শনিবার, ১৭ মে ২০২৫, ০১:৫৩ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম ::
সুন্দরবনে বিএসএফের রেখে যাওয়া ৭৫ জনকে পরিবারের কাছে হস্তান্তর দেবহাটা বিএনপির সদস্য নবায়ন উদ্বোধনী আয়োজনে জেলা বিএনপির আহবায়ক রহমাতুল্লাহ পলাশ বিষ্ণুপুর ইউনিয়ন যুবদলের প্রস্তুতি সভা অনুষ্ঠিত কলারোয়ায যুবদল নেতার ওপর হামলার ঘটনায় নিন্দা ও প্রতিবাদ মুন্সীগঞ্জে তাপদাহে পানি ও খাবার স্যালাইন বিতরণ শ্রীউলায় ইউনিয়ন পর্যায়ে সমন্বয় সভা অনুষ্ঠিত তারুণ্যের সমাবেশ সফল করতে স্বেচ্ছাসেবক দলের প্রস্তুতি সভা ভাড়াশিমলায় ২৫০ প্রান্তিক কৃষানের মধ্যে সবজির বীজ বিতরণ খুলনার সাবেক মহিলা কাউন্সিলর গ্রেফতার বসন্তপুর ফকিরপাড়া জামে মসজিদে বার্ষিক ওয়াজ মাহফিল

সনাতন ধর্মাবলম্বীদের শারদীয় দুর্গ পূজা উপলক্ষে প্রতিমার কারুকার্য শেষ করতে শিল্পীদের বিরামহীন পরিশ্রম

