বৃহস্পতিবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১:০৩ পূর্বাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম ::
লক্ষ টাকার ৮ দলীয় নলতা শরীফ কাপ ফুটবল টুর্নামেন্ট ১ম রাউন্ডের ২য় খেলায় হাজিরপুর জয়ী আশাশুনি মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের অভিযানে আটক ২ বুধহাটায় বেওয়ারিশ অসহায় বৃদ্ধর মৃত্যু তালার প্রকৌশলী ও ঠিকাদার বিরুদ্ধে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ! সাতক্ষীরায় জামায়াতের বার্ষিক পরিকল্পনা ওরিয়েন্টেশন গণমাধ্যমকর্মীদের সাথে খুলনার বিভাগীয় কমিশনারের মতবিনিময় বুধহাটা এবিসি কেজি স্কুলে বার্ষিক ফল প্রকাশ প্রতাপনগরে অগ্নিকাণ্ডে ৩টি ঘর ভস্মীভূত \ শতাধিক হাঁস মুরগীর মৃত্যু নূরনগরে অবৈধ বালি উত্তোলনের চেষ্টা, প্রশাসনের হস্তক্ষেপে বন্ধ আশাশুনির বড়দলে বিনা চাষে সরিষা আবাদে সাফল্য

শাস্তি না হওয়ায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো অবৈধ আয়ের উৎসে পরিণত হয়েছে

