এফএনএস আন্তর্জাতিক: মিয়ানমারের সশস্ত্র বাহিনী দিবসে দেশটির ক্ষমতায় থাকা সামরিক জান্তার প্রধান মিন অং হ্লাইং বলেছেন, ‘সন্ত্রাসী’ বিরোধী বাহিনীর সঙ্গে সামরিক বাহিনী কোনো ধরনের আলোচনায় যাবে না। গতকাল রোববার দেওয়া ভাষণে তিনি ওই ‘সন্ত্রাসীদের’ নির্মূল করারও অঙ্গীকার করেছেন বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স। গত বছরের অভ্যুত্থানের বিরোধিতাকারীরা বলছে, তারাও হাল ছাড়বে না, লড়াই চালিয়ে যাবে। নোবেল পুরস্কারজয়ী অং সান সু চির নির্বাচিত সরকারকে উৎখাত করে গত বছরের ১ ফেব্র“য়ারি ক্ষমতায় বসে দেশটিরে সামরিক বাহিনী; স্থানীয়ভাবে এই বাহিনী তাতমাদাও নামে পরিচিত। ওই অভ্যুত্থানের পর এ নিয়ে দ্বিতীয়বার সশস্ত্র বাহিনী দিবস পালিত হচ্ছে; রাজধানী নেপিডোতে সামরিক কুচকাওয়াজের মধ্য দিয়ে দিবসটি পালিত হয়েছে। রোববার স্থানীয় সময় সকালে মিয়ানমারের বিভিন্ন সড়কে অভ্যুত্থানবিরোধীদেরও দেখা গেছে, তাদের হাতে থাকা প্ল্যাকার্ডে লেখা ছিল, ‘ফ্যাসিবাদী সামরিক বাহিনীকে উচ্ছেদ কর’। রোববারের ভাষণে হ্লাইং ‘সন্ত্রাসী’ বিরোধীদের সঙ্গে কোনো ধরনের আলোচনার সম্ভাবনা উড়িয়ে দেন। “নিরপরাধ মানুষকে হত্যা করা সন্ত্রাসী গোষ্ঠী ও তাদের সমর্থকদের সঙ্গে আলোচনার বিষয়টি তাতমাদাও আর বিবেচনায় নেবে না এবং তাদের শেষ দেখে ছাড়বে,” বলেছেন তিনি। অভ্যুত্থানবিরোধী সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলো তাদের প্রতিরোধ যুদ্ধের নামে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য ও বেসামরিকদের হত্যা করছে বলে অভিযোগ করে আসছে মিয়ানমারের সামরিক জান্তা। অন্যদিকে আন্দোলনকারীরা বলছে, গত বছরের ফেব্র“য়ারিতে অভ্যুত্থানের পর থেকে সামরিক বাহিনীর হাতেই হাজারের বেশি মানুষ খুন হয়েছে। বিরোধীদের জাতীয় ঐক্য সরকার (এনইউজি) রোববার বলেছে, মিয়ানমারের জনগণ সামরিক বাহিনী ও এর ফ্যাসিবাদী মূল ও শাখা-প্রশাখা উপড়ে ফেলবে। “আমাদের হারিয়ে যাওয়া বীরদের আত্মাকে সঙ্গে নিয়ে শেষ পর্যন্ত আমরা এ তিক্ত লড়াই চালিয়ে যাবো,” বিবৃতিতে বলেছেন এনইউজি’র মুখপাত্র ড. সাসা। এক দশকের টালমাটাল গণতন্ত্র ও অর্থনৈতিক সংস্কারের পর গত বছর থেকে ফের সামরিক শাসনে ঢুকে যাওয়া দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার এ দেশটিতে সহিংসতা বিস্তৃত আকার নিয়েছে। মিয়ানমারের পরিস্থিতির ওপর নজর রাখা গোষ্ঠী এসিস্ট্যান্স অ্যাসোসিয়েশন ফর পলিটিকাল প্রিজনার্সের (এএপিপি) হিসাব অনুযায়ী, অভ্যুত্থানের পর থেকে এ পর্যন্ত এক হাজার সাতশর বেশি মানুষ নিহত ও ১৩ হাজার জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সামরিক কর্তৃপক্ষ এ সংখ্যাকে ‘অতিরঞ্জিত’ বলেছে।