মঙ্গলবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:২৮ পূর্বাহ্ন

শুকিয়ে যাচ্ছে বিশ্বের বড় বড় নদী

দৃষ্টিপাত ডেস্ক :
  • আপডেট সময় মঙ্গলবার, ২৩ আগস্ট, ২০২২

এফএনএস বিদেশ: জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব কতটা চরম হতে পারে চলতি বছর তা হাড়ে হাড়ে টের পেয়েছে বিশ্বের অনেক অঞ্চলের বাসিন্দা। পৃথিবীর কোথাও চলতি বছর তীব্র খরা চলছে আবার কোথাও চলছে ব্যাপক বন্যা। এমনকি আমেরিকা, ইউরোপ ও এশিয়ার বড় বড় নদীর পানি প্রবাহ কমতে শুরু করেছে। এর প্রভাবে একদিকে সুপেয় পানির উৎস কমে যাচ্ছে, আরেক দিকে চাষাবাদের জন্য পর্যাপ্ত পানির ঘাটতি দেখা দিতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। স্যাটেলাইট থেকে পাওয়া বিশ্বের ছয়টি বড় নদীর ছবি বিশ্লেষণ করে রোববার সিএনএন এ তথ্য জানিয়েছে। কলোরাডো নদী : যুক্তরাষ্ট্রের পশ্চিমাঞ্চলে খরা তীব্রতা কমার তেমন লক্ষণ এখনও দেখা যায়নি। খরার প্রভাবে কলোরাডো নদীর তীর শুকিয়ে যাচ্ছে এবং সরু হয়ে যাচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রের বৃহত্তম দুটি জলাধারের মধ্যে একটি হচ্ছে এই নদী। যুক্তরাষ্ট্রের সাতটি অঙ্গরাজ্য ও প্রতিবেশী মেক্সিকোর চার কোটি মানুষ এই নদীর ওপর নির্ভরশীল। নদী অববাহিকাকে সুরক্ষিত করার জন্য সরকার বাধ্যতামূলক পানি সংগ্রহ কমিয়েছে এবং রাজ্যগুলোকে অতিরিক্ত কর্ম পরিকল্পনা জমা দিতে বলেছে। ইয়াংজি নদী : এশিয়ার ইয়াংজি নদীর কিছু অঞ্চল শুকিয়ে যাচ্ছে এবং ওই সব এলাকায় নদীর তলদেশ এখন দেখা যাচ্ছে। এর উপনদীগুলি ইতোমধ্যে একেবারে শুকিয়ে গেছে। চীন নয় বছরের মধ্যে প্রথমবারের মতো দেশব্যাপী খরা সতর্কতা ঘোষণা করেছে এবং এর তাপপ্রবাহ ছয় দশকের মধ্যে সবচেয়ে দীর্ঘস্থায়ী হচ্ছে। ইয়াংজি নদী শুকানোর প্রভাব অনে বেশি। আট কোটি ৪০ লাখ মানুষের প্রদেশ সিচুয়ানের জলবিদ্যুৎ বিদ্যুতের ৮০ শতাংশ উৎপাদন হয় এই নদী থেকে। নদীতে পানির প্রবাহ কমে যাওয়ার সাথে সাথে বিদ্যুৎ উৎপাদন কমে গেছে। চলতি মাসে কর্তৃপক্ষ সিচুয়ানের সব কারখানা ছয় দিনের জন্য বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছে। রাইন নদী : সুইস আল্পসে জন্ম নিয়ে রাইন নদী জার্মানি ও নেদারল্যান্ডসের মধ্য দিয়ে উত্তর সাগরে গিয়ে পড়েছে। এটি ইউরোপীয় জাহাজ যাতায়াতের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ চ্যানেল। কিন্তু এই মুহূর্তে, এতে জাহাজ চলাচল মুশকিল হয়ে পড়েছে। অনেক এলাকায় নদীর তলদেশের অংশগুলো উপরে উঠে এসেছে, যার অর্থ যে জাহাজগুলি এই নদী দিয়ে যাবে তাদেরকে বহু পথ ঘুরে যেতে হবে। পো নদী : এই নদীটি ইতালির পার্বত্য অঞ্চল থেকে বের হয়ে পূর্ব দিকে প্রবাহিত হয়ে অ্যাড্রিয়াটিক সাগরে গিয়ে পড়েছে। এটি আল্পসের শীতকালীন তুষার এবং বসন্তে ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে প্রতি বছর নদীর চারপাশে বিধ্বংসী বন্যা হয়। কিন্তু এখন, পো নদীর চেহারা বদলে গেছে। উত্তর ইতালিতে শীতকাল শুষ্ক ছিল, তাই তুষার থেকে সামান্য জল প্রবাহিত হয়েছে এবং বসন্ত ও গ্রীষ্ম শুষ্ক ছিল, এই অঞ্চলটিতে গত সাত দশকের মধ্যে সবচেয়ে তীব্র খরা সইতে হচ্ছে। নদী এখন এতটাই শুকিয়ে গেছে যে, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়ের একটি বোমা স¤প্রতি এর শুকনো তলদেশ থেকে পাওয়া গেছে। লোয়ার নদী : ফ্রান্সের দ্রাক্ষাক্ষেত্রের একটি উপত্যকা বেঁচে আছে এই নদীকে ঘিরে। ওই দ্রাক্ষা দিয়ে তৈরি হয় বিশ্বের সবচেয়ে বিখ্যাত ওয়াইন। নদীটি প্রায় ৬০০ মাইল জুড়ে বিস্তৃত এবং ফ্রান্সের শেষ বুনো নদী হিসাবে বিবেচিত হয়। সমগ্র উপত্যকায় জীববৈচিত্র্য বাস্তুতন্ত্র এই নদীর ওপর নির্ভরশীল। নদীর কিছু অংশ ইতোমধ্যে মোটামুটি অগভীর হয়ে গেছে। কিছু অংশ বৃষ্টির অভাবে এবং প্রচন্ড গরমে এতটাই শুকিয়ে গেছে যে, মানুষ পায়ে হেঁটে পাড়ি দিতে পারে। দানিউব : এটি হল পশ্চিম ইউরোপের দীর্ঘতম নদী এবং জাহাজ চলাচলের গুরুত্বপূর্ণ চ্যানেল। নদীটি ১০ দেশের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত। রোমানিয়া, সার্বিয়া ও বুলগেরিয়াতে নদীটি ড্রেজিং করা হচ্ছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর
© All rights reserved © 2013-2022 dainikdristipat.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com