দৃষ্টিপাত রিপোর্ট \ সাতক্ষীরা শহর গতকাল ছিল লোকে লোকারন্য, জনস্রোত, মানুষ আর মানুষ, শহরের সীমানা পেরিয়ে জনস্রোত এর সুবিশালতা ছড়িয়ে পড়ে কদমতলা, বিনেরপোতা আর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এলাকা। বিস্মিত, হতভম্ব, শহরবাসি, হাজার ছাড়ি লাখ এবং লাখের মধ্যে কেবল সীমাবদ্ধ ছিল না জনসাগর। কয়েক লক্ষ লোকের সরব, স্বতঃস্ফূর্ত উপস্থিতি নারায়ে তাগবীর, আলাহু আকবর ধ্বনি প্রতিধ্বনি সাতক্ষীরার আকাশ বাতাশকে প্রকম্পিত করছিল। সব জনস্রোত ছিল সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠমুখি। আমীরে জামায়াত ডা: শফিকুর রহমানের সাতক্ষীরায় আগমন উপলক্ষ্যে সাতক্ষীরাবাসীর সাথে যে আবেগ, আগ্রহ, উৎসাহ সৃষ্টি হয়েছে জেলার ইতিহাসে এমন আগ্রহময় জনস্রোত দেখা যায়নি এমনটি বলেছেন জায়ায়াতের কর্মী সম্মেলনে আগতের অনেকে। আধুনিক শিক্ষায় শিক্ষিত, চিকিৎসা বিদ্যায় পাদদর্শী ডা: শফিকুর রহমান বিগত পতিত সরকারের সময়গুলোতে যেভাবে নির্যাতিত নিষ্পেষিত এবং জেল জুলুমের শিকার হয়েছেন তা নজিরবিহীন। দিনের পর দিন মাসের পর মাস ফ্যাসিস্ট এর কারাগারে অন্তরীণ থেকেছেন যে কারণে দেশবাসির কাছে তিনি মজলুমনেতা হিসেবে পরিচিতি পেয়েছেন। কর্মী সম্মেলনের উপস্থিত অনেককে আক্ষেপ করতে দেখা গেছে আমীরে জামাতকে কাছ থেকে দেখার সুযোগ না পাওয়ায়। কোন উত্তেজনাকর বা বেহিসেবী বক্তৃতা নয়, অত্যন্ত ধীরস্থির ভাবে, হৃদয়ঙ্গম বক্তব্যের মাধ্যমে তিনি শান্তির বার্তা দিয়ে গেলেন সাতক্ষীরার বিশ লক্ষাধিক মানুষকে। হানাহানী, নৈরাজ্য নয়, এদেশ আমাদের সব ধর্মের, বর্ণের। আগামীর বাংলাদেশ হবে শান্তির, এ দেশে ইসলামের পতাকা উড়বে। আমীরে জাময়াতের প্রতিটি শব্দ চয়ন ছিল অনন্য অসাধারণ। সাতক্ষীরার মাটিতে ৩৬ জামায়াত শিবিরের রক্তে রঞ্জিত। এই জমিন শহীদদের জমিন। গতকালে জনস্রোতের মহাউপস্থিতিতে শহীদ পরিবারের সদস্যরও উপস্থিত ছিলেন। শহরের প্রতিটি সড়কে ছিল লোকে লোকারণ্য। যে যেভাবে পেরেছে দাঁড়িয়ে বক্তব্য শুনেছে। অনেকে প্রাণপন চেষ্টা চালিয়েও সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় কর্মী সম্মেলন স্থলে উপস্থিত হতে পারেনি। জামায়াত শিবিরের কর্মী সমার্থকরাই যে কেবল জনস্রোতে ছিলো তা নয় বিপুল সংখ্যাক সাধারণ মানুষের উপস্থিতি ছিল বিশেষভাবে লক্ষণীয়। সংখ্যালঘু স¤প্রদায়ের লোকজনের উপস্থিতি ছিল গতকালের জনস্রোতের অংশে। আমিরে জামায়াত আওয়ামী দুঃসময়ে মায়েদের ভূমিকা কৃতজ্ঞতার সাথে স্বীকার করেন। শত সহস্র মহিলারা শহরের বিভিন্ন বাসা বাড়িতে অবস্থান নিয়ে কর্মী সম্মেলনের বক্তব্য শ্রবণ করেছেন। পুরো শহর ও শহরতলীতে মাইকিং ব্যবস্থা করায় মূল সভাস্থল সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় হতে চার কিলো মিটার বা তারও দুরবর্তী এলাকা হতে আমীরে জামায়াতের বক্তব্য শুনেছেন। দুপুর দুইটায় কর্মী সম্মেলন শুরু হওয়ার কথা থাকলেও দুপুর বারটার পূর্বেই লক্ষাধিক মানুষের সমাবেশ ঘটে সম্মেলনস্থলে। পুরো শহরের যানযটের চিত্র ছিল না। অথচ সর্বকালের বৃহত্তম লোকসমাগম। জামায়াতের নিজস্ব জনবল স্বেচ্ছাসেবকের দায়িত্ব পালন করে কোথাও সামান্যতম যানযট হতে দেইনি। শহরের যতদুর চোখে দেখা যায় ততদুরেই ছিল মানুষ আর মানুষ। সাতক্ষীরার মানুষ মনে রাখবে এমন জনস্রোত, মানুষে মানুষে প্রকম্পিত সাতক্ষীরা শহর যেন সার্বজনীন মহাজাগরণ।