দৃষ্টিপাত ডেস্ক :
  • আপডেট সময় শুক্রবার, ৩০ সেপ্টেম্বর, ২০২২

বিভাষ মন্ডল বুড়িগোয়ালিনী (শ্যামনগর) থেকে \ সনাতন ধর্মাবলম্বীদের প্রধান ও সবচেয়ে বড় শারদীয় দূর্গা পুজা, এই উৎসবকে ঘিরে শ্যামনগর উপজেলার ১২টি ইউনিয়নে চলছে প্রতিমা তৈরির শেষ মুহূর্তের কাজ। মাটির কাজ শেষ করে এখন চলছে সাজসজ্জার কাজ। রঙের আঁচড়ে দেবী দুর্গাকে সাজিয়ে তোলা হচ্ছে নানা রঙ-রঙে। পূজা ঘনিয়ে আসায় এখন রাত দিন ব্যস্ত সময় পার করছে মৃৎশিল্পীরা। বাংলা সাহিত্যের মধ্যযুগে দূর্গা পুজার অস্তিত্ব পাওয়া যায়। অসুররা যখন দেবতাদের পরাজিত করে স্বর্গ রাজ্য দখল করেছিলো তখন সকল দেবতাদের মিলিত শক্তিতে দেবী দূর্গার উৎপত্তি হয়। এবং দেবী দূর্গা যুদ্ধে অসুরদের পরাজিত করে দেবতাদের বাসস্থান স্বর্গ উদ্ধার করে দেন। তাই ঐ সময় রাজারা দূর্গা পুজা প্রথা চালু করেন। তাহারই আলোকে ১৫১০ সালে কুচ বংশের রাজা বিশ্ব সিংহ কুচ বিহারে সর্ব প্রথম দূর্গা পুজার আয়োজন করে ছিলেন। এবং ধারনা করা হয় ১৬১০ সালে কলকাতার বারিসাল রায় চৌধুরী পরিবার দূর্গা পুজার আয়োজন করেছিলেন। এই থেকে সনাতন ধর্মাবলম্বীরা শারদীয় দূর্গা পুজা পালন করে আসছে। তার ধারাবাহিকতায় প্রতি বছর শারদীয় দূর্গা মুজা পালন করা হয়ে থাকে। প্রকৃত পক্ষে মহালয়া থেকেই দূর্গা পুজার আনুষ্টানিকতা শুরু হয়। সনাতন ধর্মাবলম্বীরা মনে প্রানে বিশ্বাষ করেন দেবী দূর্গা শশুর বাড়ী থেকে বাপের বাড়ী আগমন করেন, তাই মহালয়ার তিথি শেষ হলেই শুরু হয় দেবীপক্ষ, যা চলে পুর্নিমা পর্যন্ত। এই দেবী পক্ষেরই সপ্তমী থেকে দশমী পর্যন্ত দূর্গা পুজার মুল আনুষ্টান। দূর্গাপুজা হয়ে উঠেছে এক মহামিলনের মহাশক্তির পুজা।এই জন্য শারদীয় দূর্গাপুজা হিন্দুূদের পুজা হলে ও জাতি ধর্ম নির্বিশেষে শেষে আপামর বাঙ্গালির মিলন মেলা। সরেজমিনে উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন ঘুরে দেখা যায়, বুড়িগোয়ালিনী ইউনিয়নের ৯ টি স্থানে পুজা আনুষ্ঠিত হচ্ছে। এর মধ্যে আড়পাংগাশিয়া শ্রী শ্রী রাস মন্দির প্রাঙ্গনে শারদীয়া দূর্গা পুজায় দর্শনার্থীদের মনোমুগ্ধ ও আকাশনের জন্য নির্মিত করেছেন বাংলাদেশের স্বপ্ম ও ভালোবাসা পদ্না সেতুর আদলে প্রতিমা ও প্যান্ডেল। পুজা কমিটির সভাপতি আনঙ্গ কুৃমার মন্ডল দৈনিক দৃষ্টিপাতকে জানান, আমরা প্রতি বছর দর্শনার্থীদের জন্য আনেক ভালোমানের এবং নতুনত্ব প্রতিমা ও প্যান্ডেল তৈরি করি। যার জন্য আমাদের পুজা মন্ডবে দূর দূরান্ত থেকে হাজার-হাজার মানুষ ঠাকুর দেখতে আসে। তার মধ্যে দঃ বড়কুপট শিব দূর্গা মিলন মন্দিরের সভাপতি দেবাশীষ কুমার মন্ডল, বলেন অত্যাধুনিক আলোক সজ্জায় নির্মিত ভারতের তামিল নাড়ু প্রদেশের ‘ভোলে বোম ভোলে’ মুন্দিরের আনুকরনে প্যান্ডেল, এনং সত্য সনার্তনী ‘চন্দ্রমুখী’ দূর্গা প্রতিমা। এটি দর্শনর্থীদের আকর্ষিত করবে। পাশ্ববর্তী মুন্সীগঞ্জ ইউনিয়নে ১০ টি স্থানে পূজা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। তার মধ্যে ২ টি স্থানে জাঁকজমক পূর্ণ পুজা হচ্ছে, তার মধ্যে একটি হলো মধ্যকুলতলী সার্বজনীন দূর্গা মন্দির। এই পুজা কমিটির সাধারণ সম্পাদক বিজন রাজ দৈনিক দৃষ্টিপাতকে জানান, সাতক্ষীরা তথা বাংলাদেশ আর কোথাও ডাবল সিটের যন্ত্র দ্বারা নির্মিত চলমান প্রতিমা ও হিমালয় দৃশ্য আসামের পাহাড় সমতুল্য প্যান্ডেল হচ্ছে না। এটি শুধুমাত্র মুন্সীগঞ্জের মধ্যকুলতলী সার্বজনীন দূর্গা মুন্দিরে আনুষ্ঠিত হচ্ছে। তিনি আরো বলেন চলমান ৭ টি শো চলবে, যার প্রথম দৃশ্য শিবলিঙ্গ ভেদ করে বাবা মহাদেবের আবির্ভাব। দ্বিতীয় দৃশ্য, এক রুপে হস্তী ও গনেশের আবির্ভাব। তৃতীয় দৃশ্য, নৃত্য ছন্দে ময়ুরের পিঠে কার্ত্তিকের আবির্ভাব, চতুর্থ দৃশ্য, সব চেয়ে শ্রেষ্ঠ আকর্ষন রাম ভক্ত হনুমানের বক্ষ চিরে মহাশুন্যে রাম সীতার আবির্ভাব। পঞ্চম দৃশ্য, সাধক রাম প্রসাদ এর নিজ মেয়ে রুপে সাক্ষাত কালি মাতার কথোপকথন। ষষ্ঠ দৃশ্য, মহিষাসুরের বক্ষ চিরে মহিষাসুরের আবির্ভাব। হরিনগর বাজার সার্বজনীন দূর্গা মুন্দিরের সভাপতি অসিত মলি­ক বলেন, সাতক্ষীরা জেলাতে আমরা যারা পুজা করি প্রত্যেকের সাথে প্রত্যেকের কম বেশি কথা হয়, কথার মধ্যে জানা যায় এবারে সব চেয়ে বেশি খরচ এর পুজা করছি আমারা। কেননা বাংলাদেশে এই প্রথম ভারতের ত্রিপুরার বিখ্যাত “ত্রিপুরেশ্বরী” মুন্দিরের আনুকরনে নির্মিত প্যান্ডেল ও মনোমুগ্ধকর ব্যায়বহুল অত্যাধুনিক ডিজিটাল ইলেকট্রিক দেবী দূর্গা প্রতিমা, “পরমেশ্বরী”। এখানে প্রধান আকার্ষন কম্পিউটার সফটওয়্যার লাইট দ্বারা পরিচালিত সম্পূর্ণ ইলেকট্রনিক ৪ টি দৃশ্য। যার প্রথম দৃশ্য, দেবী দূর্গার রনসাজে যুদ্ধরত। দ্বিতীয় দৃশ্য, চলন্ত যুদ্ধরত সিংহের গর্জন।তৃতীয় দৃশ্য, কার্ত্তিকের ধনুক বানে মহিষাসুরের মন্তক ছেদন। চতুর্থ দৃশ্য, অন্যতম বিশেষ আকর্ষন সম্পূর্ণ মহাভারতের কাহিনী অবলম্বনে দেবতা ও অসুরের ওয়াটার গ্রুফ চলন্ত সমুদ্র মন্থন। উলে­খ্য রোববার (২৫ সেপ্টেম্বর) মহালয়ার মধ্য দিয়ে আনুষ্ঠানিকতা শুরু দুর্গাপূজার। আর ১লা অক্টোবর থেকে শুরু হয়ে ৫ ই অক্টোবর প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শেষ হবে।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর
© All rights reserved © 2013-2022 dainikdristipat.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com