এফএনএস এক্সক্লুসিভ: শুল্কমুক্ত আমদানিতেও খুচরা বাজারে কমছে না চালের দাম। বরং বাড়তির দিকে। এক্ষেত্রে ব্যবসায়ীদের অজুহাত, ভারতের স্থানীয় বাজারে পণ্যটির দাম বেড়েছে। তাই দেশের খুচরা বাজারে বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে। আর চালের বিপাকে পড়েছেন মধ্যবিত্ত ও নিম্ন আয়ের মানুষ। রাজধানীর বাজারগুলোতে আটাশ চাল প্রতি কেজি ৬২ থেকে ৬৫ টাকা, নতুন আটাশ ৫৬ থেকে ৬০, মিনিকেট ৭০ থেকে ৭২, পাইজাম ৬৭ থেকে ৬৮, বাসমতি ৯৪ থেকে ৯৮, আমন ৭০, পোলাও চাল ১২০, নাজির শাইল ৭৮ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। মান ও বাজারভেদে চালের দাম বেড়েছে ২ থেকে ৩ টাকা। বাজার সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়। সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, হিলি স্থলবন্দর দিয়ে দেড় বছর চাল আমদানি বন্ধ থাকার পর ভারত থেকে চাল আমদানি শুরু হয়েছে। ওসব চাল টনপ্রতি রকমভেদে ৪১০ থেকে ৪৭০ মার্কিন ডলারে আমদানি হচ্ছে। আগে চাল আমদানিতে শুল্ক ছিল ৬২ দশমিক ৫ শতাংশ। গত ২০ অক্টোবর তা কমিয়ে ২৫ শতাংশ করে সরকার। আর ৩১ অক্টোবর চাল আমদানিতে শুল্ক সম্পূর্ণভাবে প্রত্যাহার করা হয়। এরপরও ব্যবসায়ীরা আগের দামেই চাল বিক্রি করছে। বর্তমানে আটাশ চালের দাম মাত্রাতিরিক্ত বেশি। প্রতি বস্তায় এর দাম বেড়েছে ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা। মিলাররাও দাম রাখছে বেশি। মূলত সিন্ডিকেট করে চালের দাম বেশি নিচ্ছে বড় গ্রুপগুলো। সূত্র জানায়, সরকার চালের দাম কমাতে আমদানি শুল্কমুক্ত করলেও চালের দাম বাড়ছে। সরকারের শুল্কমুক্তের কোনো প্রভাবই বাজারে নেই। এমরবি নতুন চাল বাজারে আসতে শুরু করলেও দাম কমছে না। চালের বাজার স্বাভাবিক না হলে নিম্নবিত্তদের বেঁচে থাকাই কষ্ট হবে। মূলত চালের দাম বৃদ্ধির প্রধান দুটি কারণ, ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেট ও বাজার মনিটরিংয়ের অভাব। অতি মুনাফার জন্য ব্যবসায়ীরা চালের দাম বাড়িয়ে থাকে। আর সরকার দাম কমালেও ব্যবসায়ীরা বেশি দামে কেনার অজুহাত দেখায়। ফলে চালের দাম আর কমে না। আসল কথঅ বাজার মনিটরিংয়ের অভাব থাকলে পণ্যমূল্য কমবে না। সরকার নিয়মিত তদারকির মাধ্যমে দাম কমাতে পারে। কিন্তু নিয়মিত তদারকির অভাবে সরকারের শুল্ক প্রত্যাহারের সুফল পাচ্ছে না সাধারণ মানুষ। এদিকে সম্প্রতি খাদ্য উপদেষ্টা আলী ইমাম মজুমদার জানিয়েছেন, চলতি মৌসুমে আমনের বাম্পার ফলন হয়েছে। এবার সাড়ে পাঁচ লাখ টন ধান সংগ্রহ করা হবে। পাশাপাশি আমদানি হবে দেড় লাখ টন ধান ও গম। এবার আমনের দাম কেজি প্রতি ৩ টাকা বাড়ানো হয়েছে। বাজারে নতুন ধান এলে চালের দাম কমতে শুরু করবে। বর্তমান সরকার খাদ্য নিয়ে কোনো ঝুঁকি নিতে চায় না। তাই দেশের চালের বাজার নিয়ন্ত্রণ ও সরবরাহ বাড়াতে এরই মধ্যে পণ্যটির আমদানি শুল্ক প্রত্যাহার করা হয়েছে। এর প্রভাবও পড়বে দামে। এবার বন্যায় ফেনী, কুমিল্লা ও চট্টগ্রামে আমন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এরপরও লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে সর্বোচ্চ চেষ্টা করা হবে।