দৃষ্টিপাত ডেস্ক :
  • আপডেট সময় শনিবার, ১৩ আগস্ট, ২০২২

এফএনএস : বর্তমানে দেশের বিপুলসংখ্যক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানই লুটেরাদের বিপুল অবৈধ আয়ের উৎসে পরিণত হয়েছে। মূলত শাস্তি না হওয়ায় লুটেরার দল বেপরোয়া। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে অবৈধভাবে অর্থ হাতিয়ে নেয়ার ক্ষেত্রে পরিচালনা কমিটি ও কিছু লুটেরা শিক্ষক জড়িত। ওই গোষ্ঠি প্রতিষ্ঠানে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠানে আতঙ্ক সৃষ্টি করে রাখে। শিক্ষকদের নিয়ন্ত্রণ করতে শোকজ, বেতন বন্ধ, বরখাস্তের মতো পথ বেছে নেয়া হয়। দুর্নীতির কারণে এখনো কোনো প্রতিষ্ঠানের পরিচালনা কমিটির সভাপতি বা সদস্যকে বিচারের মুখোমুখি হতে হয়নি। আর লুটপাটের টাকা ফেরত দেওয়ারও নজির নেই। আর পর্ষদ পক্ষে থাকলে অধ্যক্ষ বা প্রধান শিক্ষককেও ন্যূনতম বেকায়দায়ও পড়তে হয় না। সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, একটা সময় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষক-কর্মচারী নিয়োগ, ভর্তি-বাণিজ্য ছিল অর্থ হাতিয়ে নেয়ার প্রধান উপায়। তার সাথে ছিল টিউশন ও অন্যান্য ফি, খাতা-কলম-কাগজ এবং স্কুল ড্রেস-ডায়েরি ইত্যাদি বিক্রির টাকাও তছরুফ। পাশাপাশি অবৈধ ও নিম্মানের গ্রন্থ পাঠ্যভুক্তির বিনিময়ে প্রকাশকদের কাছ থেকে কমিশন আদায়। আর শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষা চালুর পর জাল সনদে চাকরি ও ভুয়া এমপিওভুক্তি বড় ব্যবসায় পরিণত হয়। আর এখন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের জমি-গাড়ি ক্রয়, ভবন নির্মাণ, বিভিন্ন ধরনের সংস্কার কাজের নামে অর্থ লুটপাট চলছে। প্রতিষ্ঠানের জমি বিক্রি ও স্থাপনা দখল করে নেয়ার ঘটনাও ঘটেছে। তাছাড়া অবিশ্বাস্য হারে সিটিং অ্যালাউন্স গ্রহণ এবং প্রতিষ্ঠানের গচ্ছিত অর্থ এক ব্যাংক থেকে অন্য ব্যাংকে এফডিআর করে কমিশন বাণিজ্যের অভিযোগও বিস্তর। আর বহুদিন ধরেই অসাধু শিক্ষকরা ছাত্রছাত্রীদের জিম্মি করে কোচিং-প্রাইভেটে বাধ্য করে আসছে। আর ওই কোচিংবাজদের সুরক্ষার বিনিময়ে কমিটি ও অসাধু নেতা-শিক্ষকরা বখরা পায়। এমন প্রতিষ্ঠানের টাকা ব্যক্তির নামে খোলা হিসাবে রাখার অভিযোগও রয়েছে। ডিআইএ এবং শিক্ষা খাত সংশ্লিষ্টদের সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়। সূত্র জানায়, বর্তমানে দেশে মাধ্যমিক ও কলেজ পর্যায়ে বেসরকারি প্রায় ৩৭ হাজার শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। তার মধ্যে ২৯ হাজার ১৬৪টি এমপিওভুক্ত প্রতিষ্ঠান। তাছাড়া প্রায় ১ হাজার সরকারি স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসা আছে। ওই উভয় ধরনের প্রতিষ্ঠানেই দুর্নীতির ঘটনা ঘটছে। তবে লুটপাটে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রেই বেশিরভাগ অভিযোগ আসছে। বিধিমালায় ওসব প্রতিষ্ঠানের সভাপতিসহ পর্ষদকে একচ্ছত্র ক্ষমতা দেয়া হয়েছে। আর ওই ক্ষমতার জোরেই অনেকেই দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়েছে। বর্তমানে বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পরিচালনা কমিটিই সব। আর প্রতিষ্ঠান প্রধান আয়-ব্যয়ের কর্মকর্তা। পরিচালনা কমিটির সদস্যরা স্কুল-কলেজে দুর্নীতির করলে প্রতিষ্ঠান প্রধানকেই দায়ভার নিতে হয়। কারণ পরিচালনা পর্ষদের হাতেই তাদের চাকরি থাকা-না থাকা নির্ভর করে। ফলে অনেক ক্ষেত্রেই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধান রাজি না হয়ে উপায় থাকে না। অথচ বিধিমালায় সভাপতি-সদস্য বা পর্ষদকে কর্মকান্ডের দায় থেকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে। শাস্তি বলতে সর্বোচ্চ কমিটি ভেঙে দেয়া হয়। আইনে আটকে না যাওয়ায় দুর্নীতিবাজ পর্ষদ ও সিন্ডিকেটের সাধারণ শিক্ষকরা বেপরোয়া। প্রতিষ্ঠানের সেবার পরিবর্তে বৈধ-অবৈধ নানা উপায়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের অর্থ লুটই তাদের প্রধান লক্ষ্য। সূত্র আরো জানায়, সাম্প্রতিক শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে দাখিল করা ডিআইএর প্রতিবেদনের তথ্যানুযায়ী দেশের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ৩১৬ দশমিক ৬৯৮৬৮ একর জমি বেহাত হয়েছে। দেশের ৮৯৯টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আলাদা দুই সময়ে পরিদর্শন করে এই চিত্র মিলেছে। ওসব জমির কোনোটি পরিচালনা কমিটি আর শিক্ষকরা মিলে বিক্রি করে দিয়েছে। আবার কোনোটি নিজেদের নামে লিখে নিয়েছে। তাছাড়া বিভিন্নভাবে প্রতিষ্ঠানগুলোতে অর্ধশত কোটি টাকা লুট হয়েছে। এদিকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সংশ্লিষ্টদের মতে, বিচারহীনতাই হচ্ছে দেশের বেসরকারি স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসায় লুটপাট বাড়ার প্রধান কারণ। তদন্তে প্রায়ই বড় ধরনের অনিয়ম ও দুর্নীতির তথ্য উদ্ঘাটিত হলও কোনো শাস্তি হয় না। অভিযোগের নিরপেক্ষ তদন্ত হয় না। অনেক সময়ে তদন্তও আটকে যায়। আবার বিভিন্ন ক্ষেত্রে পক্ষপাতদুষ্ট প্রতিবেদন দেয়ারও অভিযোগ আছে। আবার অনেক সময় তদন্ত প্রতিবেদন ফাইলবন্দিই থাকে বছরের পর বছর। আবার ত্রিপক্ষীয় বৈঠক বা আত্মপক্ষ সমর্থনের নামে কিছু প্রেিবদন উল্টে দিয়ে অপরাধীকে মাফও করে দেয়া হয়েছে। তাছাড়া কখনো মন্ত্রণালয় ব্যবস্থা নিলেও পরিচালনা কমিটি না চাইলে অপরাধীর সাজা হয় না। এ প্রসঙ্গে ডিআইএ পরিচালক অধ্যাপক অলিউল­াহ মো. আজমতগীর জানান, ডিআইএ দেশের সরকারি-বেসরকারি উভয় ধরনের প্রতিষ্ঠানই পরিদর্শন ও তদন্ত করে থাকে। বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো পরিচালনা কমিটির মাধ্যমে পরিচালিত হয়।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর
© All rights reserved © 2013-2022 dainikdristipat.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com