সোমবার, ২৪ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ০১:২২ পূর্বাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম ::
সাতক্ষীরা সদর উপজেলা শিক্ষক সমিতির নব নির্বাচিত কমিটির অভিষেক জেলা প্রশাসক কাপ টি—২০ ক্রিকেট টুর্নামেন্ট ২য় খেলায় দক্ষিন পারুলিয়া স্পোটিং ক্লাব জয়ী খুলনায় তারুণ্যের ক্রিড়া উৎসব উদ্বোধন খুলনায় ১০ কেজি গাঁজাসহ আটক ৪ জন দিনবদলের প্রচেষ্টায় শ্যামনগরের উপকূলীয় কৃষকরা ঝুকছে তরমুজ চাষে গ্রাম ডাক্তার কল্যাণ সমিতি সাতক্ষীরা পৌর শাখার নতুন কমিটির অভিষেক খুলনা বিভাগের পাঁচ অদম্য নারীর সম্মাননা প্রদান ডুমুরিয়ায় মিমপেক্স এগ্রোকেমিক্যালস্ লিমিটেড রিটেইলারদের সমাবেশ বিষ্ণুপুর চৌমুহনী মাদ্রাসায় দাখিল পরীক্ষার্থীদের বিদায় সংবর্ধনা জেলা বিএনপি’র সমাবেশ সফল করার লক্ষ্যে কলারোয়ায় বিএনপি’র প্রস্তুতি সভা

শ্যামনগরে জামায়াতে ইসলামীর কর্মী সম্মেলনে কেন্দ্রীয় সহকারি সেক্রেটারি রফিকুল ইসলাম খান বাংলাদেশের মাটিতে আর ফ্যাসিবাদ সৃষ্টি হতে দেবে না জনগণ

দৃষ্টিপাত ডেস্ক :
  • আপডেট সময় সোমবার, ২৪ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫

