এফএনএস: বিসিএসসহ সব সরকারি চাকরি এবং ব্যাংক—বিমা প্রতিষ্ঠানে নিয়োগে আবেদন ফি সর্বোচ্চ ২০০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। গতকাল বুধবার প্রশাসনিক উন্নয়ন সংক্রান্ত সচিব কমিটির সভায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সভা শেষে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. মোখলেস উর রহমান সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান। একই সঙ্গে বিসিএসে প্রতিবন্ধী আবেদনকারীদের অন্যদের মতো নির্ধারিত ফি’র বাইরে বাড়তি কোনো অর্থ দিতে হবে না বলেও জানিয়েছেন জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব। সিনিয়র সচিব বলেন, বিসিএসে পিএসসিতে আবেদনের ক্ষেত্রে আগে ছিল ৭০০ টাকা, তারা প্রস্তাব করেছেন ৩৫০ টাকা। কিন্তু আজ (গতকাল বুধবার) সচিব কমিটি সিদ্ধান্ত নিয়েছে এটা হবে ২০০ টাকা। পিএসসিতে ৪৭তম বিসিএসে আবেদন করতে হলে ২০০ টাকা লাগবে। তিনি বলেন, আরেকটি বিষয় ছিল আমরা মনে করেছিলাম এটা কম কিন্তু এটা কম নয়, যারা প্রতিবন্ধী প্রার্থী তাদের আলাদা একটা ফি ছিল সেটা ১০০ টাকা। এটা কমিয়ে ৫০ টাকা করার প্রস্তাব এসেছিল। ৫০ টাকা মানে কি— তারা যে টাকা (অন্যদের মতো ফি) দিত সেটার অতিরিক্ত এই টাকা দিত, তাদের জন্য স্পেশাল অ্যারেজমেন্ট। এই অতিরিক্ত টাকাটাও দেওয়া লাগবে না। এটা ফ্ল্যাট রেট ৪৭তম বিসিএস থেকে যেই বিসিএসে অ্যাপ্লাই করবে ২০০ টাকা। আগে প্রতিবন্ধীদের কাছ থেকে ১০০ টাকা বেশি নেওয়া হতো। এখন তাদের অন্যদের মতো শুধু ২০০ টাকা ফি দিতে হবে। বিসিএসে চাকরিপ্রার্থীদের আবেদনের ফি কমানোর বিষয়ে বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশন থেকে আদেশ জারি করা হবে বলে জানিয়েছেন মোখলেস উর রহমান। সিনিয়র সচিব আরও বলেন, অর্থ বিভাগের মাধ্যমে আরেকটি আদেশ জারি হচ্ছে। সেটি হচ্ছে— ব্যাংক, বিমা, আধা—সরকারি যেটাকে আমরা বলি এক্সটেনশন অব দ্য গভর্নমেন্ট, এমন যে কোনো প্রতিষ্ঠানের চাকরির আবেদন ফি সর্বোচ্চ ২০০ টাকা। এখন অনেক ব্যাংক—বিমা এমন প্রতিষ্ঠান রয়েছে এক হাজার ৫০০ থেকে ২ হাজার টাকাও আবেদন ফি নিয়ে থাকে। চাকরি হয় দুজনের হয়তো ২০০ লোক আবেদন করে, আমি আর হাজারে গেলাম না। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সচিব আরও বলেন, সরকারি, আধা—সরকারি বা এক্সটেনশন অব গভর্নমেন্ট বলতে যা বোঝায় ২০০ টাকার বেশি কোনো আবেদন ফি নেওয়া হবে না। এই আদেশ অর্থ বিভাগ থেকে জারি হবে। এখন এ বিষয়ে প্রজ্ঞাপন আদেশের অপেক্ষা। তিনি বলেন, আমরা অর্থ বিভাগের চিঠিতে একটি লাইনের অনুরোধ দিয়ে দেবো যে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানও যাতে এই অনুশাসনটা মেনে চলার চেষ্টা করে। মোখলেস উর রহমান বলেন, এই অনুরোধটা আমরা জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকেও জানাতে পারি। সবটা হলো আমাদের জনগণের জন্য। ওরাও যে ব্যবসা করে জনগণের জন্য, আমরা যে চাকরি দেই, নেই জনগণের জন্য। প্ল্যাটফর্মটা একই হওয়া উচিত। এক সপ্তাহের মধ্যে ফি কমানোর প্রজ্ঞাপন জারি হবে বলেও জানিয়েছেন জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব। বিসিএসে মৌখিক পরীক্ষার নম্বর কমে ১০০ হলো: এদিকে সিভিল সার্ভিসে নিয়োগে বিসিএসের মৌখিক পরীক্ষার নম্বর ২০০ থেকে কমিয়ে ১০০ করা হয়েছে। মোখলেস উর রহমান বলেন, বিসিএসে ভাইবার (মৌখিক পরীক্ষা) নম্বর ২০০ থেকে কমিয়ে ১০০ করা হয়েছে। আমাদের যেহেতু নতুন আইন, ২০২৪ এর আইন। সিনিয়র সচিব বলেন, টোটাল পরীক্ষাটা আগে ১১০০ নম্বরে দিতে হতো। এখন ১০০০ মোট নম্বর। ভাইভা হবে ১০০ নম্বরে। এর আগে মৌখিক পরীক্ষার নম্বর ২০০ থেকে কমিয়ে ১০০ করার জন্য বাংলাদেশ সরকারি কর্মকমিশন (পিএসসি) থেকে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব পাঠানো হয়। সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, পিএসসি মনে করছে, ২০০ নম্বরের মৌখিক পরীক্ষার কারণে অনেকে অনিয়মের ফাঁকফোকর খেঁাজে। লিখিত পরীক্ষায় কম নম্বর পেয়েও অনেকে মৌখিকে বেশি পেয়ে যায়। এখানে বিশেষ সুবিধা পাওয়ার সুযোগ রয়েছে। সেই অনৈতিক সুবিধা পাওয়ার সুযোগটি বন্ধ করার দাবি রয়েছে। সেজন্য মৌখিকে নম্বর কমানোর প্রস্তাব দিয়েছে পিএসসি।