মীর আবু বকর ॥ শীতের তীব্রতা থামছে না। সারাদেশে চলছে শীতের তান্ডব শীতের চোখ রাঙানীর ঘনঘটা সারা দেশময়। সাতক্ষীরার বাস্তবতায় নিকট অতীতে জেলাবাসি এমন ভয়াবহ শীতের প্রকোপ প্রত্যক্ষ করেনি। সাতক্ষীরা গত সপ্তাহ ব্যাপী সর্বনিম্ন তাপমাত্রার চিত্র ১৪ থেকে ১৫। গতকাল শীতের পাশাপাশি গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি শীত যন্ত্রনাকে অধিকতর বেগমান করেছে। এমনিতেই শীতের তীব্রতায় জন জীবনে এক ধরনের অচলাবস্থা জন সাধারন নিতান্তই জরুরী প্রয়োজনে কেবল ঘরের বাইরে বের হচ্ছে। রাস্তাঘাট, বাজার মার্কেট সর্বত্রই জনসাধারনের উপস্থিতি কম, অতি শীতের কারনে জনজীবন যখন কাঁপছে, স্থবিরতা বিরাজ করছে, শীত কাতর মানুষরা স্বাভাবিক ভাবে জীবন যাপনে ক্ষেত্র বির্নিমান করার চিন্তায় ব্যাকুল সেই সময়ে দিন ব্যাপী গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি দুর্ভোগ আর দুর্যোগকে আরও এক ধাপ বৃদ্ধি করেছে। বৃষ্টির পাশাপাশি উত্তরের কনকনে হীমেল হাওয়া শরীরকে আড়স্ট করে তুলেছে। সপ্তাহব্যাপী শীত এবং ঠান্ডা বাতাস প্রবাহমান থাকলেও গত কালের বাতাস ছিল অসহনীয়, শীতকাতর মানুষগুলো ঘর হতে বের হতে পারেনি। সূর্যের আলো সাত/আট দিনে দুপুর বারটা একটার পর মাঝে মাঝে উকি দিলেও গতকাল সারাদিনই সূর্যের আলোর দেখা মেলেনি। প্রকৃতি যেন তার চিরচেনা রুপ পরিবর্তন করে গোড়ামুখি হয়ে পড়েছিল। শীতে এমনিতেই খেটে খাওয়া মানুষগুলো বিশেষ করে কায়িক পরিশ্রম করা শ্রমজীবীরা মাঠে ঘাটে, খেত, খামারে কাজ করতে পারছিলো না। তীব্র শীত যন্ত্রণাকে উপেক্ষা করে কেউ কেউ খেত খামারে জীবন জীবিকার তাগিদে কাজ করতে পারলে, গতকাল অধিকাংশ শ্রমজীবীরা কাজ করতে পারেনি। আর কাজ করতে না পারায় বৃষ্টির প্রতি ক্ষোভ না দেখালেও নিজেদের শ্রম বিক্রি করতে না পারার পরিস্থিতি কে মেনে নিয়েছে। সাতক্ষীরা শহরে বরাবরই প্রাণ চাঞ্চল এবং ব্যাপক ভিত্তিক জনগোষ্ঠীর উপস্থিতি থাকলে শীতের সাথে সৃষ্টির প্রতিযোগিতায় পরাজিত লোকজন শহরমুখি হইনি। অধিকাংশ দোকান পাট খোলা থাকলেও ক্রেতা এবং বিক্রেতাদের উপস্থিতি ছিল যৎসামান্য। বড় বড় বিপনী কেন্দ্রগুলো ছিল ক্রেতা শুন্য। শহরের চলাচল করা রিক্সা, ভ্যান, ইজিবাইক চালকরা চিন্তাগ্রস্থ হয়ে অলস