রবিবার, ১৮ মে ২০২৫, ০৪:০৪ পূর্বাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম ::
সুন্দরবনে বিএসএফের রেখে যাওয়া ৭৫ জনকে পরিবারের কাছে হস্তান্তর দেবহাটা বিএনপির সদস্য নবায়ন উদ্বোধনী আয়োজনে জেলা বিএনপির আহবায়ক রহমাতুল্লাহ পলাশ বিষ্ণুপুর ইউনিয়ন যুবদলের প্রস্তুতি সভা অনুষ্ঠিত কলারোয়ায যুবদল নেতার ওপর হামলার ঘটনায় নিন্দা ও প্রতিবাদ মুন্সীগঞ্জে তাপদাহে পানি ও খাবার স্যালাইন বিতরণ শ্রীউলায় ইউনিয়ন পর্যায়ে সমন্বয় সভা অনুষ্ঠিত তারুণ্যের সমাবেশ সফল করতে স্বেচ্ছাসেবক দলের প্রস্তুতি সভা ভাড়াশিমলায় ২৫০ প্রান্তিক কৃষানের মধ্যে সবজির বীজ বিতরণ খুলনার সাবেক মহিলা কাউন্সিলর গ্রেফতার বসন্তপুর ফকিরপাড়া জামে মসজিদে বার্ষিক ওয়াজ মাহফিল

সাতক্ষীরার আম বাজার মৃত্যুমুখে ঃ নানামুখি কারনে ক্রেতাদের আগ্রহে ভাটা ঃ রক্ষা করতে হবে এই শিল্পকে

