এস এম জাকির হোসেন শ্যামনগর থেকেঃ সাতক্ষীরা’র শ্যামনগর উপজেলায় বিএনপির দু’গ্রুপ একই স্থানে কর্মসূচি আহ্বান করার হামলা,পাল্টা হামলা,হাঙ্গামা,ভাংচুর,রক্তপাত সহ রণক্ষেএে পরিণত হয়েছে শ্যামনগর।উদভুত পরিস্থিতিতে, উত্তেজনাকে ঘিরে ১৪৪ ধারা জারি করেছে উপজেলা প্রশাসন। গতকাল বুধবার বিকেল ৪টা থেকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত শ্যামনগর পৌর এলাকায় এই আদেশ বলবৎ থাকবে বলে জানিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোছাঃ রনী খাতুন। ঘটনা সূত্রে জানাযায়, বুধবার বিকালে উপজেলার এম এম প্লাজা সংলগ্ন কৃষক দলের কার্যালয়ের সামনে উপজেলা ও পৌর বিএন সমাবেশ আহ্বান করে। অন্যদিকে দলটির আরেকটি গ্রুপ একই সময়ে একই স্থানে রাষ্ট্র কাঠামো মেরামতের ৩১ দফা কর্মশালা ও লিফলেট বিতরণের প্রস্তুতি নেয়। এতে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোছাঃ রনী খাতুন এর নেতৃত্বে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভুমি) আব্দুল্লাহ আল রিফাত ও থানা অফিসার ইনচার্জ হুমায়ূন কবির মোল্যা সহ সেনা বাহিনীর সদস্যদের সমন্বয়ে বিএনপির দু গ্রুপের মুখোমুখি অবস্থানকে নিবৃত্ত করতে চেষ্টা করে। তার পরেও বিক্ষুব্ধ নেতাকর্মীরা ইট পাটকেল ছোড়ে এবং মুহুর মুহুর বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকে। এ সময় বিএনপি নেতা মুন্নার বাড়ী হতে মিছিলে ইট নিক্ষেপ করে হামলা করলে ক্ষুদ্ধ নেতা কর্মীরা জেলা বিএনপির সদস্য উপজেলা বিএনপির নেতা এ্যাডঃ আশেক ই এলাহী মুন্নার বাড়ীতে বিএনপি নেতা সোলায়মান কবীরের সমর্থকরা হামলা চালায় এবং ব্যাপক ভাংচুর করে। পরে পুলিশ ও সেনা বাহিনীর সদস্যরা অবস্থান নিয়ে হামলা ভাংচুর বন্ধের পাশাপাশি হামলাকারীদের সরিয়ে দেয়। শ্যামনগর পৌর এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করেন উপজেলা প্রশাসন। জেলা বিএনপির সদস্য এ্যাডঃ আশেক ই এলাহী মুন্না বলেন, উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারন সম্পাদক জি এম সোলায়মান কবীর, যুবদলের আহবায়ক শফিকুল ইসলাম দুলু, নূরনগর বিএনপির সভাপতি গোলাম আলমগীর, বিএনপি নেতা আব্দুল ওহাবের নেতৃত্বে আমার বাড়ীতে ঢুকে ব্যাপক ভাংচুর করে, ইটপাটকেল নিক্ষেপের এক পর্য্যায়ে আমার ছোট শিশুটাকে ও তারা ছাড় দেই নাই, এ বিষয়ে উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি আলহাজ্ব মাষ্টার আব্দুল ওয়াহেদ বলেন, বুধবার বিকালে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান এর নির্দেশনায় ৩১ দফা বাস্তবায়নের লক্ষে লিফলেট বিতরন কর্মসৃচীতে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলাম। কর্মসৃচী চলাকালীন প্রসাশন ১৪৪ ধারা জারী করে আমাদের প্রোগ্রাম শেষ করতে বলে, এদিকে সাবেক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক জি এম সোলায়মান কবীর বলেন, জেলা বিএনপির আহবায়ক ও সদস্য সচিব সম্মিলিত ভাবে শ্যামনগর বিএনপির আহবায়ক ও পৌর বিএনপির কমিটি দিয়েছে, পরে শুধুমাত্র সদস্য সচিব চেয়ারম্যান আব্দুল আলিম একক ভাবে কমিটি বিলুপ্ত ঘোষনা করেছেন। সদস্য সচিব একক ভাবে কমিটি বিলুপ্চেত করতে পারেন না।সদস্য সচিব আব্দুল আলিমের এধরনের সিদ্ধান্ত আমরা মানিনা, তাকে আমরা অবান্চিত ঘোষনা করলাম। উপজেলা ঘোষিত কমিটিকে কেন্দ্র করে কমিটির পক্ষে—বিপক্ষে পাল্টাপাল্টি মিছিল সমাবেশ হয়ে আসছে। এছাড়াও কমিটি গঠনকে কেন্দ্র করে টানা কয়েকদিন ধরে শ্যামনগরে উত্তেজনা বিরাজ করছিল। বিএনপির উপজেলা ও পৌর কমিটি ঘিরে টানা কয়েকদিন ধরেই শ্যামনগরে পক্ষে বিপক্ষে নেতাকর্মীরা বিক্ষোভ সমাবেশ করে। পরে কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের পরামর্শে জেলা আহবায়ক কমিটি, শ্যামনগরে নবঘোষিত উপজেলা বিএনপি ও পৌর বিএনপির কমিটি সহ সকল কমিটি জেলা আহবায়ক কমিটির সদস্য সচিব চেয়ারম্যান আব্দুল আলিম স্বাক্ষরিত দলীয় প্যাডে লিখিত ভাবে বিলুপ্ত ঘোষনা করেন।
পরবর্তীতে বুধবার শান্তি সমাবেশের ঘোষণা দেয় উপজেলা বিএনপি’র সাবেক ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক সোলায়মান কবিরের গ্রুপ। অন্যদিকে রাষ্ট্র কাঠামো মেরামতের কর্মশালা ও লিফলেট বিতরণের ঘোষণা দেয় উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি আলহাজ মাস্টার আব্দুল ওয়াহেদ এর গ্রুপ। এই কর্মসূচি ঘিরে শ্যামনগর পৌর এলাকা জুড়ে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত শ্যামনগরের বিভিন্ন স্থানে বিএনপি’র দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের খবর পাওয়া গেছে। ঘটেছে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া। এতে উভয় গ্রুপের ১৫—২০ জন গুরুতর আহত হয়েছে। তাদের স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোছাঃ রনী খাতুন জানান, বিএনপির দুই গ্রুপের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে শ্যামনগর পৌরসভা এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা মাঠে রয়েছে। কেউ শান্তি নষ্ট করতে চাইলে প্রশাসন কঠিনভাবে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।