রবিবার, ২৫ মে ২০২৫, ০২:১২ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম ::
শান্তি আলোচনার পর ইউক্রেনে বৃহত্তম ড্রোন হামলা চালালো রাশিয়া সিরিয়ায় পুনরায় কার্যক্রম শুরুর পরিকল্পনা ঘোষণা করেছে বিশ্বব্যাংক অপারেশন সিঁদুর নিয়ে মন্তব্য, ভারতে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক গ্রেফতার সৌদি আরবে অবৈধদের ধরতে অভিযান, গ্রেফতার ১৫ হাজার হায়দরাবাদের চারমিনারের কাছে ভবনে আগুন, শিশুসহ নিহত ১৭ যে কারণে ব্যর্থ হলো ভারতের স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ ভারতের জন্য আকাশসীমা আরও এক মাস বন্ধ রাখবে পাকিস্তান: রিপোর্ট ইরানে শিয়া মাজারে হামলার ঘটনায় ৩ জনের মৃত্যুদণ্ড যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ—মধ্যাঞ্চলে ভয়াবহ টর্নেডোয় ২৭ জনের প্রাণহানি যে কারণে পেনাল্টি নেননি হালান্ড

সরকার রাজস্ব ঘাটতিতে ভুগলেও ভ্যাট দেয় না বেশিরভাগ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান

