এফএনএস স্পোর্টস: রহমতউলাহ গুরবাজের দুর্দান্ত এক সেঞ্চুরিতে বাংলাদেশকে ৭ উইকেটে হারিয়েছে আফগানিস্তান। বাংলাদেশের ১৯৩ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে গুরবাজের অপরাজিত ১০৬ রানের ইনিংসে ৫৯ বল হাতে রেখেই জয়ের বন্দরে নোঙর করে আফগানরা। তৃতীয় ওয়ানডেতে হারলেও প্রথম দুটি ম্যাচ জিতে আগেই সিরিজ নিশ্চিত করেছিল বাংলাদেশ। ইনিংসের ৩৯তম ওভারের খেলা চলছে তখন। জয়ের জন্য আর মাত্র ১০ রান দরকার আফগানদের। মেহেদি হাসান মিরাজের করা ওভারের প্রথম বলে কভারের দিকে ঠেলে দুই দুই রান নিয়ে ছুঁয়ে ফেললেন তিন অংকের ম্যাজিক ফিগার। ওয়ানডেতে এটি গুরবাজের তৃতীয় শতক, নেই কোনো অর্ধশতক। অর্থাৎ যে তিনবার অর্ধশতক ছুঁয়েছেন তিনবারই অর্ধশতককে শতকে রুপ দিয়েছেন। ১৯৩ রানের জয়ের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে দুর্দান্ত শুরু করেন দুই আফগান ওপেনার রিয়াজ হাসান এবং রহমতউলাহ গুরবাজ। তাসকিন-সাকিবদের বেশ ভালোভাবেই সামলেছেন এই দুই ওপেনার। ইনিংসের ১০ ওভারের দ্বিতীয় বলেই এই জুটির অর্ধশতক পূর্ণ হয়। দুই আফগান ব্যাটারের সামনে অসহায়ই মনে হচ্ছিল বাংলাদেশের বোলারদের। কিছুতেই ভাঙতে পারছিল না উদ্বোধনী জুটি। অপেক্ষার পালা শেষ হয় ১৬তম ওভারে এসে। সাকিব আল হাসানের করা ওই ওভারের তৃতীয় বলে রিয়াজ হাসান স্ট্যাম্পিং হয়ে ফেরেন। এতেই ভাঙে জুটি। সাকিবের বল খেলতে না পারলে বল চলে যায় মুশফিকের হাতে। আর বল ধরেই সঙ্গে সঙ্গে স্ট্যাম্পিং করলেন মুশফিক। এতেই ভাঙল উদ্বোধনী জুটি। ৪৯ বলে ৩৫ রান করে ফিরলেন রিয়াজ। এরপর ১৮তম ওভারের সাকিবের করা শেষ বলে তিন রান নিয়ে অর্ধশতক পূর্ণ করেন গুরবাজ। ৫৩ বলে অর্ধশতক ছুঁয়ে ফেলেন এই ব্যাটার। উদ্বোধনী জুটি শতরানের দেখা না পেলেও দ্বিতীয় উইকেটে রহমত শাহর সঙ্গে শতরানের জুটি গড়েন রহমতউলাহ গুরবাজ। ১২৩ বলে ১০০ রানের জুটি গড়েন এই দুই ব্যাটার। ৩৬তম ওভারে মেহেদি হাসান মিরাজের বল ক্রিজ ছেড়ে খেলতে গিয়ে পরাস্ত হন রহমত শাহ। আর উইকেটের পেছনে থাকা মুশফিক সহজেই তাকে স্ট্যাম্পিং করেন। অর্ধশতক থেকে মাত্র ৩ রান দূরে থাকতে আউট হন রহমত শাহ। দলীয় ১৭৯ রানে দ্বিতীয় উইকেট হারায় আফগানরা। এরপর মাত্র দুই রান যোগ করে ফেরেন হাসমতউলাহ শহিদী। ১৮৩ রানে তৃতীয় উইকেটের পতন ঘটে আফগানদের। এরপর আর কোনো উইকেট না হারিয়ে ৫৯ বল হাতে রেখে ৭ উইকেটের জয় নিশ্চিত করে সফরকারিরা। গুরবাজ ১১০ বলে ১০৬ এবং নাজিবুলাহ জাদরান ৮ বলে ১ রানে অপরাজিত থাকেন। বাংলাদেশের হয়ে দুটি উইকেট নেন মেহেদি হাসান মিরাজ আর একটি উইকেট নেন সাকিব আল হাসান। এর আগে টস জিতে ব্যাট করতে নেমে লিটন দাসের ৮৬ রানে ওপর ভর করে বাংলাদেশ ৪৬.৫ ওভারে ১৯২ রানে অলআউট হয়। সংক্ষিপ্ত স্কোরকার্ড : বাংলাদেশ: ৪৬.৫ ওভার; ১৯২/১০; (তামিম ১১, লিটন ৮৬, সাকিব ৩০, মুশফিক ৭, ইয়াসির ১, মাহমুদউলাহ ২৯*, মিরাজ ৬, তাসকিন ০, শরিফুল ৭, মোস্তাফিজ ১); (ফজলহক ৭.৫-০-৩৩-১, মুজিব ৮-০-৩৭-০, আজমতউলাহ ৬-০-২৯-১, গুলবাদিন ৬-০-২৫-০, রশিদ ১০-৩৭-৩, নবী ১০-০-২৯-২)। আফগানিস্তান: ৪০.১ ওভার; ১৯৩/৩; (গুরবাজ ১০৬*, রিয়াজ ৩৫, রহমত ৪৭, হাসমতউলাহ ৭, নাজিবুলাহ ১*); (শরিফুল ৭-১-৪১-০, তাসকিন ৬-০-৩৪-০, সাকিব ১০-৪৭-১, মোস্তাফিজ ৬-০-২৪-০, মিরাজ ৮.১-১-৩৭-২, আফিফ ২-০-৮-০, ইয়াসির ১-০-২-০)। ফলাফল: আফগানিস্তান ৫৯ বল হাতে রেখে ৭ উইকেটে জয়ী।