এফএনএস এক্সক্লুসিভ: শুল্কমুক্ত সুবিধায় হাজার হাজার টন চাল আমদানিতেও বাজারে এর কোনো ইতিবাচক প্রভাব পড়েনি। অটো রাইস মিল মালিক ও ধান ব্যবসায়ীদের দাবি— চলতি মৌসুমে ধানের দাম বেশি হওয়ায় কমছে না চালের দাম। আর আমদানিকারকদের মতে, ভারতেও চালের দাম বেশি। যে কারণে আমদানীকৃত চাল কম দামে বাজারে বিক্রি করা সম্ভব হচ্ছে না। চাল ব্যবসায়ী ও আমদানিকারকদের সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়। সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, এক মাসে ভারত থেকে বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে শুল্কমুক্ত সুবিধায় সাড়ে চার হাজার টন চাল আমদানি করা হয়েছে। বরং বাজারে চালের দাম কমার পরিবর্তে কেজিপ্রতি উল্টো ১—২ টাকা বেড়েছে। বিগত ১৭ নভেম্বর থেকে ১৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে সাড়ে চার হাজার টন চাল আমদানি হয়েছে। যদিও ৩ লাখ ৯২ হাজার টন চাল আমদানির অনুমোদন দেয়া হয়। আটটি আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান ওই বন্দর দিয়ে ওসব চাল আমদানি করেছে। এর আগে বেসরকারিভাবে ৯২টি প্রতিষ্ঠানকে ২ লাখ ৭৩ হাজার টন সেদ্ধ চাল ও ১ লাখ ১৯ হাজার টন আতপ চাল আমদানির অনুমতি দেয়া হয়। আমদানীকৃত চাল বাজারজাত করার জন্য সরকার মাত্র ২৫ দিন সময় নির্ধারণ করে দেয়। এ স্বল্প সময়ের মধ্যে অনেক প্রতিষ্ঠান আমদানি করতে পারেনি। তাই পরবর্তী সময়ে ১৫ জানুয়ারি পর্যন্ত সময় বৃদ্ধি করা হয়। সূত্র জানায়, ভারত থেকে ধীরগতিতে চাল আমদানি হচ্ছে। সরকার ৩ লাখ ৯২ হাজার টন চাল আমদানির প্রথমে ১৭ নভেম্বর থেকে ১২ ডিসেম্বর পর্যন্ত মাত্র ২৩ দিন সময় বেঁধে দেয়। পরে ১৫ জানুয়ারি পর্যন্ত সময় বাড়ানো হয়। তবে পর্যাপ্ত পরিমাণে চাল আমদানি করা গেলে শিগগিরই হয়তো চালের দাম কমে আসবে। চলতি মৌসুমে যশোর অঞ্চলে ২১ হাজার ৪৭০ হেক্টর জমিতে আমন চাষ হয়েছে, যা মণপ্রতি ১৩৫০—১৪৫০ টাকায় বিক্রি করছে কৃষক। বর্তমানে বাজারে মোটা চাল ৫২ টাকা, হীরা ৪৮, ঊনপঞ্চাশ ৫৬, আঠাশ ৫৮—৬০, মিনিকেট ৬৪—৬৮, তেষট্টি ৬৮—৭০, বাসমতী ৮০—৮৬ এবং নাজিরশাইল ৮০ টাকা কেজি দরে পাইকারি বিক্রি হচ্ছে। আর খুচরা বাজারে সব ধরনের চাল ২—৩ টাকা বেশিতে বিক্রি হচ্ছে। আমদানি করা মোটা চাল বন্দর থেকে পাইকারি বিক্রি হচ্ছে কেজিপ্রতি ৫২—৫৩ টাকায়। ওই চাল পাইকাররা ৫৪ টাকায় বিক্রি করছেন। আর খুচরা বিক্রি হচ্ছে ৫৬ টাকায়। সূত্র আরো জানায়, বেশির ভাগ মিল মালিক এখনো ধান কিনতে পারেননি। কোনো কোনো মিল মালিক অন্য জেলা থেকে ৩২—৩৪ টাকা কেজি দরে ধান কিনছেন। আর ওসব ধান থেকে চাল প্রস্তুত করতে দাম পড়ছে ৫২ টাকা। এদিকে ভারত থেকে চাল আমদানি প্রসঙ্গে বেনাপোল কাস্টম হাউজের অতিরিক্ত কমিশনার এইচএম শরিফুল হাসান জানান, শুল্কমুক্ত সুবিধায় বেনাপোল বন্দরে টনপ্রতি ৪১০ ডলারে চাল আমদানি হচ্ছে। ১৭ নভেম্বর থেকে ১৭ ডিসেম্বর এক মাসে ৪ হাজার ৫০০ টন চাল আমদানি হয়েছে। আর কাস্টমসের সব কার্যক্রম দ্রুততার সঙ্গে সম্পন্ন করা হয়েছে।