‘লবণাক্ত এলাকায় তেল ফসলের আবাদ বৃদ্ধিতে করণীয়’ শীর্ষক সেমিনার বৃহস্পতিবার দুপুরে খুলনা কৃষি তথ্য সার্ভিস (এআইএস) এর সম্মেলনকক্ষে অনুষ্ঠিত হয়। সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন কৃষি তথ্য সার্ভিসের পরিচালক কে জে এম আব্দুল আউয়াল। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের খুলনা আঞ্চলিক কার্যালয়ের অতিরিক্ত পরিচালক মোঃ ফরিদুল হাসান। প্রধান অতিথি তাঁর বক্তৃতায় বলেন, লবণাক্ততা দেশের দক্ষিণাঞ্চলের কৃষির বিকাশে বড় একটি বাঁধা। জমিকে চাষের আওতায় আনলে লবণাক্ততার মাত্রা কমে। পতিত জমি কিভাবে চাষের আওতায় আনা যায় সে বিষয়ে কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তাদের নজর দিতে হবে। সেমিনারে সভাপতি বলেন, দেশে ভোজ্যতেলের আমদানি কমাতে তেল ফসলের আবাদ বাড়াতে হবে। দক্ষিণাঞ্চলের লবণাক্ততা প্রবণ জমিতে ফসলের আবাদ যেমন আশা ব্যঞ্জক তেমনি চ্যালেঞ্জিং। তবে তেল ফসলের আবাদ বৃদ্ধি করতে গিয়ে ধানের আবাদ কমানো যাবে না। কৃষি তথ্য সার্ভিস কৃষকদের এবিষয়ে সকল তথ্য সময় মতো সরবরাহ করবে। অনুষ্ঠানে জানানো হয়, বাংলাদেশে ভোজ্যতেল হিসেবে ২০২১ সালে প্রায় ১৬ হাজার কোটি টাকা সমমূল্যের ৭.৮০ লাখ মেট্রিকটন সয়াবিন তেল এবং ১৩.৫৫ লাখ মেট্রিকটন পাম অয়েল আমদানি করা হয়েছে। সরকার আগামী তিন বছরের মধ্যে দেশে তেল ফসলের আবাদ বৃদ্ধির মাধ্যমে ভোজ্যতেলের আমদানি ৪০ শতাংশ কমানোর উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। ২০১৭-১৮ অর্থবছরে দেশে সরিষার উৎপাদন ছিলো ছয় লাখ মেট্রিকটন যা ২০২১-২২ অর্থবছরে ৮.৫৪ লাখ মেট্রিকটনে উন্নীত হয়েছে। এছাড়া সরিষা, চিনাবাদাম, তিল, সয়াবিন ও সূর্যমুখী মিলে দেশে মোট ১২.৬২ মেট্রিকটন ভোজ্যতেল উৎপাদন হয়। সেমিনারে আরও জানানো হয়, দেশের উপকূলীয় জেলা গুলোর ১০ লাখ হেক্টরের বেশি জমি বিভিন্ন মাত্রার লবণাক্ততায় আক্রান্ত। এর মধ্যে ৭.৫ লাখ হেক্টর জমি বছরের বিভিন্ন সময় অনাবাদি থাকে। এই অনাবাদি জমির দুই শতাংশ সূর্যমুখী চাষের আওতায় আনতে পারলে ১২ হাজার টন তেল উৎপাদন করা সম্ভব। আবার এক শতাংশ জমিতে সয়াবিন আবাদ করা গেলে প্রায় ১৫ হাজার টন সয়াবিন তেল উৎপাদন করা সম্ভব হবে। কৃষি তথ্য সার্ভিসের খুলনা কার্যালয়ের আঞ্চলিক বেতার কৃষি অফিসার কৃষিবিদ শারমিনা শামিমের সঞ্চালনায় সেমিনারে স্বাগত জানান এআইএস এর উপপরিচালক (গণযোগাযোগ) ড. শামীম আহমেদ। সেমিনারে মূলপ্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ পরমানু কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের সাতক্ষীরা উপকেন্দ্রের উধ্বর্তন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মোঃ বাবুল আকতার। অনুষ্ঠানে দেশের দক্ষিণাঞ্চলের ১২টি জেলার কৃষি সম্প্রসারণ দপ্তরের উপপরিচালক, উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা, উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা ও কৃষকসহ মোট ৪০জন অংশ গ্রহণ করেন।-তথ্য বিবরণী