এফএনএস: খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) উপাচার্যের (ভিসি) বাসভবনের তালা ভাঙার ১৩ ঘণ্টা পর ফের তালা দিতে যান শিক্ষার্থীরা। কিন্তু শিক্ষকদের বাধার মুখে তালা দিতে না পেরে ফিরে যান তারা। কুয়েট শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. ফারুক হোসেন বলেন, শিক্ষক সমিতির সভাপতি, সিনিয়র শিক্ষক, বিভিন্ন বিভাগের প্রধানসহ তিনিও ভিসির বাসভবনে বৈঠকে ছিলেন। ক্যাম্পাসে নিরাপত্তা বজায় রাজাসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে আলোচনা চলছিল। এমন সময় ছাত্ররা ভিসির বাসভবনের প্রধান গেটে তালা লাগাতে সচেষ্ট হচ্ছিল। এ অবস্থায় সব শিক্ষক বেরিয়ে এসে ছাত্রদের সঙ্গে কথা বলেন। শিক্ষকদের কথা শুনে ছাত্ররা তালা না দিয়ে ফিরে যায়। শিক্ষার্থীরা জানান, রাতে তালা ভাঙার পর তারা সেখানে যান। এরপর সকাল সাড়ে ১০টার মধ্যে ভিসিকে বাসভবন ছাড়ার জন্য আল্টিমেটাম দেওয়া হয়। কিন্তু সময় পার হলেও ভিসি বাসভবনেই থাকেন। এ অবস্থায় বেলা ১২টার দিকে শিক্ষার্থীরা ভিসির বাসভবনের প্রধান গেটে তালা লাগাতে সচেষ্ট হয়। এ সময় শিক্ষকরা তালা দিতে বারন করেন। এরপর তারা ফিরে আসেন। কুয়েট উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ মাছুদ জানান, তিনি চিকিৎসা নিয়ে রাতে বাসভবনে এসেছেন। তিনি কোনও তালা দেখেননি। তাকে অফিস করতে হবে। অসুস্থতার কারণে তিনি বাসভবনেই বেশি সময় কাটান। অফিসের কাজও করছেন।উল্লেখ্য, কুয়েটে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধের দাবি ঘিরে গতকাল মঙ্গলবার শিক্ষার্থীদের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষ ও ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এ সংঘর্ষে আহত হয়েছেন অর্ধশত শিক্ষার্থী। তাদের অধিকাংশের শরীরে ধারালো অস্ত্রের আঘাত রয়েছে। আহতদের খুলনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল, কুয়েট মেডিক্যাল সেন্টারসহ আশপাশের বেসরকারি ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়। এ ঘটনায় পাঁচ জনকে আটক করা হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার রাতে ছাত্ররা সংবাদ সম্মেলন করে উপাচার্যের পদত্যাগসহ ৫ দফা দাবি জানান। দাবি না মানায় ১৯ ফেব্রুয়ারি বেলা দেড়টার দিকে শিক্ষার্থীরা প্রশাসনিক ও একাডেমিক ভবনগুলোতে তালা ঝুলিয়ে দেন। এর আগে গতকাল মঙ্গলবার বিকাল ৪টা থেকে কুয়েট উপাচার্যকে মেডিক্যাল সেন্টারে অবরুদ্ধ করা হয়। তিনি বুধবার বিকাল সোয়া ৫টার দিকে অবরুদ্ধ অবস্থা থেকে মুক্তি পান। অবরুদ্ধ থাকা অবস্থাতেই তিনি ১৯ ফেব্রুয়ারির জরুরি সিন্ডিকেট সভায় অনলাইনে উপস্থিত থেকে সভাপতিত্ব করেন। ২১ ফেব্রুয়ারি কুয়েটের সকল শিক্ষার্থী মিলে ভিসির বাসভবনে তালা ঝুলিয়ে দেয়। ২৪ ফেব্রুয়ারি দিনগত রাত ১১টার দিকে ভিসি বাসভবনে প্রবেশ করেন। ভিসি আসার আগেই কে বা কারা তালা ভেঙে ফেলেছিল। এরপর শিক্ষার্থীরা ভিসিকে বাসভবন থেকে বেরিয়ে যাওয়ার জন্য ২৫ ফেব্রুয়ারি সকাল সাড়ে ১০টা পর্যন্ত সময় বেঁধে দেয়।