এফএনএস লাইফস্টাইল: শিশুর মধ্যে নানা রকমের আচরণগত সমস্যা দেখা যায়। এদিক-ওদিক অনবরত মাথা ঘোরানো, শরীর নাচানো, বৃদ্ধাঙ্গুল চোষা, নখ খুঁটানো, দাঁতে দাঁত ঘষা, নিজের শরীরের বিভিন্ন অংশে নিজে নিজে আঘাত করা কিংবা নিজেকে নিজে কামড়ে দেওয়া, পুনঃপুনঃ একই কথা আওড়ানো, দম বন্ধ করে থাকা অথবা হাঁ করে বাতাস গেলা, এ রকম অনেক অভ্যাসজনিত সমস্যা শিশুর মধ্যে দেখা যায়। শিশুদের এসব অসংগতি মূলত তাদের টেনশন প্রতিক্রিয়ার বিভিন্ন প্রকাশ মাত্র। শিশুদের এসব আচরণগত সমস্যার মধ্যে অন্যতম হলো আঙুল চোষা। এই সমস্যা নিয়ে লিখেছেন প্রফেসর ডা. প্রণব কুমার চৌধুরী, সাবেক বিভাগীয় প্রধান, শিশুস্বাস্থ্য বিভাগ, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল
আঙুল চোষা অভ্যাসের খারাপ দিক
* জীবনের প্রথম বছরে আঙুল চোষা শিশুর জন্য স্বাভাবিক এক ব্যাপার। কিন্তু এর পরে এটিকে স্বাভাবিক বলে গ্রহণ করা যায় না। বরং এই প্রবৃত্তি শিশুর অপরিপক্বতাকেই নির্দেশ করে। এটি মা-বাবা ও অভিভাবকের মধ্যে অস্বস্তির কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
* এই বদ-অভ্যাস শিশুর তেমন কোনো শারীরিক ক্ষতির কারণ ঘটায় না। তবে অপরিষ্কার আঙুল মুখে দেওয়ার ফলে পেটের অসুখ, কৃমি রোগ ইত্যাদিতে ভোগার ঝুঁকি বাড়ে। আঙুল চোষার কারণে শিশুর দাঁতের বিন্যাস সঠিক না-ও হতে পাবে। দাঁত এবড়ো-খেবড়ো ও কুশ্রী হয়ে গজানোর সম্ভাবনা থেকে যায়।
ব্যবস্থাপত্র
* শিশুর এই অভ্যাসটি তার নিরাপত্তাবোধের অভাব থেকেই সৃষ্টি এবং টেনশন লাঘবের একটি পদ্ধতি। সে কারণে শিশুকে পরিচর্যার ব্যাপারে আরো যতœবান হতে হবে, তার লালন-পালনের ফাঁক গলদমুক্ত করতে হবে।
* শিশু আর যেসব বিষয়ে আনন্দ পায়, আগ্রহ প্রকাশ করে সে রকম কিছুতে যাতে বেশি সময় দিতে পারে সেটার সুযোগ করে দেওয়া। যাতে সে আঙুল চোষা ভুলতে পারে।
* শিশু যে আঙুল চুষে বা চুষছে, মা-বাবা যেন সেটা শিশুকে বারবার মনে করিয়ে না দেন। বরং শিশুর আচরণের ভালো দিকগুলোর প্রশংসা করে তাকে অন্য ভালো কিছুতে উৎসাহিত করা।
* কিছুটা বয়স্ক শিশু, যে সজ্ঞানে আঙুল চোষার বদ-অভ্যাস থেকে পরিত্রাণের জন্য চেষ্টা করছে, তাকে সহযোগিতা করা, উৎসাহ জোগানো। যখনই সফল হচ্ছে তখন প্রশংসা করা। এ সময় তার ব্যর্থতার প্রতি নজর দিয়ে, তাকে দোষারোপ করা হলে বা কোনো ভৎর্সনা করা হলে, তার আত্মবিশ্বাসে চিড় ধরে। সে আর জয়ী হতে পারে না।