মঙ্গলবার, ১৪ জানুয়ারী ২০২৫, ০৫:৪৩ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম ::
দেবহাটায় তারুণ্যের উৎসব উদ্বোধন সাতক্ষীরায় প্রাথমিক বিদ্যালয় ফুটবল টুনামেন্টের আলো ছড়ানো উদ্বোধন \ প্রথম খেলায় হাসলো দেবহাটা বালিকা দল দেবহাটায় নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নেত্রী নিশি গ্রেফতার ডুমুরিয়ায় তারুণ্য উৎসবে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মেলা অনুষ্ঠিত ডুমুরিয়ায় তারুণ্যের উৎসব’২৫ উদযাপিত সাতক্ষীরায় পুলিশ নারী কল্যাণ সমিতি ব্যাডমিন্টন টুর্নামেন্ট উদ্বোধন লস অ্যাঞ্জেলসে দাবানলে মৃত্যু ২৪ সাতক্ষীরা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা ও পুরস্কার বিতরণ না ফেরার দেশে চলে গেলেন সাংবাদিক মিজানুর আশাশুনি পানিতে ডুবে বৃদ্ধের মৃত্যু

সাতক্ষীরায় চার ইউনিয়নের ভাসমান সেতু

দৃষ্টিপাত ডেস্ক :
  • আপডেট সময় সোমবার, ১৩ জানুয়ারী, ২০২৫

কে এম আনিছুর রহমান, সাতক্ষীরা \ নদী দখল করে ব্যবসায়ী নেতার কোটি কোটি টাকার কারখানা নির্মাণ প্রকাশ্য দিবালোকে বুক ফুলিয়ে নদী দখল সম্ভবত বাংলাদেশেই সম্ভব। বাংলাদেশ গোটা বিশ্বে সম্ভবত একমাত্র আশ্চর্যজনক উদাহরণ, যেখানে দেশের জাতীয় সম্পদ নদীগুলোর একাংশ ভরাট করে স্রেফ ব্যক্তিগত সম্পত্তিতে পরিণত করা হচ্ছে। আর এসব জমি কেবল প্রভাবশালীরা ভোগ করতে পারে। সাতক্ষীরা শহরের অদূরে বীনেরপোতা এলাকা। যেখান দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে বেতনা নদী। বেতনার দুইধারে রয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ডের রাস্তা। রাস্তার একপাশে মৃত প্রায় বেদনা নদী, অপর পাশে নির্মাণ করা হচ্ছে ব্যবসায়ী নেতার প্রায় ৫০ কোটি টাকার কারখানা। আর প্রকাশ্য নদী দখল করে কারখানা নির্মাণের মহাকর্মযোগ্য চললেও নীরব ভূমিকা পালন করছে প্রশাসন। তবে ওই ব্যবসায়ী নেতার দাবি তিনি রেকর্ডিয় জমিতে কারখানা নির্মাণ করছেন। অভিযোগ রয়েছে ভোমরা সি অ্যান্ড এফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আবু হাসান নদীর জায়গা দখল করে নির্মাণ করছে হাসান ফুড অ্যান্ড বেভারেজ লিমিটেডে। সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, নদীর ভেতরে প্রায় ১৫ বিঘা জমির ওপর নির্মাণ করা হচ্ছে হাসান ফুড অ্যান্ড বেভারেজ লিমিটেডে কয়েকটি কারখানা। যেখানে ইতোমধ্যে নির্মাণাধীন রয়েছে বেকারি, অয়েল ও মসলা তৈরির কারখানা। এর মধ্যে বেকারি এবং মসলার কারখানা তৈরির কাজ প্রায় শেষ দিকে। স্থানীয় বাসিন্দা মমিনুর রহমান বলেন, এই নদীতেতে আগে স্টিমার চলত। নদীতে বড় বড় স্রোত দেখতাম জেলেরা মাছ ধরত, এখন সেই নদী দখল করে কারখানা নির্মাণ করছে। প্রভাবশালী ব্যক্তি হওয়ার ভয়ে নদী দখলের বিরুদ্ধে কথা বলতে পারি না। পানি সরবরাহ না থাকায় কৃষি জমিতে ফসল হচ্ছে না, বৃষ্টিতে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হচ্ছে। বছরের ৩ থেকে ৪ মাস পানিতে তলিয়ে থাকে ঘরবাড়ি। আমরা চাই নদী অবমুক্ত করা হোক, দখল উচ্ছেদ করা হোক। এদিকে, কারখানার কোল ঘেঁষে ছোট্ট কুঁড়ে ঘরে বসবাস করেন বৃদ্ধা ভূমিহীন আলেয়া বেগম। আলেয়া বেগম জানিয়েছেন, সরকারি জায়গা ভূমিহীনদের অধিকার, কিন্তু ভূমিহীনরা সরকারি জমি পাচ্ছে না, সব বিত্তবানরা দখল করে নিচ্ছে। নদী দখল করে সেখানে বড় বড় বিল্ডিং তৈরি করছে। স্থানীয় বাসিন্দা রাখাল মণ্ডল বলেন, এই বেতনা নদীতে একসময় স্টিমার চলত। নদীতে মাছ ধরত বড় বড় ট্রলার ভিড়ত। কিন্তু নদী দখলের ফলে নদীর যৌবন হারিয়ে গেছে। দু’পাশে দখল করে প্রভাবশালীরা স্থাপনা নির্মাণ করেছে। তিনি নদী দখল করে গড়ে তোলা স্থাপনা উচ্ছেদের দাবি জানিয়েছেন। সমাজকর্মী জহুর হোসেন বলেন, নদী দখল করে তিন চার তলা ফ্যাক্টরি করেছে অথচ প্রশাসন কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না। এভাবে যদি নদী দখল হতে থাকে তাহলে একসময়ে বাংলাদেশে নদী থাকবে না। সবই দখলদারিত্বের দখলে চলে যাবে। এসব বিষয়ে ভোমরা সি অ্যান্ড এফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ও হাসান ফুড অ্যান্ড বেভারেজ লিমিটেডে ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবু হাসান বলেন, নদী দখল করে কারখানা নির্মাণের অভিযোগটি সত্য নয়। আমরা যে স্থাপনা নির্মাণ করেছি সেটি রেকর্ডিং জমি। ওখানে আমাদের ৮ বিঘা রেকর্ডিং জায়গা কিছুটা পানি উন্নয়ন বোর্ডের জায়গা আছে যেখানে আমরা কাজ বন্ধ রেখেছি। সাতক্ষীরার জেলা প্রশাসক মোশতাক আহমেদ বলেন, পরিবেশ উপদেষ্টার নির্দেশনায় অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে কাজ করছে জেলা প্রশাসন। বিনেরপোতা এলাকায় নদীর জায়গায় নির্মাণাধীন হাসান ফুড অ্যান্ড বেভারেজ লিমিটেডে কারখানা বিষয়টি আমাদের নজরে এসেছে। ইতোমধ্যে এডিসি রেভিনিউকে বিষয়টি খতিয়ে দেখার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। আমরা সরেজমিনে নদীর সীমানা নির্ধারণ করে অবৈধ স্থাপনার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর
© All rights reserved © 2013-2022 dainikdristipat.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com