্চ জুটি। এই সংস্করণে সফল রান তাড়ায় চতুর্থ উইকেটে সব দল মিলিয়ে এটাই সেরা জুটি। ৫ ছক্কা ও ১৯ চারে ১০৪ বলে ক্যারিয়ার সেরা ১৪৫ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলেন ল্যাথাম। তার আগের সেরা নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে অপরাজিত ১৪০। ম্যাচ সেরার পুরস্কার ওঠে এই কিপার-ব্যাটসম্যানেরই হাতে। উইলিয়ামসন ¯্রফে ৬ রানের জন্য সেঞ্চুরি করতে পারেননি। ১ ছক্কা ৭ চারে ৯৪ রানে দলের জয় সঙ্গে নিয়ে ফেরেন নিউ জিল্যান্ড অধিনায়ক। ঘরের মাঠে এনিয়ে টানা ১৩টি ওয়ানডে জিতল নিউ জিল্যান্ড। ২০১৯ সালের ফেব্র“য়ারির পর নিজ আঙিনায় এই সংস্করণে হারেনি তারা। এর আগে ২০১৫ সালে দেশের মাটিতে টানা ১২ ওয়ানডে জিতেছিল কিউইরা। এ জয়ে ক্রিকেট বিশ্বকাপ সুপার লিগে চারে নিউ জিল্যান্ড। ১৬ ম্যাচে ১২০ পয়েন্ট তাদের। সমান পয়েন্ট নিয়ে নেট রানরেটে পিছিয়ে থাকা বাংলাদেশ ও পাকিস্তান পরের দুই স্থানে। ১৯ ম্যাচে ১২৯ পয়েন্ট নিয়ে সবার ওপরে ভারত। ইডেন পার্কে টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে শিখর ধাওয়ান ও শুবমান গিলের উদ্বোধনী ১২৪ রানের জুটিতে উড়ন্ত সূচনা পায় ভারত। লকি ফার্গুসনের বলে ৩ ছক্কা ও ১ চারে ৫০ করা গিল বিদায় নেন। পরের ওভারে টিম সাউদি ফিরিয়ে দেন ১৩ চারে ৭২ রান করা ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক ধাওয়ানকে। রিশাভ পান্ত ও সূর্যকুমার যাদব হতাশ করলে ইনিংস এগিয়ে নেন শ্রেয়াস আইয়ার ও সাঞ্জু স্যামসন। পঞ্চম উইকেট জুটিতে ৭৭ বলে ৯৪ রান যোগ করেন এই দুজন। সেঞ্চুরির সম্ভাবনা জাগিয়ে সাউদির বলে থামেন চারটি করে ছক্কা-চারে ৮০ রান করা শ্রেয়াস। শেষ দিকে ওয়াশিংটনের ৩টি করে চার-ছক্কায় ১৬ বলে ৩৭ রানের ক্যামিও ইনিংসে তিনশ ছাড়ায় ভারতের রান। নিউ জিল্যান্ডের হয়ে ৩টি করে উইকেট নেন দুই পেসার সাউদি ও ফার্গুসন। বড় লক্ষ্য তাড়ায় যেমন শুরু দরকার ছিল তা পায়নি স্বাগতিকরা। দলীয় পঞ্চাশ হওয়ার আগে সাজঘরে ফেরেন ফিন অ্যালেন। একশ ছোঁয়ার আগে অভিষিক্ত উমরান মালিকের বলে আউট হন ডেভন কনওয়ে ও ড্যারিল মিচেল। স্কোরবোর্ডের অবস্থা তখন ১৯.৫ ওভারে ৩ উইকেটে ৮৮ রান। এরপর ভারতকে আর উলাসের সুযোগ দেননি উইলিয়ামসন ও ল্যাথাম। শুরু থেকেই সাবলীল ব্যাটিংয়ে দলকে এগিয়ে নিতে থাকেন এ দুজন। উইলিয়ামসন ফিফটি করেন ৫৪ বলে, ল্যাথামের পঞ্চাশ আসে ৫১ বল। ফিফটি পর উইলিয়ামসন খানিকটা খোলসবন্দী হলেও হাত খুলে খেলতে থাকেন ল্যাথাম। শার্দুল ঠাকুরের করা ৪০তম ওভারে ৪টি চারের সঙ্গে এক ছক্কায় ২৫ রান তুলে সেঞ্চুরি পূরণ করেন ৩০ বছর বয়সী বাঁহাতি ব্যাটসম্যান। ক্যারিয়ারের সপ্তম সেঞ্চুরি করতে তার লাগে ¯্রফে ৭৬ বল। সেঞ্চুরির পরও দ্রুত রান তুলতে থাকেন ব্যাট। আরেক প্রান্তে তাকে সঙ্গ দিয়ে যান অধিনায়ক উইলিয়ামসন। দুইজনে মিলে দলকে পৌঁছে দেন জয়ের বন্দরে। হ্যামিল্টনের সেডন পার্কে রোববার দ্বিতীয় ওয়ানডেতে মুখোমুখি হবে দুই দল। সংক্ষিপ্ত স্কোর: ভারত: ৫০ ওভারে ৩০৬/৭ (ধাওয়ান ৭২, গিল ৫০, শ্রেয়াস ৮০, পান্ত ১৫, সূর্যকুমার ৪, স্যামসন ৩৬, ওয়াশিংটন ৩৭*, শার্দুল ১; সাউদি ১০-০-৭৩-৩, হেনরি ১০-১-৪৮-০, ফার্গুসন ১০-১-৫৯-৩, স্যান্টনার ১০-০-৫৬-০, মিল্ন ১০-০-৬৭-১)। নিউ জিল্যান্ড: ৪৭.১ ওভারে ৩০৯/৩ (অ্যালেন ২২, কনওয়ে ২৪, উইলিয়ামসন ৯৪*, মিচেল ১১, ল্যাথাম ১৪৫*; আর্শদিপ ৮.১-০-৬৮-০, শার্দুল ৯-১-৬৩-১, ওয়াশিংটন ১০-০-৪২-০, উমরান ১০-০-৬৬-২, চেহেল ১০-০-৬৭-০)। ফল: নিউ জিল্যান্ড ৭ উইকেটে জয়ী। ম্যান অব দা ম্যাচ: টম ল্যাথাম।