এফএনএস: প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেছেন, আমরা কঠিন অবস্থার মধ্যে আছি। এখানে বিভিন্ন ধরনের সংকট আছে। অনেকগুলো সংকট কিন্তু নিরসন করতে হবে রাজনীতিকদের। এই কথা আমি বারবার বলেছি। যদি অনুকূল পরিবেশ রাজনীতিবিদরা তৈরি না করে দেন, তাহলে আমাদের পক্ষে নির্বাচনটা অনুষ্ঠান করা কষ্টসাধ্য হবে। গতকাল বুধবার নির্বাচন ভবনের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত ‘দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন: প্রত্যাশা ও বাস্তবতা’ শীর্ষক বৈঠকে সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। সিইসি বলেন, রাজনীতিকরা যদি অনুকূল পরিবেশ তৈরি করে দেন, তাহলে আমাদের জন্য সহজ হবে। কেউ একজন বলেছেন, আমাদের জন্য ৩০ শতাংশ এবং ৭০ শতাংশ আমাদের জন্য নয়। এই রিয়েলিটি সবাইকে অনুধাবন করতে হবে। নির্বাচন ভালো হবে কি মন্দ হবে, সেজন্য পলিটিক্যাল উইল (রাজনৈতিক ইচ্ছা) থাকতে হবে। পলিটিক্যাল উইলটা পলিটিক্স থেকে আসতে হবে। তিনি বলেন, সমালোচনা করা হচ্ছে যে, নির্বাচন কমিশনার নিজেই নিজের পায়ে কুড়াল মেরেছেন। বিভ্রান্ত করা হচ্ছে, এই নির্বাচন কমিশনার আগে থেকেই মাথানত করে সরকারের সঙ্গে আপোশ করে ফেলেছেন। এটি মোটেও সত্য নয়। বলা হচ্ছে, এই নির্বাচন কমিশন আগেই সরকারের পক্ষ নিয়ে নিয়েছে। দ্যাট ইজ নট ট্রু (এটি সত্য নয়)। আমরা এতটা ভীতু নই। এ সময় মিডিয়াকে সঠিক বক্তব্য তুলে ধরারও আহ্বান জানান সিইসি। সাবেক এই আইন সচিব বলেন, সরকারি দল বলতে আইনে কিছু নেই। আমরা এটি মুখে বলে থাকি। একটি সরকার কিন্তু সব দলের, পুরো দেশকেই প্রতিনিধিত্ব করে। আমরা অত্যন্ত আশ্বস্ত বোধ করছি যে, সরকারের পক্ষ থেকে বারবার বলা হয়েছে, আগামী নির্বাচনটাকে সুষ্ঠু, অংশগ্রহণমূলক করতে হবে। সেই প্রতিশ্রুতি কিন্তু সরকার দিয়েছে। আগে কিন্তু কখনো সরকার সেই প্রতিশ্রুতি দেয়নি। এই প্রথমবারের মতো সরকারই প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। আইমন্ত্রী, তথ্যমন্ত্রী, যোগাযোগমন্ত্রী সরকার শব্দটি বলেছেন। প্রধানমন্ত্রীও স্পষ্টভাবে বেশ কয়েক বার বলেছেন যে, সরকার আগামী নির্বাচনের নিশ্চয়তা দিচ্ছে। তিনি আরও বলেন, আমরা বারবার বলেছি একটি সমঝোতার কথা, চায়ের টেবিলে আপনা বসুন। পলিটিক্যাল কালচার এমন হয়েছে, কেউ কারো সঙ্গে বসতে চাচ্ছেন না। ইসি এ সমস্যার সমাধান করে না। দেশজ পদ্ধতিতে (সমাধান) এটি হতে হবে। কিন্তু দুঃখজনক, সে ধরনের সিভিল সোসাইটি দেখতে পাচ্ছি না। হাবিবুল আউয়াল বলেন, রাজনীতিক প্রশ্নে রাজনীতি বেশ তীক্ষ্ণভাবে বিভক্ত। আমরা সামনের দিকে তাকাতে চাই। সিইসি বলেন, আমরা কিছুটা নতুন আঙ্গিকে বিষয়টা উপস্থাপনের চেষ্টা করেছি। যারা রাজনীতিতে সম্পৃক্ত নন, বুদ্ধিজীবী সম্প্রদায়, তারা বিদগ্ধজন। তাদের কাছ থেকে জনগণের প্রত্যাশাটাই আপনাদের মাধ্যমে যতটুকু সম্ভব উঠে আসে। প্রত্যাশার বিপরীতে অনুকূল বাস্তবতা, প্রতিকূল বাস্তবতা আছে। পুরো অ্যাকাডেমিক পয়েন্ট থেকে আলোচনা করলে সুবিধা হবে, আমরা সমৃদ্ধ হবো। তিনি আরও বলেন, আমাদের দেশে রাজনীতিক প্রশ্নে রাজনীতি বেশ সার্ফলি, তীক্ষ্ণভাবে বিভক্ত। যার ফলে রাজনৈতিক বিতর্ক উপস্থাপন হলে আলোচনাগুলো খুবই ধারালো ও আক্রমণাত্মক হয়ে থাকে। আজকে সেদিকে যাবো না। আমরা সামনের দিকে তাকাতে চাচ্ছি। আপনাদের মাধ্যমে জনগণের প্রত্যাশা জানতে পারলে কিছুটা সমৃদ্ধ হবো। সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে আয়োজিত এই সভায় সাবেক নির্বাচন কমিশনার, আমলা ও সিনিয়র সাংবাদিক, নির্বাচন কমিশনার এবং ইসির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।