জি এম শাহনেওয়াজ ঢাকা থেকে \ আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বানের চ‚ড়ান্তু পস্তুতি নিচ্ছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। আজ বুধবার সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে নির্বানের কর্মপরিকল্পনা (রোডম্যাপ) প্রকাশ করবে ইসি। পরিকল্পনা অনুযায়ি আগামী ২০২৩ সালের নভেম্বরে তফসিল দিয়ে ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহে ভোট করার প্ররিকল্পনা করছে সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানটি। সংশ্লিষ্ঠ সূত্র জানায়, ইসির ৩৯ টি নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের মধ্যে বিএনপিসহ কয়েকটি দল ভোটে অংশ না নেওয়ার ঘোষনা দিলেও ইসি এ বিষয়টিকে পাত্তা দিচ্ছেনা। সংবিধানিক দায়িত্ব পালনের জন্য যা করা প্রয়োজন সেটি করবে বলে জানিয়েছে বর্তমান কমিশন। কে নির্বাচনে আসলো কিম্বা আসলোনা এটিকে গুরুত্ব না দিয়ে কর্মপ্ররিকল্পনা দিয়ে সময় মতো নির্বাচন করতে চায় ইসি। আজ বুধবার সকাল ১১ টায় দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কর্মপরিকল্পনা (রোডম্যাপ) প্রকাশ করবেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল । এসময় অন্য কমিশনার ও ইসি সচিব উপস্থিত থাকবেন। ইসি কর্মকর্তরা জানান, রোড মাপে থাকবে, সংসদ নির্বাচন সমানে রেখে ২০২৩ সালের জানুয়ারিতে নির্বাচন এলাকা পূর্ণনির্ধরণের জন্য আগের নীতিমালা পর্যলোচনা করে একটি নতুন নীতিমালা প্রস্তুত কাভ। ২০২৩ সালের মার্চে নিতিমালার আলোকে বিশেষজ্ঞদের সহায়তায় ৩০০ আসনে সীমানা পূর্ণনির্ধরণ করে খসড়া করবে ইসি। আর নির্বাচনী আইন প্রণয়নের ব্যবস্থা করা হবে একই বছরের ফেব্র“য়ারি মাসে। এছাড়া একই বছরের আগস্টে খসড়া ভোট কেন্দ্রর তালিকার উপর দাবি আপত্তি নিস্পত্তি করবে ইসি। অন্যদিকে ২০২৩ সালের জুন মাসে নতুন নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের চ‚ড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করবে ইসি। সূত্র জানায়, ২০২৩ সালের ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহে সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের প্রস্তুতি নিচ্ছে কাজী হাবিবুল আউয়াল নেতৃত্বাধীন কমিশন। দায়িত্বগ্রহণের ৬ মাসের মধ্যে জাতীয় নির্বচান নিয়ে কয়েক দফা সংলাপ করেছে। এবার নির্বাচনের কর্মপরিকল্পনা চূড়ান্ত করে ছক অনুসারে আগাতে চাইছে। কর্মপরিকল্পনার মধ্যে রয়েছেÑ আইনি কাঠামো পর্যালোচনা ও সংস্কার। নির্বাচন প্রক্রিয়া সময়োপযোগীকরণের লক্ষ্যে সংশ্লিষ্ট সকলের পরামর্ম গ্রহণ। সংসদীয় এলাকার সীমানা র্নিধারণ। নির্ভুল ভোটর তালিকা প্রণয়ন ও সরবরাহ। বিধি-বিধান অনুসরণপূর্বক ভোটকেন্দ্র স্থাপন। নতুন রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন ও নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের নিরীক্ষা। সুষ্ঠু নর্বাচন অনুষ্ঠানে সংশ্লিষ্ট সবার সক্ষমতা বৃদ্ধির কার্যক্রম গ্রহণ। নির্বাচনে অধিকতর প্রযুক্তির ব্যবহার। দক্ষ নির্বাচনি কর্মকর্তার প্যানেল তৈরি ও প্রশিক্ষণ। ভোটার সচেতসতা বৃদ্ধি কার্যক্রম। পর্যবেক্ষণ সংস্থা নিবন্ধন ও নবায়ন কার্যক্রম। নির্ভাচনী কার্যক্রমে গণমাধ্যমকে আইনী কাঠামোর আওতায় সম্পৃক্তকরণ। জানা গেছে, নির্বাচনে