সময় অতিবাহিত করেছে। উন্মুক্ত তথা খোলা দোকানীদের অনেকে বৃষ্টির কারনে পন্য সামগ্রী উন্মুক্ত করতে পারেনি। চিরচেনা পন্য সমাহের ভরপুর আর ক্রেতা বিক্রেতাদের সরব উপস্থিতির থানা সড়ক ও ছিল গতকাল ফাকা, গুড়ি গুড়ি বৃষ্টিতাই অনেকের জন্য ছিল এক ধরনের প্রতিঘাত। শহরের পাশাপাশি উপজেলা ভিত্তিক মোকাম ও হাটবাজার ছিল অনেকটা ফাঁকা ফাঁকা, খুচরা সবজি বিক্রেতা ও হকার শ্রেনির দোকানীরা রত বৃষ্টির কারনে রাস্তায় বসতে পারেনি। সাতক্ষীরা শহরের বড় বাজার সংলগ্ন সড়কে সবজি বিক্রেতা ইসমাইল হোসেন সবজি সাজিয়ে সড়কে ছাতি নিয়ে মাঝে মধ্যে সবজি বিক্রি করছিল, এ প্রতিবেদক তাকে জিজ্ঞাসা করেন শীতে দিনে ব্যবসা কেমন চলছে তিনি বলেন শীতের তীব্রতা থাকলে গরম জামা কাপড় গায়ে দিয়ে দোকানদারী করতে পারলে আজ বৃষ্টি হচ্ছে সে সাথে ঠান্ডা বাতাসের কাছে কাবু হয়ে কাপছি, খরিদদার ও তেমন নেই, এমন চিত্র মুদি, মাছ, মাংস সহ অন্যান্য খোলা স্থানে ব্যবসায়ীদের। চির পরিচিত সাতক্ষীরা কালিগঞ্জ সড়কে মুহুর মুহুর যাত্রীবাহি যানবাহন, ইজিবাইক, মহেন্দ্র, পন্যবাহী ট্রাক, মোটর সাইকেল সব কিছুর উপস্থিতি ছিল হাতে গোনা। যাত্রীবাহী গাড়ীগুলো যাত্রী ছিল অতি অল্প, দীর্ঘ সময় পর পর যাত্রীবাহী যানবাহনের দেখা মিলেছে। বৃষ্টির কারনে সড়ক গুলোতে স্বাভাবিক যাতায়ত যোগাযোগ ব্যবস্থায় ছন্দ পতন ঘটেছে। সড়কে মাটি পড়া বৃষ্টিতে কাদা সৃষ্টি হওযায় মোটরসাইকেল নিয়ে অনেককে পড়তে দেখা দেগছে। সাতক্ষীরা কালিগঞ্জ সড়কের আলীপুর, কুলিয়া, আবাদের হাট সড়ক, কদম তলা, সখিপুর দেবহাটা সড়ক, কেনেন্দ্রা, হাদিপুর, বংশিপুর সহ বিভন্ন সড়কের ইট ভাটার মাটি বহনকারী টলি হতে পড়ে থাকা মাটি গতকালের বৃষ্টিতে সড়ক কাদাময় হওয়ায় বিভিন্ন স্থানে ছোট খাটো দুর্ঘটনাও ঘটেছে। দিনে এবং রাতে শীতযন্ত্রনা হতে বাঁচতে কাগজ, খড়কুটা জালিয়ে অনেকের শীত নিবারন করতে দেখা গেছে। এ রিপোর্ট লেখার সময় রাত দশটায় সাতক্ষীরা শহর সহ উপজেলা গুলোতে টিপটপ বৃষ্টি হচ্ছিল, কোন কোন এলাকার হালকা বৃষ্টিপাতের খবর পাওয়া গেছে। শীতের কবল হতে পরিত্রান পাওয়া গেলেও বৃষ্টির কারনে শীতের তীব্রতা বৃদ্ধি পাওয়া দৃশ্যতঃ সাতক্ষীরা স্বাভাবিক জীবন যাত্রায় বিঘ্ন ঘটেছে যেমনটি অতীতে দেখা যাইনি।