দৃষ্টিপাত ডেস্ক :
  • আপডেট সময় বৃহস্পতিবার, ১৩ মার্চ, ২০২৫

এফএনএস এক্সক্লুসিভ: সরকার বড় অঙ্কের রাজস্ব ঘাটতিতে ভুগলেও দেশের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানই ভ্যাট দেয় না। এমনকি ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানগুলো ভোক্তার কাছ থেকে মূল্য সংযোজন কর বা ভ্যাট হিসেবে অর্থ কেটে রাখলেও তা সরকারের খাতায় জমা দিচ্ছে না। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) হিসাবে সারা দেশে এক কোটি ১৮ লাখেরও বেশি অর্থনৈতিক প্রতিষ্ঠান বা ইউনিটের মধ্যে স্থায়ী প্রাতিষ্ঠানিক ইউনিটের সংখ্যা প্রায় ৬৩ লাখ। কিন্তু জাতীয় রাজস্ব বোর্ডে মাত্র পাঁচ লাখ ৭০ হাজার প্রতিষ্ঠান নিবন্ধিত ভ্যাটদাতা। দেশের অর্থনৈতিক প্রতিষ্ঠানের সংখ্যার বিপরীতে নিবন্ধিত ভ্যাটদাতা প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ৫ শতাংশেরও নিচে। তার মধ্যে চার লাখ ৮০ হাজার প্রতিষ্ঠান রিটার্ন দেয়। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়। সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, ভ্যাট নিবন্ধিত প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা বাড়ানোর ক্ষেত্রে ব্যবসায়ীরা বিভিন্নভাবে অসহযোগিতা করছে। পাশাপাশি এনবিআরের কাঠামোগত দুর্বলতার কারণে বাড়ছে না ভ্যাটদাতা প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা। অথছ সরকার রাজস্বের জন্য হাহাকার করছে। যদিও ভ্যাট নিবন্ধন বাড়াতে বেশ কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে এনবিআর। বর্তমানে ব্যক্তি পর্যায়ে আয়কর ছাড়াও সেলফোনে কথা বলা থেকে শুরু করে কেনাকাটা, হোটেলে খাওয়া, সিনেমা দেখাসহ দৈনন্দিন লেনদেনে ভোক্তারা ভ্যাট দিচ্ছে। কিন্তু প্রাতিষ্ঠানিক পর্যায়ে এখনো ভ্যাটজালের বাইরে দেশের অর্থনৈতিক ইউনিটগুলোর ৯৫ শতাংশেরও বেশি। সূত্র জানায়, সর্বশেষ অর্থনৈতিক শুমারির তথ্যানুযায়ী সারা দেশে স্থায়ী অর্থনৈতিক ইউনিটের সংখ্যা ৬২ লাখ ৪৪ হাজার ২১৪টি। তার মধ্যে গ্রামাঞ্চলে ৩৯ লাখ, শহরে ২৩ লাখ। ওসব প্রতিষ্ঠানের মধ্যে বিজনেস আইডেন্টিফিকেশন নম্বর (বিআইএন) বা ভ্যাট (মূসক) নিবন্ধনধারী প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা মাত্র পাঁচ লাখ ৭০ হাজার। আর স্থায়ী অর্থনৈতিক ইউনিটগুলোর মধ্যে ভ্যাট পরিশোধকারী হিসেবে নিবন্ধিত প্রতিষ্ঠান আছে স্থায়ী অর্থনৈতিক ইউনিটের ৯ শতাংশের কিছু বেশি। স্থায়ী অর্থনৈতিক ইউনিট বলতে প্রধানত একটি স্থায়ী জমিতে স্থায়ী কাঠামোর ওপর গঠন করা প্রাতিষ্ঠানিক ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানকে বোঝানো হয়েছে। প্রাতিষ্ঠানিক ইউনিটগুলোর বেশির ভাগ করজালের বাইরে থাকায় সরকারের রাজস্ব আদায়েও বিপুল ঘাটতি থেকে যাচ্ছে। অথচ ভ্যাট আইন অনুযায়ী দেশের অর্থনৈতিক কার্যক্রমে নিয়োজিত প্রতিটি ইউনিটেরই ভ্যাট নিবন্ধন বাধ্যতামূলক। ওসব প্রতিষ্ঠানের ভ্যাট পরিশোধের হার বার্ষিক টার্নওভারের ওপর নির্ধারণ করা হয়। যদি কোনো ব্যবসার বার্ষিক টার্নওভার ৩০ লাখ টাকার নিচে হয় তাহলে ওই প্রতিষ্ঠানকে ভ্যাট দিতে হবে না। ৩০ লাখ থেকে ৫০ লাখ টাকার মধ্যে হলে ৩ শতাংশ ভ্যাট দিতে হবে। আর ৫০ লাখ টাকার বেশি হলে ১৫ শতাংশ ভ্যাট দিতে হবে। বর্তমানে শুধু জুয়েলারি খাতে ৮০ শতাংশ প্রতিষ্ঠান নিবন্ধনের বাইরে রয়েছে। সূত্র আরো জানায়, ভ্যাট নিবন্ধনের বাইরে থাকা সারা দেশের সব প্রতিষ্ঠানকে শিগগিরই ভ্যাট নিবন্ধনের আওতায় নিয়ে আসার উদ্যোগ নিয়েছে এনবিআর। তাছাড়া দেশের বেশির ভাগ ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের ভ্যাট নিবন্ধন না থাকার কারণে এনবিআরের ভ্যাট বিভাগ কিছু সেবা গ্রহণের ক্ষেত্রে বিআইএন বাধ্যতামূলক করার উদ্যোগ নিচ্ছে। ফলে ভ্যাটযোগ্য প্রতিষ্ঠানগুলো ওসব সেবা নিতে গেলে নিবন্ধন গ্রহণ ও ভ্যাট পরিশোধ করতে বাধ্য হবে। এদিকে ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানগুলোকে ভ্যাট নিবন্ধনের আওতায় আনতে না পারাকে বিশ্লেষকরা এনবিআরের সক্ষমতার অভাব বলে মনে করছে। আর এনবিআরের ভ্যাট রাজস্ব আহরণ কম হওয়ার পেছনে সংস্থাটির নীতিগত ও কাঠামোগত দুর্বলতাকে দায়ী করছে ব্যবসায়ী নেতারা। ফলে দেশে ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান অনেক হলেও ভ্যাট নিবন্ধনকারীর সংখ্যা কম। এটি বাড়াতে ব্যবসায়ী সংগঠনগুলোরও সহায়তা প্রয়োজন। তাছাড়া দেশের জিডিপির অতিরঞ্জিত হিসাবও কর—জিডিপি অনুপাত কম হওয়ার অন্যতম কারণ। হিসেবে দেখছেন অনেকে। অন্যদিকে অর্থনৈতিক ইউনিটগুলোর ৯০ শতাংশেরও বেশি ভ্যাটজালের আওতার বাইরে থাকা প্রসঙ্গে এনবিআর কর্মকর্তারা বলছেন, বিবিএসের পরিসংখ্যানে যে স্থায়ী অর্থনৈতিক ইউনিটের তথ্য উঠে এসেছে, তাদের সবাই ভ্যাটযোগ্য নয়। ট্রেডার ও সেবা প্রদানকারীদের একটা বড় অংশ অনিবন্ধিত। তাদের মার্কেট এবং এলাকাভিত্তিক সমিতি ও অ্যাসোসিয়েশন রয়েছে। তারা নানা ধরনের কৌশলে নিবন্ধন নেয় না। নিবন্ধন বাড়াতে ভ্যাট বাস্তবায়ন অনুবিভাগ বেশ কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে। শিগগিরই পাওয়া যাবে এর সুফল।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর
© All rights reserved © 2013-2022 dainikdristipat.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com