এফএনএস স্পোর্টস: নাজমুল হোসেন শান্ত। যাকে একাদশে রাখা নিয়ে কম কথা হয়নি বাংলাদেশ ক্রিকেট অঙ্গনে। সেই কথা এশিয়া কাপে আফগানিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচের পর টি-স্পোর্টসের একটি শো-তে বলেছিলেন বাংলাদেশ ক্রিকেটের সাবেক টিম ডিরেক্টর খালেদ মাহমুদ সুজন। তিনি বলেন, ‘একসময় শান্তকে দলে রাখার জন্য আমাকে অনেক কথা শুনতে হয়েছে।’ এখন সেই দিন বদলেছে। পারফর্ম দিয়ে নিজের অবস্থান বদলে দিয়েছেন শান্ত। হয়ে উঠেছেন দেশের ক্রিকেটের আস্থার প্রতীক। চলতি বছরে নিজ ব্যাটে জিতিয়েছেন অনেক ম্যাচ। চলমান এশিয়াকাপেও এখন পর্যন্ত টুর্নামেন্টের সর্বোচ্চ রান শান্তর। বিশ্বসেরা ব্যাটার বাবর আজমের রানও তার নিচে। দলের হয়ে প্রথম ম্যাচে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে একাই হাল ধরেছিলেন শান্ত। ৮৯ রানে থামে তার ইনিংস। পরে আফগানদের বিপক্ষে বাঁচা-মরার লড়াইয়ে বন্ধু মিরাজকে নিয়ে গড়েন ১৯৪ রানের জুটি। তুলে নেন সেঞ্চুরি। আফগানদের বিপক্ষে বিশাল জুটি গড়া মেহেদী হাসান মিরাজ ও নাজমুল, দু’জনেরই ক্র্যাম্প করেছিল। ১১৯ বলে ১১২ রান করার পর মিরাজকে ব্যাটিং থামিয়ে ফিরে আসতে হয়। নাজমুল আউট হয়ে ফিরে আসার পর আর ফিল্ডিংয়েও নামেননি। গতকাল মঙ্গলবার জানা গেল, এশিয়া কাপেই খেলা হবে না শান্তর। এক বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি নিশ্চিত করেছে এশিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিল (এসিসি)। একসময় নাজমুল হোসেন শান্তকে নিয়ে ট্রল হতো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। অফফর্মের কারণে নেটিজেনদের কাছ থেকে তির্যক মন্তব্যও শুনতে হয়েছে শান্তকে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ‘লর্ড’ উপাধি দিয়ে করা হতো সমালোচনা। সেই সমালোচনা, ট্রল সব কিছু এখন অতীত। যেই শান্তর একাদশে থাকলে কমেন্ট বক্সে সমালোচনা এবং রিঅ্যাকশনে হা-হা থাকত বেশি। গতকাল মঙ্গলবার এশিয়া কাপ থেকে ছিটতে যাওয়ার খবর নিজেই ফেসবুকে জানিয়েছেন তিনি। সেখানে এক ঘণ্টায় ৭৭ হাজার ফেসবুক ইউজার রিঅ্যাক্ট করেন। এর মধ্যে ৬০ হাজার ছিল দুঃখের (কান্না) রিঅ্যাকশন। কমেন্ট বক্সে ১০ হাজার ক্রিকেটপ্রেমী মন্তব্য করেছেন। সবাই দুঃখ প্রকাশ করে তার জন্য দোয়া করেছেন। বিশ্বকাপ দলে ফিরে আবারও ব্যাটিং ঝড় তুলবেন বলে আশাবাদী ভক্তরা। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে শান্ত লিখেছেন, ‘আমার এশিয়া কাপ ২০২৩-এর যাত্রা এখানেই শেষ হলো।’ বাংলাদেশ দলকে শুভ কামনা জানিয়েছেন শান্ত, ‘টুর্নামেন্টের বাকি সময়ের জন্য আমার বাংলাদেশ দলের জন্য শুভ কামনা রইল। শিগগিরই দেশে ফিরছি এবং বিশ্বকাপের জন্য নিজেকে প্রস্তুত করব ইনশাআল্লাহ।’ সেই পোস্টে রাব্বি নামের একজন মন্তব্য করেছেন, ‘এমন সংবাদ শোনার জন্য মোটেও প্রস্তুত ছিলাম না।’ সাইদুল ইসলাম হৃদয় নামের একজন মন্তব্য ঘরে লিখেছেন, ‘বর্তমান সময়ে শান্ত একাদশে থাকা মানে প্রতিপক্ষ দল আতঙ্কে থাকা। এশিয়া কাপে বাকি ম্যাচগুলোতে মিস করব।’ জাতীয় দলের ফিজিও বায়েজিদুল ইসলাম খান বলেন, ‘শান্ত তার হ্যামস্ট্রিংয়ের চোটের কথা আফগানিস্তানের বিপক্ষে ব্যাটিংয়ের সময় জানিয়েছিল। পরে ফিল্ডিংও করতে পারেনি। আমরা এমআরআই করিয়ে একটা মাসল টিয়ার পেয়েছি। যার পরিপ্রেক্ষিতে এশিয়া কাপে তার খেলা হচ্ছে না। দেশে ফিরে পুনর্বাসন ও বিশ্বকাপ প্রস্ততি শুরু করবেন তিনি।’