বিশেষ প্রতিনিধি \ বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিম উপকূলীয় অঞ্চলের কৃষিপ্রতিবেশবিদ্যা শিখন কেন্দ্রের চর্চাকারীদের নিয়ে একটি অভিজ্ঞতা বিনিময় সফর অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল সোমবার সকাল ১০টা থেকে শ্যামনগর উপজেলার ৬টি ইউনিয়নের মোট ১৬টি কৃষিপ্রতিবেশবিদ্যা শিখন কেন্দ্রের চর্চাকারীরা এবং যুব স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন সুন্দরবন স্টুডেন্টস সলিডারিটি টিমের প্রতিনিধিরা এই আয়োজনে অংশ নেন। সফরকারীরা মথুরাপুর, পানখালী, শ্রীফলকাটি ও ধুমঘাট গ্রামের মোট ৪টি কৃষিপ্রতিবেশবিদ্যা শিখন কেন্দ্র পরিদর্শন করেন। এ সময় তারা বিভিন্ন অঞ্চলের টেকসই কৃষি চর্চা, মাটির স্বাস্থ্য রক্ষা, অভিযোজিত চর্চা এবং প্রতিবেশবান্ধব পদ্ধতির বাস্তব প্রয়োগ সরেজমিনে দেখেন। অংশগ্রহণকারীরা নিজেদের অভিজ্ঞতা ও শেখার বিষয়গুলো একে অপরের সাথে ভাগ করে নেন, যা ভবিষ্যতের কৃষি চর্চায় ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে বলে আশা করা হচ্ছে। স্থানীয় কৃষকদের দক্ষতা উন্নয়ন এর জন্য অত্র অঞ্চলের কৃষক-কৃষাণীদের আয়োজনে এবং বেসরকারি উন্নয়ন ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান বারসিক এর কারিগরি সহায়তায় এই অভিজ্ঞতা সফরে নেতৃত্ব দেন শ্রীফলকাটি কৃষিপ্রতিবেশবিদ্যা শিখন কেন্দ্রের তত্ত¡বধায়ক গোবিন্দ মন্ডল ও বারসিকের কর্মসূচী কর্মকর্তা বিশ্বজিৎ মন্ডল। অনুষ্ঠানে উপস্থিত অংশগ্রহনকারীরা অভিজ্ঞতা বিনিময়ের এই উদ্যোগকে স্বাগত জানান এবং ভবিষ্যতেও এ ধরনের কার্যক্রম চলমান রাখার আহ্বান জানান। সবকটি কৃষিপ্রতিবেশবিদ্যা শিখন কেন্দ্র পরিদর্শন শেষে শাপলা নারী উন্নয়ন সংগঠনের নিজস্ব কার্যালয়ে একটি মতবিনিময় সভার আয়োজন করা হয়। মতবিনিময় সভায় নিজেদের অর্জিত অভিজ্ঞতার আলোকে বক্তব্য রাখেন আব্দুল হাকিম, সরমা রানী, কেরামত আলী, দেলোয়ারা বেগম, মিতা রানী মন্ডল, কনিকা রানী, সাইদুল ইসলাম, পবিত্র মন্ডল প্রমুখ। মতবিনিময় সভা শেষে ধুমঘাট কৃষিপ্রতিবেশবিদ্যা শিখন কেন্দ্রের চর্চাকারী ও জাতীয় কৃষি পদকপ্রাপ্ত কৃষাণী অল্পনা রাণী মিস্ত্রির তত্ত্বাবধানে তার বাড়ীতে উৎপাদিত সবজি দিয়ে দুপুরের খাবারের আয়োজন করেন। প্রায় ৩০ জন অংশগ্রহণকারী ঐতিহ্যবাহী ও স্থানীয় খাবারের এ আয়োজনে অংশ নেন। মেনুতে ছিল থানকুনি পাতা ভর্তা, স্থানীয় জাতের পুটি মাছের ঝোল, কলার মোচা ভাজা, পাঁচ প্রকার অচাষকৃত শাক ভাজা, শুকনো বিটকটি, মুলা ও গাজর ভাজা, সরিষা দিয়ে রুই মাছ রান্না, দেশি মুরগির মাংস, কাঁচা আমের চাটনি ও ডাল। আয়োজকরা জানান, এই ধরনের সফর কৃষকদের আত্মবিশ্বাস বাড়ায় এবং জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় সহনশীল কৃষি চর্চা বিস্তারে বড় ভূমিকা রাখে।