মীর আবু বকর/মাছুদুর জামান সুমন \ সাতক্ষীরার ঈদ বাজার জমতে শুরু করেছে। শহরের বিপনী বিতান গুলোতে ক্রমান্বয়ে বিক্রয় যেমন বেড়েছে অনুরুপ ভাবে ক্রেতাদের উপচে পড়া ভিড় পরিলক্ষিত হচ্ছে। গত কয়েক দিনের ব্যবধানে ঈদ বাজার দৃশ্যতঃ জমজমাট হয়ে পড়েছে ক্রেতাদের উলেখযোগ্য অংশ মহিলা। সাতক্ষীরা কালিগঞ্জ সড়কের যানবাহন গুলোতে ক্রেতারা সদলবলে জেলা শহরে আসছে। যাত্রীবাহী যানবাহনের পাশাপাশি মাইক্রো, মহেন্দ্র, ইজিবাইক সহ অপরাপর যানবাহন চেপে আসছে ক্রেতারা। গত দুইদিন শহরের বিভিন্ন বিপনী বিতান এবং ফুটপথের টং দোকান গুলো পরিদর্শনে দেখা গেছে বিক্রেতা বিক্রয়ে ব্যস্ত সেই সাথে ক্রেতাদের সাথে দরদাম ও পন্য প্রদর্শনে ব্যস্ত সময় পার করছে। স্বনামধন্য বিপনী বিতান গুলো ক্রেতাদের আকর্ষন বৃদ্ধি করনে মার্কেটের সামনে প্রবেশ পথে এবং শহরের সড়ক গুলোতে ব্যানার, ফেস্টুন দৃশ্যধারী গেট তৈরী করেছে। মার্কেট গুলোর উলেখযোগ্য অংশ আলোক সজ্জায় সজ্জিত করা হয়েছে আর এসবই ক্রেতা সাধারনের দৃষ্টি আকর্ষন। ঈদ মানেই খুশি আর এই খুশির বরতা বিকশিত ও স্বয়ংসম্পূর্ণতায় প্রয়োজন নতুন পোষাক, নতুন জুতা এবং নানান ধরনের প্রসাধনী। গত কয়েকদিনে দেখা গেছে নতুন পোষাকের পাশাপাশি জুতার দোকান গুলোতে ক্রেতাদের ব্যাপক ভিড়। ঈদুল ফিতরে বরাবরই পাঞ্জাবীর চাহিদা বিশেষ ভাবে লক্ষনীয় এই সময় গুলোতে সাতক্ষীরার মার্কেট গুলোতে পাঞ্জাবী বিক্রি বেড়েছে। মহিলাদের ম্যাচিং থ্রি পিচ এর চাহিদা ব্যাপক ভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। থ্রিপিচ ও শাড়ীর সাথে সামঞ্জস্য রেখে নানান ধরনের কসমেটিকস মিলিয়ে নিচ্ছে, আর তাই কসমেটিকস এর দোকান গুলোতেও যেমন ভিড় তেমন বিক্রি। শহরের বিপনী বিতান গুলোর পাশাপাশি পাকাপুল মার্কেট, থানা সড়ক এর ব্যাপক ক্রেতার উপস্থিতি বলে দিচ্ছে কেনা কাটার জন্য কেবল বড় বড় আলোক সজ্জা সম্বলিত মার্কেট নয় ও প্রসাধনী সামগ্রী ও ভরসা। বাচ্চাদের বাহারী পোশাকের উপস্থিতি এবারের ঈদ বাজারের বিশেষ আকর্ষন। কিশোর ও তরুনীদের পোষাকের চাহিদা ও বিক্রি ও সমানতালে চলছে। ঈদ বাজার শুধু মাত্র নতুন পোষাক কসমেটিকস বা জুতা ও স্যান্ডেল নির্ভর নয়, গত কয়েকদিন যাবৎ ঘরগৃহস্থালীর পণ্য সামগ্রীর বিক্রি বেড়েছে। বিশেষ করে নতুন ফার্ণিচার ডাইনিং টেবিল, চেয়ার, ইলেকট্রনিক্স সামগ্রীর বিক্রি বেড়েছে। ঘরের ফিটিংস সামগ্রীর বিশেষ করে পর্দা, বেডকভার, পানির ও বৈদ্যুতিক লাইনের সামগ্রী বিক্রি চোখে পড়ার মত। ঈদ বাজারের বিশেষ আকর্ষন টুপি আর আতর। থানা সড়কের মার্কেট তাই টুপি ও আতরের দোকান গুলোতে ক্রেতাদের উচ্ছল ভিড় থামতে চাইছে না। ক্রেতাদের সব স্রোত মিশেছে মার্কেটে মার্কেটে। অভিজাত শ্রেনি ইতিপূর্বে বড় বড় বিপনী কেন্দ্র গুলোতে ভিড় জমালেও বর্তমান সময় গুলোতে মধ্যবিত্ত শ্রেনির ন্যায় সব ধরনের ক্রেতারা থানা সড়ক ও পাকাপুলের ছোট ছোট দোকান গুলোতে পছন্দের সামগ্রীর খোজ করছে। সাধ আর সাধ্যের ব্যবধানে ক্রেতারা এক মার্কেট হতে অন্য মার্কেটে ছুটছে। এবারের ঈদ বাজার ক্রেতাদের জন্য বিশেষ স্বস্তির বিষয় পরিপূর্ণ নিরাপত্তার সাথে কেনাকাটা করছে। মার্কেট সড়ক পথ গুলোতে পুলিশী উপস্থিতি ও নিরাপত্তা চোখে পড়ার মত। থানা সড়ক, লাবনী মোড়, পাকা পুল, বড় বাজার, বাজার মোড়, যানজটের কারন হিসেবে চিহিৃত হলেও ট্রাফিক পুলিশের যতœশীল দায়িত্বপালনে ক্রেতারা নির্বিঘেœ যানজট মুক্ত পরিবেশ স্বাচ্ছন্দে চলাচল করছে। ক্রেতা ও বিক্রেতাদের দরদামে দর কষাকসির বিষয়টি উপভোগ্য। বিক্রেতা ও ক্রেতাদের সাথে আলাপ করে ভিন্ন ভিন্ন অভিজ্ঞতার বিষয়টি এমনই শহরের সুমাইয়া বোরকা এন্ড থ্রিপিস এর স্বত্ত¡াধিকারী হাফিজুর রহমান দৃষ্টিপাতকে জানান সাধারন সিট কাপড়ে ১৫/২০ টাকা এবং বোরকার কাপড়ে ৫০/৬০ টাকা মুল্যবৃদ্ধি ঘটায় ক্রেতাদের চাহিদা কিছুটা কম। এমএম ফ্যাশনের মূল্য গত বছর অপেক্ষা বৃদ্ধি পাওয়ায় সাধ আর সাধ্যের ব্যবধানে ক্রেতারা যাচাই করছে। ক্রেতা জেসমিন নাহার দৃষ্টিপাতকে জানান নতুন পোশাক এর মূল্য যাচাই ও পছন্দ করতে সময় নষ্ট হচ্ছে। সাথী খাতুন নামের এক ক্রেতা বলেন মূল্য বেশী হওয়ায় বাজেট সংকুচিত করতে হচ্ছে। চাহিদা কাটছাট করছি। শহরের পাশাপাশি মফস্বল এলাকার মোকামগুলোতেও জমে উঠেছে ঈদ বাজার, সব শ্রেনির মানুষ ঈদের নতুন পোষাকের জন্য ছুটছে। বিশেষ করে শিশু ও মহিলাদের পোষাক এর বিক্রি ও চাহিদা সর্বাধিক। দর্জির দোকান গুলোতে পূর্বের ন্যায় ভিড় নেই। সব মিলে সাতক্ষীরার ঈদ বাজারে প্রতিদিনই ভিড় বাড়ছে সেই সাথে বিক্রয় বাড়ছে।