দৃষ্টিপাত ডেস্ক :
  • আপডেট সময় মঙ্গলবার, ৯ মে, ২০২৩

দৃষ্টিপাত রিপোর্ট \ সাতক্ষীরার আম জগৎ বিখ্যাত। রাজধানীর বাজার সহ দেশের অপরাপর বিভাগীয় শহর এবং জেলা শহর গুলো সাতক্ষীরার আমের সুনাম, সুখ্যাতি আর চাহিদার শেষ নেই। আর তাই গত কয়েক বছর যাবৎ এই জেলায় বানিজ্যিক ভাবে আম চাষ শুরু হয়েছে। রাজধানীর পাইকার ব্যবসায়ী ও আড়ৎদাররা বিপুল পরিমান অর্থ আম চাষে বিনিয়োগ করে চলেছে। হাজার হাজার মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টির পাশাপাশি আম চাষী এবং আম ব্যবসায়ীদের ক্রমবর্ধমান অগ্রগতি হয়েছে। সাতক্ষীরার অর্থনীতিতে আম বিশেষ ভূমিকা রাখছে। আম মৌসুমে জেলার গ্রামীন জনপদের গ্রামীন জীবন যাত্রার মান বেড়ে যায়। গ্রামীন অর্থনীতি চাঙ্গা হওয়ার পাশাপাশি সুবাতাস বইতে থাকে, কিন্তু এবারের মৌসুমে বাতাস যে প্রতিকুলে বইছে, চাষীরা বিষন্নতায় হতাশায় ভুগছে তাদের কাঙ্খিত উৎপাদিত আমের বাজার মূল্য আশানুরুপ নয়। এবার জেলায় আমের বাম্পার ফলন হওয়ায় আম চাষী সহ ব্যবসায়ী এবং এই চাষের সাথে সংশ্লিস্টরা আশায় বুক বেঁধে ছিল যে গত বছরের আম চাষের লোকসান পুষিয়ে নিতে পারবেন। কিন্তু সময় পরিবেশ, পরিস্থিতি আর বাস্তবতা আমের কাঙ্খিত মূল্যের ছন্দপতন ঘটেছে। ব্যবসায়ীদের মাঝে লোকসানের শঙ্কা পুরোপুরি স্পষ্ট হয়েছে। এই সময়ে বাজারে বা গাছে গোবিন্দ ভোগ আমের অস্তিত্ব থাকে না কিন্তু ব্যবসায়ীরা আমের মূল্য না পাওয়ায় আম ভাংছে না। অন্যান্য বছর গোবিন্দভোগ আম কেজি প্রতি সহনীয় বাজারে ৫০/৬০ টাকায় বিক্রি হলেও বর্তমান সময়ে সাতক্ষীরার বাজার গুলোতে গোবিন্দ ভোগ কেজি প্রতি বিক্রি হচ্ছে ৩০/৩৫ টাকায়। এমন লোকসান কিভাবে পোষাবেন ব্যবসায়ীরা। ঢাকার ব্যাপারীরা মন প্রতি গোবিন্দভোগ ১২০০ থেকে ১৪০০ টাকায় নির্ধারন করেছে। সাতক্ষীরার সদর উপজেলা, কলারোয়া, দেবহাটা হতে এই সময় গুলোতে শত শত ট্রাক ভর্তি আম রাজধানী সহ দেশের অন্যান্য বাজারে গেলেও ঢাকার বাজারের চাহিদার ঘাটতি থাকায় ঢাকা ব্যবসায়ীরা আম ক্রয়ে আগ্রহ দেখাচ্ছে না। আম ব্যবসার সাথে জড়িত বাগান মালিক, ব্যবসায়ী, চাষী, আড়ৎদার, পাইকার ও খুচরা বিক্রেতা ক্রেতা, শ্রমিক শ্রেনি, পরিবহন ব্যবস্থাপনা সহ জড়িত হাজার হাজার মানুষের মাঝে সুখ নেই, অস্বস্তি আর ঋনগ্রস্থ হওয়ার মহাক্ষন বিরাজ করছে। জেলার বাইরে চাহিদা না থাকার পাশাপাশি সাতক্ষীরার বাজার গুলোতেও ক্রেতাদের চাহিদার ঘাটতি পরিলক্ষিত হচ্ছে। গত কয়েকদিন যাবৎ সাতক্ষীরার বড় বাজারের আমের পাইকারী আড়ৎ, খুচরা বাজার সহ মফস্বলের বাজার গুলো পরিদর্শনে দেখা গেছে আমের মুল্য যেমন কম অনুরুপ ভাবে ক্রেতাদের আগ্রহের ঘাটতি ব্যাপক। আম চাষী, ব্যবসায়ী সহ সংশ্লিষ্টদের সাথে কথা বলে জানাগেছে এবার আবহাওয়ার কারনে গোবিন্দ ভোগ অনেক আগেই পাক ধরেছে। অন্যদিকে মে মাসের পাঁচ তারিখে গোবিন্দ ভোগ ভাঙ্গার সময় নির্ধারন করায় অন্যদিকে রাজশাহীর আম রাজধানী ঢাকা সহ সাতক্ষীরার বাজারে আসায় গোবিন্দভোগের বাজার ছন্দপতন ঘটেছে। আবার এক শ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ীরা অপরিপক্ক আম রাসায়নিক পদার্থের মাধ্যমে কৃত্রিম ভাবে পাকিয়ে বাজার জাত করনের ঘটনায় ক্রেতাদের পাকা আম বিমুখ করেছে বলেও অনেকের অভিব্যক্তি। সাতক্ষীরার প্রশাসন অবশ্য অপরিপক্ক আম কৃত্রিম ভাবে পাকানোর বিরুদ্ধে বলিষ্ট ভূমিকা রেখে প্রশংসিত হয়েছে। মানব দেহের জন্য মারাত্মক ক্ষতির কারন রাসায়নিক পদার্থ। আর এ অবৈধ, অনৈতিকতা পাকা আমের সাথে জড়িত হওয়ায় রাজধানী বাসি ও আমক্রয় করতে ভরসা পাচ্ছে না। ব্যবসায়ী সহ আম বাগান মালিকরা আশাবাদী আগামী দুই এক দিনের মধ্যে হীমসাগর আম ভাংগার পর পরিস্থিতির পরিবর্তন ঘটতে পারে কিন্তু গোবিন্দ ভোগ বাজার ব্যাপক লোকসানের মুখে ঠেলে দিয়েছে। আর তাই ব্যবসায়ীদের অনেকে হতাশা প্রকাশ করে বলছেন যে পাকা আমের মৃত্যু ঘটেছে। ব্যবসায়ীরা জানান বিগত দিনে করোনা মহামারীর সময় গুলোতেও আমের বাজার এমন নিন্মমুখি ছিল না। সাতক্ষীরার আম শিল্পকে রক্ষা করতে হবে, আম নির্ভর অর্থনীতিকে বাঁচিয়ে রাখতে হবে। আম চাষীদের এগিয়ে নিতে হবে, চাষী যদি লোকসানের মুখে পড়ে তাহলে এই শিল্প পিছিয়ে পড়বে। আবহাওয়া পরিস্থিতি বিবেচনা করে এবং অপরিপক্ক আম কৃত্রিম ভাবে পাকানোর অনৈতিকতা বন্ধ করার বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে। বদনাম ঘোচাতে হবে। আনন্দে আর নির্ভাবনায় সাতক্ষীরার আম গ্রহন করবে। সামান্যতম দ্বিধাদ›দ্ব, আশঙ্কা থাকবে না। আগামীতে ঘূর্ণিঝড়ের আভাস দেখা দিয়েছে এ জন্যও চাষীদের মাঝে এক ধরনের আতঙ্ক বিরাজ করছে। অনেকে কমমূল্যে আম বিক্রি করছে যে কারনেও আম বাজার নিন্মমুখি। সাতক্ষীরার সোনালী আম সত্যিকারের সোনালী সময় অতিক্রম করুক এই প্রত্যাশা জেলাবাসির।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর
© All rights reserved © 2013-2022 dainikdristipat.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com