এসএম জাকির হোসেন ও এম. আসাদ শ্যামনগর থেকে \ সাতক্ষীরা’র শ্যামনগর উপজেলায় দীর্ঘ ১৭ বছর পর বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কর্মী সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল সোমবার বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী উপজেলা শাখার আয়োজনে নকিপুর সরকারি হরিচরণ পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয় মাঠে জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয়, বিভাগীয়, জেলা, উপজেলা, ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড পর্যায়ের বিভিন্ন নেতৃবৃন্দ ও সর্বস্তরের হাজার হাজার মানুষ সহ মা বোনদের উপস্থিতিতে প্রথম পর্বে সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১১টা পর্যন্ত চলে মহিলা কর্মী সম্মেলন। হাজার হাজার মহিলা কর্মীরা পাইলট স্কুল মাঠে উপস্থিত হয়। বিকাল ২টা থেকে শুরু হয় পুরুষকর্মীদের সম্মেলন। উহা চলে বিকাল সাড়ে চারটা পর্যন্ত। বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ উপজেলার প্রতিটি ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড থেকে শত শত নেতা কর্মী গাড়ি বহরে খন্ড খন্ড মিছিল নিয়ে মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয় মাঠে উপস্থিত হয়। মাঠটি অল্প সময়ের মধ্যে পরিপূর্ণ হয়ে ওঠে। উক্ত সম্মেলনে পবিত্র কোরআন তেলাওয়াতের মাধ্যমে উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর আমীর মাওঃ আব্দুর রহমান এর সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারি মাওঃ গোলাম মোস্তফা এর সঞ্চালনায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখবেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান। এ সময় তিনি বলেন, দীর্ঘ ১৬ বছর শুধু শ্যামনগরের মানুষ নয়, সারা দেশের মানুষ কথা বলতে পারতো না, জামায়াত ইসলামের তিনজন মানুষ এক জায়গায় কথা বললে পুলিশ ধরে নিয়ে যেত, এরপর রিমান্ডে নিয়ে চলতো নির্যাতন। ফ্যাসিবাদী আওয়ামী লীগ সরকার ছাত্রশিবিরের নেতাকর্মীদের হত্যা করে ইসলামী আন্দোলনকে নির্মূল করতে পারেনি। আওয়ামী লীগ সরকার মানুষের ভোটের অধিকার কেড়ে নিয়েছিল, দিনের ভোট রাতে করেছিল। জামায়াত ইসলামের আমির মাওঃ মতিউর রহমান নিজামী সহ ১১ জন নেতা কর্মীকে মিথ্যা মামলা জড়িয়ে জেলখানায় ও ফাঁসিতে মৃত্যুবরণ ঘটিয়েছে। এছাড়া সারা দেশে জামায়াত ইসলামের হাজার হাজার নেতাকর্মীকে খুন, গুম ও পঙ্গু করে দিয়েছে। ইসলামকে নির্মূল করতে গিয়ে শাপলা চত্বরে গুলি চালিয়ে বহু আলমকে হত্যা করেছে। তারা জামায়াতের নেতাকর্মীকে হত্যা করে দেশ থেকে জামায়েত ইসলামীকে নির্মূল করতে চেয়েছিল। জামায়েত নেতৃবৃন্দের বিরুদ্ধে যারা মিথ্যে মামলা, সাক্ষী ও বিচার করেছিল তাদেরকে বিচারের আওতায় আনতে হবে। ভারত থেকে ফেসবুকের মাধ্যমে শেখ হাসিনা উস্কানি দিচ্ছে। বাংলাদেশের মাটিতে আর কোনদিন ফ্যাসিবাদের সৃষ্টি হতে দেবে না বাংলার জনগণ। প্রধান উপদেষ্টা ডক্টর ইউনুস এর উদ্দেশ্যে তিনি বলেন নির্বাচনের জন্য যা সংস্কার করা দরকার সংস্কার করে নির্বাচন দিন। সরকারের ভিতরে ও বাইরে যারা ফ্যাসিবাদের দোসর লুকিয়ে আছে তাদেরকে চিহ্নিত করে বিচার করতে হবে। বাংলাদেশের মাটিতে আর ফ্যাসিবাদের উত্থান হতে দেয়া হবে না। ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর নির্বাচনের নামের ষড়যন্ত্র করে শেখ হাসিনার সরকার গঠন করেছিল। সেই প্রহসনের নির্বাচন ছিল মইনুদ্দিন—ফখরুদ্দিন ও ভারতীয় “র’ পাতানো নির্বাচন। আজকের এই কর্মী সম্মেলন থেকে আমরা অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে অনুরোধ জানাবো শাপলা চত্বরে হত্যাকান্ডের সাথে জড়িতদের বিচার করতে হবে। বিডিআর হত্যাকাণ্ডে প্রকৃত খুনিরা আড়ালে আড়ালে রয়ে গেছে। ওই ঘটনার প্রকৃত খুনিদের চিহ্নিত করে তাদের বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করাতে হবে। জুলাই বিপ্লবে দুই হাজারের বেশি মানুষকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। এই হত্যাকাণ্ডের দায়ে ইতিমধ্যে শেখ হাসিনাসহ দোষীদের ট্রাইব্যুনালে বিচার শুরু হয়েছে। বিচারের রায় অবিলম্বে ঘোষণা করতে হবে। শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে এনে সকল দোষীদের ফাঁসির কাষ্ঠে ঝুলিয়ে বিচারের রায় কার্যকর করতে হবে। তিনি অন্তর্বর্তী সরকার প্রধানকে উদ্দেশ্য করে বলেন, জামায়াত নেতা এটিএম আজহারুল ইসলাম এখনো জেলে আছে। অবিলম্বে তাকে মুক্তি দিতে হবে। এই দাবি শুধু জামায়াতের নয় বাংলাদেশের মুক্তিকামি ১৮ কোটি মানুষের দাবি। তিনি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, অবিলম্বে এটিএম আযহারুল ইসলামকে মুক্তি না দিলে আপনারা ক্ষমতায় থাকতে পারবেন না। দেশে যেনতেন কোন নির্বাচন মানুষ মানবে না। দীর্ঘ ২৩ /২৪ বছর মানুষ ভোট দিতে পারেনি। আবু সাঈদ ও মুগ্ধরা মানুষের ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য জীবন দিয়েছে। একটি নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে যতটুকু সংস্কার করার দরকার সেটুকু করে একটি ফ্রী ফেয়ার গ্রহণযোগ্য নির্বাচন দিতে হবে। আওয়ামী লীগ সরকারের করা ভোটার তালিকা থেকে ২কোটি ভুয়া ভোটার বাদ দিতে হবে। জামায়াতে ইসলামী বর্তমান বাংলাদেশে সবচেয়ে সুশৃঙ্খল ও সুগঠিত রাজনৈতিক শক্তি হিসেবে জনগণের আস্থার প্রতীক হিসেবে আজ দাঁড়িয়ে গেছে। জামায়াতকে যদি মানুষ রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব দেয় তাহলে আমরা রাজা হবো না দেশের মানুষের সেবক হবো। এসময় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন জামায়াত ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য অধ্যক্ষ ইজ্জত উল্যাহ, কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সেক্রেটারী ও পরিচালক, খুলনা অঞ্চল মুহাদ্দিস আব্দুল খালেক, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ড. মাওঃ খলিলুর রহমান মাদানী, সাবেক জাতীয় সংসদ সদস্য গাজী নজরুল ইসলাম, টিম সদস্য খুলনা অঞ্চল মুহাদ্দিস হাফেজ রবিউল বাশার, সাতক্ষীরা জেলা আমীর অধ্যাপক শহিদুল ইসলাম মুকুল, নায়েবে আমীর শেখ নুরুল হুদা, ডাঃ মাহমুদুল হক, সেক্রেটারী মাওঃ আজিজুর রহমান, জেলা শিক্ষক ফেডারেশনের সভাপতি অধ্যাপক আব্দুল জলিল সহ বিভিন্ন পর্যায়ের দায়িত্বশীল নেতৃবৃন্দ।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর
© All rights reserved © 2013-2022 dainikdristipat.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com