সোমবার, ১২ মে ২০২৫, ০২:৪২ পূর্বাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম ::

সরকারী খাল থেকে অবৈধ বালূ উত্তোলনে বাধা দেওয়ার ঘটনায় মামলা \ শিক্ষক সহ আটক ৩ \ প্রতিবাদে এলাকাবাসির মানববন্ধন ও সমাবেশ

দৃষ্টিপাত ডেস্ক :
  • আপডেট সময় রবিবার, ২১ আগস্ট, ২০২২

স্টাফ রিপোর্টার ঃ সাতক্ষীরায় সরকারী খাল থেকে ঠিকাদার কর্তৃক অবৈধ ভাবে বালু উত্তোলন কাজে বাধা দেওয়ায় সদর থানায় ১০ জনকে আসামী করে মামলা। স্কুল শিক্ষক সহ ৩ জনকে আটক করেছে পুলিশ। প্রতিবাদে মানববন্ধন ও সমাবেশ করেছে এলাকাবাসি। ঘটনাটি সদরের আলিপুর গাংনিয়া বটতলা নামক স্থানে ঘটে। আটককৃতরা হলেন গাংনিয়া গ্রামের রাজ্জাক কারিগর পুত্র স্কুল শিক্ষক মোঃ জাহাঙ্গীর, জিহাত কারিগর পুত্র ওয়াজেদ কারিগর ও মুনসুর পুত্র ইউনুস। অন্যান্য আসামীরা হলেন গাংনিয়া ইউপি সদস্য মোশারাফ হোসেন, লিটন, মোঃ মান্নান, মোঃ পলতা, তোতা বাবু, আব্দুর রশিদ, ফরিদ হোসেন ও বাবলু। মামলার আসামী ইউপি সদস্য মোশারাফ হোসেন জানান আল আমিন শেখ গাংনিয়া সরকারী খাল থেকে অবৈধ ভাবে বালু উত্তোলন করছিল। খালের দুইপাড়ে চলাচলের রাস্তা ও বসবাসকারী অসহায় পরিবারের ঘরবাড়ি খালে ধসে পড়বে এটি ভেবে তিনি স্থানীয় এলাকাবাসী বালু উত্তোলন করতে নিষেধ করি। কিন্তু আমাদের কথা অমান্য করে জোর পুর্বক বালু উত্তোলন করে। মানবিক কাজে বাধা দেওয়ায় উল্টা মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানী করছে। বর্তমান এলাকার বহু মানুষের নামে মামলা দিয়ে হয়রানী করবে বলে হুমকি দিচ্ছে। তিনি আরো বলেন, ঠিকাদার অসহায় পরিবারের নামে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানী করছেন। তিনি মিথ্যা মামলা থেকে অব্যহতি পেতে প্রশাসকের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন। এ বিষয়ে জানতে চাইলে ঠিকাদার আল আমিন শেখ জানান, তিনি সহ জেলা ছাত্রলীগের সাধারন সম্পাদক সুমন হোসেন এক সাথে কাজ করছে। জেলা প্রশাসক ও পানি উন্নয়ন বোর্ড থেকে অনুমতি নিয়ে বালু উত্তোলন শুরু করি। ঐ এলাকার ইউপি সদস্য সহ কয়েক জন আমার কাজের শুরু থেকে বাধা প্রদান এমনকি তারা বালু উত্তোলনের সরঞ্জাম ও পাইপ ভাংচুর করে ক্ষতিগ্রস্থ করে। এঘটনায় মামলা করা হয়েছে। এ বিষয়ে জেলা ছাত্রলীগের সাধারন সম্পাদক মোঃ সুমন হোসেনের কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান, আমি কারুর বিরুদ্ধে মামলা করিনি। তবে জামাত বিএনপির কর্তৃক আমার কাজে ক্ষতিগ্রস্থ করা হয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আবুল খায়েরের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বালু উত্তোলনের জন্য আমি কোন ব্যক্তি অথবা ঠিকাদার কাউকে অনুমতি প্রদান করিনি। সদর থানার ওসি এসএম কাইয়ুম দৃষ্টিপাতকে জানান, কোন ব্যক্তি আইন হাতে তুলে নিতে পারেনা। সমস্যা সৃষ্টি হলে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দিতে হবে। কিন্তু তারা নিজেরা আইন হাতে তুলে নিয়ে ক্ষয়ক্ষতি করেছেন। এ বিষয়ে জানতে চাইলে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির দৃষ্টিপাতকে জানান, ঐ খাল থেকে বালু উত্তোলনের জন্য কোন অনুমতি দেওয়া হয়নি। অবৈধ বালু উত্তোলন কারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। অপর দিকে অবৈধ বালু উত্তোলন বন্ধ ও মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে মানববন্ধন বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্টিত হয়েছে। গতকাল বিকালে সদর উপজেলার আলিপুর ইউনিয়ন গাংনিয়া ফুটবলমাঠে বিক্ষোভ সমাবেশে আলিপুর ৯ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মোশারাফ হোসেন নিউট্রট এর সভাপতিত্বে, বক্তব্য রাখেন আলিপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুর রউফ সরদার, সদর থানা আ’লীগের সহ-সভাপতি কামরুল ইসলাম বাবু, ইউপি সদস্য আশরাফুল ইসলাম লাকি, আব্দুল­াহ গাজী, রফিকুল ইসলাম, সংরক্ষিত মহিলা ওয়ার্ডের সদস্যা সেলিনা বেগম, কৃষক জিয়াউর ইসলাম, মর্জিনা খাতুন, রহমান গাজী, আজগর আলী, মিন্টু, নয়ন, রিয়াজুল প্রমুখ। সমাবেশে বক্তারা বলেন জেলা ছাত্রলীগের সাধারন সম্পাদক ঠিকাদারের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা নিয়ে বালু উত্তোলনের চেষ্টা করে আসছিল। এমনকি গ্রাম্য সালিশে বালু উত্তোলন করবেনা বলে জানান। কিন্তু ছাত্রলীগের জেলার সাধারন সম্পাদক মোঃ সুমন হোসেন তার প্রভাব খাটিয়ে জোর পূর্বক বালি উত্তোলনের চেষ্টা করে গ্রামবাসী বাধা দেওয়ায় তাদের নামে মিথ্যা মামলা দিয়ে ওই স্থান থেকে আবারও অবৈধ বালূ উত্তোলনের পায়তারা চালিয়ে যাচ্ছে। এখানে বালু উত্তোলন হলে শত শত পাকা ঘরবাড়ী, মসজিদ-মাদ্রাসা সহ অসংখ্য স্থাপনা ভূমি ধ্বসের কবলে পড়বে। বক্তারা অবিলম্বে ছাত্রলীগ নেতা সুমন হোসেনকে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ থেকে বহিস্কার ও গ্রামবাসীদের নামে হয়রানিমুলক মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানান। মানববন্ধনে আলীপুর ইউনিয়ন বিভিন্ন বয়সী কয়েক হাজার মানুষ উপস্থিত ছিলেন।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর
© All rights reserved © 2013-2022 dainikdristipat.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com