দৃষ্টিপাত ডেস্ক ॥ বিশ্ব মুসলিম সম্প্রদায় পবিত্র রোজা পালন করছ,বিশ্বের অন্যান্য দেশের ন্যায় (নিজ ভূমিতে পরাধীন) ফিলিস্তিনিরাও রোজা রাখছে। তবে প্রতিটি রোজার দিন তাদের একেক জনের মুত্যৃ দিন হিসেবে দেখা দিচ্ছে পবিত্র রোজার দিনগুলোতেও দখলদার ইসরাইলি বাহিনী গাজা উপত্যকায় একের পর এক হামলা পরিচালনা করে হত্যা করছে নিরীহ ও নিরস্ত্র ফিলিস্তিনিদেরকে। বিশ্বের একমাত্র জাতি ফিলিস্তিনিরা যারা নিজ ভূমিতে পরাধীন এবং প্রতিনিয়ত দখলদার ইসরাইলী বাহিনী দ্বারা হত্যাকান্ডের শিকার হচ্ছে। এমন কোনদিন নেই যে দিনে বা সময়ে ফিলিস্তিনিদের রক্ত ঝরছে না। রোজার দিন গুলোতে হামলার ভয়াবহতা আরও সর্বগ্রাসী, রাফায় হামলার ক্ষেত্র অধিকতর বিস্তৃত করেছে। মিশর সীমান্ত সংলগ্ন রাফা শহরে অন্তত একমাস যাবৎ দখলদার বাহিনী বিমান হামলা সহ স্থল অভিযান অব্যাহত রেখেছে। গাজা উপত্যকার সর্বাধিক উচুভবন বারতলা বিশিষ্ট এই ভবনটি রাফা শহরে অবস্থিত। দ্বিতীয় রোজার দিনে দখলদার ইসরাইলি বাহিনী উক্ত বারতলা ভবনটিতে বিমান হামলা চালিয়ে মাটির সাথে মিশিয়ে দিয়েছে। কাতার ভিত্তিক টেলিভিশন চ্যানেলি আল জাজিরা জানিয়েছে ভবনটিতে তিন শতাধীক ফিলিস্তিনি পরিবার পরিজন নিয়ে বসবাস করতো। ইসরাইলি বাহিনী উক্ত ভবনটিতে বিমান হামলা শুরুর মাত্র ত্রিশ মিনিট পূর্বে জানিয়েদেয় যে হামলা হবে। অতি অল্প সনময়ের মধ্যে ভবনটিতে বসবাসরত সকলে নিচে নামতে পারেনি বিশেষ করে বৃদ্ধ মহিলা ও শিশুরা নামেত পারেনি। ফিলিস্তিনিদের অহংকারের প্রতিকহিসেবে বিবেচিত এই ভবনটির অস্তিত্ব বিলীন হয়ে গেছে। এখানেই শেষ নয় রমজান কে সামনে রেখে দখলদার ইসরাইলি বাহিনী গাজায় মসজিদ গুলোতে নতুন ভাবে হামলা করছে যেন ফিলিস্তিনিরা মসজিদেও যেতে না পারে। গতকাল আল জাজিরা টেলিভিশন সচিত্র প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে গাজায় ফিলিস্তিনিরা ধ্বংস হওয়া মসজিদের ধ্বংস্তুপের মাঝে নামাজ আদায় করছে। তারপরও তাদের মাঝে শঙ্কা উদ্বেগ আর আতঙ্কের শেষনেই যে কোন সময়ে দখলদার ইসরাইল নামাজ রত। ফিলিস্তিনিদের উপর হামলা করতে পারে। রমজান শুরুতে একের পর এক হামলায় মৃত্যু মুখে পতিত হচ্ছে ফিলিস্তিনিরা। এরই মধ্যে দখলদার ইসরাইলের বর্বর বাহিনীর সদস্যরা গাজার বিখ্যাত ফুটবলার মোহাম্মদ বারাকাতকে হত্যা করেছে। আন্তর্জাতিক বিশ্বে ফুটবলে ফিলিস্তিনিদের কে বিশেষ ভাবে আলোকিত করার কারিগর বিশ্ব বিখ্যাত ফুটবলার বারাকাত এর মৃত্যুতে গাজাবাসি ফুসে উঠেছে ক্ষোভ, ক্রেধ আর শোকে আচ্ছন্ন ফিলিস্তিনিরা, গাজার ক্রীড়া মন্ত্রণালয় জানিয়েছে এ পর্যন্ত দখলদার ইসরাইলি বাহিনীর হামলায় শতাধীক ক্রীড়াবিদ নিহত হয়েছে। দখলদার বাহিনীর অন্যতম তার্গেট ফিলিস্তিনিদের মধ্যে বিখ্যাত ও আলোচিতরা আর এ কারনে শিক্ষক, বিজ্ঞানী, শিল্পী, চিকিৎসক, প্রকৌশলী সহ সমাজে প্রতিষ্ঠিত ফিলিস্তিনিদেরকে একের পর এক হত্যা করে চলেছে দখলদার বাহিনী। ইসরাইলি সেনাদের অন্যতম প্রধান তার্গেট সাংবাদিক। আর এ কারনে দখলদার বাহিনীর হাতে গত পাঁচমাসের অধিক সময়ে অন্তত দেড় শতাধীক সাংবাদিক নিহত হয়েছে। নিহত সাংবাদিকদের একটি বড় অংশ বিদেশী। ইসরাইলের বর্বরতা, নিষ্ঠুরতা বিশ্ববাসির সম্মুখে কেবল মাত্র সাংবাদিকরাই প্রকাশ করে চলেছে। কাতার ভিত্তিক টেলিভিশন চ্যানেল আল জাজিরার উপর অত্যন্ত ক্ষুব্ধ ইসরাইল আর এ কারনে তাদের বিশেষ লক্ষ্য আল জাজিরা সাংবাদিক বাহিনীর হামলায় হতাহত হয়েছে। গাজার হামাস নিয়ন্ত্রীত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে পবিত্র রোজার সময় গুলোতে ইসরাইলি হামলা থেমে নেই, হামলায় আহতদের চিকিৎসা প্রদানের সুযোগ সংকুচিত হয়ে আসায় বিনা চিকিৎসায় মৃত্যুমুখে পতিত হচ্ছে ফিলিস্তিনিরা। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় আরও জানিয়েছে ইসরাইলের হামলায় একুত্রিশ হাজার ফিলিস্তিনি নিহত হওয়ার দীর্ঘ তালিকা হয়েছে। এদিকে হুতি বিদ্রোহীরা গতকালও ইসরাইল সংশ্লিস্ট জাহাজে হামলা চালিয়েছে। রাশিয়ান গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে হুতিরা শব্দের চেয়ে ছয়গুন শক্তি সম্পন্ন ক্ষেপনাস্ত্রর সকল পরীক্ষা চালিয়েছে শক্তি এবং সমর্থের দিকদিয়ে অতি শক্তিধর হুতিদের নির্মূল করার কতটুকু সামর্থ রাখে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তা নিয়ে ছুড়েছে হুতি পক্ষীয় শক্তিগুলো।