এফএনএস: বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে গুমের সংশ্লিষ্টতার তদন্তকে স্বাগত জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের নিয়মিত ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান প্রধান উপমুখপাত্র বেদান্ত প্যাটেল। সাংবাদিক প্রশ্ন করেন বাংলাদেশের গুম কমিশনের তদন্তের বিষয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে সংবাদমাধ্যম নিউইয়র্ক টাইমস। এতে শেখ হাসিনার সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ মিলছে। এর আগে যুক্তরাষ্ট্র গুমের সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। এ ব্যাপারে আপনার কোনো মন্তব্য আছে কি না। জবাবে প্যাটেল বলেন, গত দুই দশকে শত শত মানুষের গুমের খবরে আমরা উদ্বিগ্ন। জোরপূর্বক গুমের ঘটনা একটি গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘন। এতে ভুক্তভোগীরা অনির্দিষ্ট সময়ের জন্য ট্রমার ভেতর দিয়ে পার করেন। পরিবারগুলোকে ট্রমার ওপর দিয়ে যেতে হয়। তিনি বলেন, আমরা অন্তর্বতীর্ সরকারের এই অপরাধের তদন্তের প্রচেষ্টাকে স্বাগত জানাই। এ ছাড়া আমরা ভুক্তভোগী ও তাদের পরিবারের সদস্যদের জন্য ন্যায়বিচার প্রদানের জন্য ন্যায্য ও স্বচ্ছ প্রক্রিয়াকে উৎসাহিত করি। এদিকে বাংলাদেশের আগামী সংসদ নির্বাচন নিয়ে অন্তর্বতীর্কালীন সরকারের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। পুরো প্রক্রিয়া পর্যবেক্ষণের পাশাপাশি আইনের শাসন ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় উৎসাহ প্রদান করবে তারা। মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নিয়মিত প্রেস ব্রিফিংয়ে স্থানীয় সময় গত বুধবার এসব কথা বলেছেন উপ—মুখপাত্র বেদান্ত প্যাটেল। মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইট থেকে এসব তথ্য জানা গেছে। ব্রিফিংয়ের এক পর্যায়ে বাংলাদেশ প্রসঙ্গ উঠে আসে। ২০২৫ সালের শেষ দিকে বা ২০২৬ সালের শুরুর দিকে বাংলাদেশে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে পারে বলে দেশটির অন্তর্বতীর্কালীন সরকার ঘোষণা দিয়েছে। এই তথ্য তুলে ধরে প্রশ্নকর্তা দেশটির নির্বাচন নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান জানতে চান। জবাবে প্যাটেল বলেন, বাংলাদেশে নিরপেক্ষ ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের পক্ষে রয়েছে মার্কিন প্রশাসন। তিনি আরও বলেন, দেশটির অন্তর্বতীর্কালীন সরকার নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে। এই পদক্ষেপকে যুক্তরাষ্ট্র স্বাগত জানায়। নির্বাচনের ফলে জনগণ তাদের সরকার নির্বাচনের সুযোগ পাবে। মার্কিন প্রশাসন পুরো প্রক্রিয়া পর্যবেক্ষণ করবে এবং আইনের শাসন ও গণতান্ত্রিক নীতির প্রতি শ্রদ্ধা নিশ্চিত করতে উৎসাহিত করবে। প্যাটেল বলেন, বাংলাদেশের একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন দেখতে চায় যুক্তরাষ্ট্র, যা শান্তিপূর্ণভাবে পরিচালিত হবে। সমগ্র বিশ্বের জন্যই গণতন্ত্র চায় মার্কিন প্রশাসন। এরপর বাংলাদেশে গুম বিষয়ক কমিশনের অন্তর্বতীর্ প্রতিবেদনের ভিত্তিতে মার্কিন সংবাদমাধ্যম দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমসে প্রকাশিত একটি সংবাদ নিয়ে প্রশ্ন করেন ওই ব্যক্তি। প্রতিবেদনের বরাতে তিনি বলেন, গত দুই দশকে বাংলাদেশে শত শত ব্যক্তি গুমের শিকার হয়েছেন বলে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। ওই অপরাধের সঙ্গে দেশটির সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জড়িত ছিলেন বলে অভিযোগ রয়েছে। এ বিষয়ে প্যাটেলের বক্তব্য জানতে চান প্রশ্নকর্তা। এর জবাবে প্যাটেল বলেন, বলপূর্বক গুম করা মানবাধিকারের মারাত্মক লঙ্ঘন। গুমের শিকার ব্যক্তির সঙ্গে তার পরিবার সদস্যরাও মারাত্মভাবে এর ভুক্তভোগী হয়ে থাকেন। কেননা গুমের কারণে এক দীর্ঘস্থায়ী অনিশ্চয়তা তৈরি হয়। গুমের ঘটনাগুলো নিয়ে অন্তর্বতীর্কালীন সরকারের তদন্ত প্রচেষ্টাকে স্বাগত জানিয়ে প্যাটেল বলেছেন, অপরাধীদের বিচারের আওতায় আনতে একটি ন্যায়সংগত ও স্বচ্ছ প্রক্রিয়া নিশ্চিত করার আহ্বান জানাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। উল্লেখ্য, এর আগে বাংলাদেশে জোরপূর্বক গুমের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিল যুক্তরাষ্ট্র।