এফএনএস স্পোর্টস: রানের খাতা তখনও খোলেননি হযরতউলাহ জাজাই। ইনিংসের কেবল তৃতীয় বল। ওই সময়ই ফিরে যেতে পারতেন আফগানিস্তান ওপেনার। কিন্তু প্রথম টি-টোয়েন্টির নায়ক নাসুম আহমেদ হেলায় নষ্ট করলেন সুবর্ণ সুযোগ। হাত ফসকে বেরিয়ে গেলো সহজ ক্যাচ। ব্যস, ওখানেই শেষটা টানা হয়ে যায় বাংলাদেশের! কারণ ওই জাজাই-ই পরবর্তীতে ছড়ি ঘুরিয়ে হারের হতাশায় ডুবিয়েছেন লাল-সবুজ জার্সিধারীদের। গতকাল শনিবার সিরিজের দ্বিতীয় ও শেষ টি-টোয়েন্টি ৮ উইকেটে হেরেছে বাংলাদেশ। জীবন পেয়ে দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ে অপরাজিত হাফসেঞ্চুরিতে আফগানিস্তানের জয় নিশ্চিত করে মাঠ ছেড়েছেন জাজাই। তার ক্যাচ মিসে ম্যাচ হারানো বাংলাদেশ সিরিজও জিততে পারেনি। দুই দল একটি করে ম্যাচ জেতায় দুই ম্যাচের সিরিজ শেষ হলো ১-১ সমতায়। স্কোরবোর্ডে রান বেশি তুলতে পারেনি। তাই বোলিংটা দুর্দান্ত হওয়ার দরকার ছিল বাংলাদেশের। শুরুর ঝলক আশাজাগানিয়া হলেও আফগানিস্তানকে চেপে ধরতে পারেনি। ফলে দারুণ ব্যাটিংয়ে লক্ষ্যের পথে এগিয়ে চলেছে সফরকারীরা। যদিও তাতে আছে ভাগ্য ও বাংলাদেশের ‘সাহায্যের’ ছোঁয়া! শুরুতেই উইকেট পেতে পারতো বাংলাদেশ। কিন্তু হযরতউলাহ জাজাইয়ের ক্যাচটি ছেড়ে দেন বোলার নাসুম আহমেদ। এই ব্যাটারই বাংলাদেশকে ভোগালো সবচেয়ে বেশি। জীবন পেয়ে ঝড়ো ব্যাটিংয়ে হাফসেঞ্চুরি পূরণ করে দলকে জয়ের পথে রাখেন। শুধু তার ক্যাচটি নয়, বাংলাদেশের ফিল্ডাররা ছেড়েছেন আরও অন্তত তিনটি ক্যাচ। দলের সেরা ফিল্ডার হিসেবে যাকে বিবেচনা করা হয়, সেই আফিফ হোসেনও ছেড়েছেন সহজ ক্যাচ! টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় দুশ্চিন্তা ব্যাটিং। প্রথম টি-টোয়েন্টিতে দেড়শ ছাড়ানো স্কোর এসেছিল, তবে সেখান থেকে লিটন দাসের ইনিংসটি বাদ দিলে একই দৃশ্য ফুটে উঠবে। গতকাল শনিবার দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতেও ব্যাটারদের ব্যর্থতা আরও স্পষ্ট হলে ধরা দিলো। আফগানিস্তান বোলারদের সামনে কঠিন পরীক্ষা দেওয়া বাংলাদেশ নির্ধারিত ২০ ওভারে ৯ উইকেটে করেছে ১১৫ রান। প্রথম টি-টোয়েন্টিতে সহজ জয় এসেছে। দুই ম্যাচের সিরিজ হওয়ায় শেষ টি-টোয়েন্টি জিতলেই সিরিজ নিশ্চিত হবে বাংলাদেশের। মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে সেই লক্ষ্যে টস জিতে শুরুতে ব্যাটিং নিলেও সুবিধা করতে পারেনি স্বাগতিকরা। টপ অর্ডার ভেঙে পড়ায় বিপদে পড়ে। পরে মুশফিকুর রহিম ও মাহমুদউলাহ জুটি বাঁধলে ১০০ ছাড়ায় স্কোর। শুরু থেকেই ধুঁকেছেন স্বাগতিক ব্যাটাররা। চার মেরেই আউট মুনিম শাহরিয়ার (৪)। আগের ম্যাচে হাফসেঞ্চুরি করা লিটন দাসও (১৩) টিকতে পারলেন না বেশিক্ষণ। ভুল বোঝাবুঝিতে রান আউট হলেন নাঈম শেখ (১৩)। এরপর অহেতুক শট খেলে উইকেট বিলিয়ে আসেন সাকিব আল হাসান (৯)। ফলে ধসে পড়ে বাংলাদেশের টপ অর্ডার। দ্রুত ৪ উইকেট হারিয়ে ধুঁকতে থাকা বাংলাদেশকে টেনে তোলেন মুশফিক ও মাহমুদউলাহ। বিপদের সময় দায়িত্বশীল ব্যাটিংয়ে ইনিংস মেরামতের কাজে লেগে পড়েন দুই অভিজ্ঞ ব্যাটার। তবে দারুণ ইনিংসের ইঙ্গিত দিয়েও বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি মাহমুদউলাহ। ১৪ বলে ৩ বাউন্ডারিতে করেন ২১ রান। সঙ্গীকে হারিয়ে মুশফিকও পথ হারান। শততম টি-টোয়েন্টিতে খেলতে নেমে ২৫ বলে ৪ বাউন্ডারিতে ৩০ রান করে বিদায় নেন তিনি। এরপর আফিফ হোসেনের ৭, মোস্তাফিজুর রহমানের ৬* ও নাসুম আহমেদের ৫* রানে ১১৫ রানে শেষ হয় বাংলাদেশের স্কোর। আফগানিস্তানের সবচেয়ে সফল বোলার ফজলহক ফারুকী। এই পেসার ৪ ওভারে মাত্র ১৮ রান দিয়ে নেন ৩ উইকেট। তার সমান ৩ উইকেট নিতে আজমতউলাহ ৪ ওভারে দিয়েছেন ২২ রান। এ ছাড়া রশিদ খান ও মোহাম্মদ নবি নিয়েছেন একটি করে উইকেট।