অধিকতর প্রযুক্তির ব্যবহারের মধ্যে রয়েছেÑ জিআইএস পদ্ধতিতে ভোট কেন্দ্রের তথ্য ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত ডাটাবেজ ও অ্যাপ্লিকেশন সফটওয়ার প্রণয়ন। নির্বাচনী ক্যালেন্ডার, অনলাইনে মনোনয়ন দাখিল ও গ্রহণ, প্রার্থীর তথ্য ব্যবস্থাপনা, পর্যবেক্ষণ ব্যববস্থাপনা কার্যক্রম, বোট গ্রহণ ও নির্বাচন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের ডাটাবেজ তৈরি, কেন্দ্রের তথ্য ব্যবস্থাপনা এবং কেন্দ্র গতে নিরাপদ ও দ্রুতসময়ে নির্বাচনী ফলাফল প্রেরণ সংক্রান্ত সিস্টেমের অ্যাপ্লিকেশন সফটওয়ার প্রণয়ণ। নির্বাচন বিষয়ক তথ্য সংক্রান্ত অ্যাপ্লিকেশন সফটওয়ার প্রণয়ন। সফটওয়ারের মাধ্যমে অডিট ও বিভিন্ন রিপোর্ট প্রস্তুত করা ব্যবস্থা আধুনিকায়ন, কমপ্লেইন্ট এবং কমপ্লায়েন্স ম্যানেজমেন্ট ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম অ্যাপ্লিকেশন সফটওয়ার প্রণয়ন। প্রশিক্ষণ ব্যবস্থাপনা অ্যাপ্লিকেশন সফটওয়ার প্রণয়ন। এছাড়া আছে ভোটার সংখ্যা, জনশুমারী ও ভৌগলিক অবস্থানের ভিত্তিতে জিআইএস পদ্ধতিতে সংসদ নির্বাচনের জন্য নির্বাচনি এলাকার সীমানা পুনর্র্নিধারন সংক্রান্ত ডাটাবেজ ও অ্যাপ্লিকেশন সফটওয়ার প্রণয়ন। এক্ষেত্রে আগামী জানুয়ারিতে আগের নীতিমালা পর্যালোচনা করে একটু নতুন নীতিমালা প্রস্তুতবরণ। ফেব্র“য়ারিতে জিআইএস সংশ্লিষ্ট সকল প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত গ্রহণ। ইভিএমের নতুন প্রকল্প: এদিকে আগামী সংসদ নির্বাচনে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ব্যবহার হবে কিনা এবিষয়ে আগামী সপ্তাহে সিদ্ধন্ত নিবে ইসি। মঙ্গলবার ইসি সচিব মো. হুমায়ুন কবীর খোন্দকার বলেন, প্রতিটি ইভিএমের বাজারদর যাচাই শেষ করতে না পারায় মঙ্গলবার সিদ্ধান্ত ছাড়াই সভা মুলতবি হয়। আগামী সপ্তাহে সোমবারের দিকে সভা বসবে তখন কমিশন সিদ্ধান্ত নিবে। বুধবার কমিশন সভায় দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে আরও প্রায় দু’লাখ ইভিএম কেনা ও রক্ষণাবেক্ষণে কয়েক হাজার কোটি টাকা প্রস্তাবিত প্রকল্প উপস্থাপন করে ইসি সচিবালয়। বাজার দর যাচাইয়ের কমিটি নির্ধারিত সময়ে কাজ শেষ করতে না পারায় ম্গলবার সভায় সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে পারে নি ইসি। ইসি সচিব বলেন, বাজার দর যাচাইয়ের কমিটি এখনও কাজ শেষ করতে পারে নি। এ কারণে আজকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় নি। এটি আরো পর্যালোচনা করবেন। আগামী সপ্তাহে আমরা আশা করছি সোমবারের দিকে সভা বসবে তখন কমিশন সিদ্ধান্ত নিবে। বৈঠক শেষে ইসি সচিব আরো জানান, ইসির সপ্তম কমিশন সভায় নির্বাচনী ব্যবস্থায় তথ্য প্রযুক্তি প্রয়োগ স¤প্রসারণের লক্ষ্যে ‘ইভিএমের ব্যবহার বৃদ্ধি এবং টেকসই ব্যবস্থাপনা’ শীর্ষক প্রকল্পটি নিয়ে আলোচনা হয়। কমিশন দীর্ঘক্ষণ ধরে আলোচনা, পর্যালোচনা করেছেন এবং অনেকগুলো বিষয় দেখেছেন, নির্দেশনা দিয়েছেন। সেগুলো নিয়ে কমিশন পরে সিদ্ধান্ত নেবেন। সচিব বলেন, আজকে মূলত প্রতিটি ইভিএমের প্রাইস কত হতে পারে- এ বিষয়েং বাজার দর যাচাইয়ের একটি কমিটি করা হয়েছিল। ওই কমিটি বাজার দর যাচাই করবেন। পরে পরবর্তী সভাতে এটি তুলে ধরবেন এবং মাননীয় কমিশন পর্যালোচনা করে তারা ফাইনাল সিদ্ধান্ত নিবেন।