চিংড়ী রেনুর মানহীনতা ও সংকট, চিংড়ী উৎপাদনে বাধাগ্রস্থ
দৃষ্টিপাত রিপোর্ট \ দেশের বৈদেশিক মুদ্রা উপার্জনের অন্যতম মাধ্যম সাদা সোনা খ্যাত চিংড়ী শিল্প নানান ধরনের প্রতিবন্ধকতার মুখে। বারবার ভাইরাস আক্রমনের কল্যানে ক্ষত বিক্ষত চিংড়ী শিল্প এবার রেনু পোনার সংকটের আবওে এবং মানহীন রেনুর উপস্থিতি আর তা ঘেরে অবমুক্ত করায় সাতক্ষীরার শত শত চিংড়ী ঘের উৎপাদন বিমুখ হয়ে পড়েছে। বর্তমান সময়ে কক্সবাজারের হ্যাচারী গুলোতে দেশী মা বাগদার মাধ্যমে রেনু উৎপাদন হ্রাস পাওয়ায় এমন সংকট বলে সংশ্লিষ্টরা জানান। সাতক্ষীরার এক শ্রেনির রেনু পোনা ব্যবসায়ীরা কক্সবাজারের রেনু বলে বিভিন্ন ব্যান্ডের রেনু বিক্রয় করছে এবং তা ঘের ব্যবসায়ীরা ঘেরে অবমুক্ত করে পরবর্তীতে উক্ত রেনুর অস্তিত্ব পাচ্ছে না অনেকে। তথ্যনুসন্ধানে জানাগেছে বিগত সময়গুলোতে মৎস্য সম্পদ রক্ষায় সাগরে সব ধরনের মৎস্য আরোহনের উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করায় বিদেশী মাদারের মাধ্যমে রেনু উৎপাদনে নামে কক্সবাজার কেন্দ্রীক হ্যাচারী গুলোর একটি অংশ। যার ফলাফল খুব বেশী সুখকর ছিলনা। আমেরিকান মাদার খ্যাত রেনু পোনা ঘেরে অবমুক্ত করনের পর দুই তিন দিন দেখতে পাওয়া যায় পরবর্তি দিনগুলোতে উক্ত রেনুর অস্তিত্ব বিলোপ ঘটে এমন অভিজ্ঞতা সম্পন্ন ঘের ব্যবসায়ীদের। ঘের ব্যবসায়ীরা সাতক্ষীরায় আসছে, বক্সে পরিচিত কোম্পানীর নাম ক্রেতা তথা ঘের ব্যবসায়ীরা সঙ্গত কারনে দেশী মাদারের রেনু ভেবে তা সংগ্রহ পরবর্তি ঘেরে ছাড়ছেন, কিন্তু উক্ত রেনু দেশী মাদারের নয়, আমেরিকান মাদারের এ কারনে ঘেরে রেনু ফুটছে না। অনুসন্ধানে জানাগেছে কক্সবাজারের দুই একটি হ্যাচারী দেশী মাদারের রেনু উৎপাদন করলে ও তা কক্সবাজার হতে সরাসরি বিক্রি হচ্ছে। ঘের ব্যবসায়ীদের প্রশ্ন স্থানীয় আমদানী কারকরা প্রকৃত মাদারের রেনু অবস্থান ব্যাখ্যা করলে ক্রেতা তথা ঘের মালিকরা বুঝতে পারবেন কোন ব্যান্ডের রেনু কোন মাদারের। সাতক্ষীরার এক শ্রেনির রেনু ব্যবসায়ীরা ঘের ব্যবসায়ীদের সাথে প্রতারনা করছে যে কারনে আমেরিকান মাদারের রেনু দেশী মাদারের রেনু এমন বিশ্বাস করে ঘেরে ছাড়ছে। তথ্যানুসন্ধানে আরও জানাগেছে সাতক্ষীরার সকল রেনু ব্যবসায়ী নয় কোন কোন ব্যবসায়ী প্রতারনা করছে। সাতক্ষীরার অন্যতম রেনু পোনা ব্যবসায়ী মেহজাবিন ফিস এর স্বত্ত¡াধিকারী আজমল এর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন আমার প্রতিষ্ঠান কোন মাদারের রেনু তা স্পষ্ট করে বিক্রি করছি। তিনি জানান আমেরিকান মাদার এবং দেশী মাদার সব মাদারের রেনু বাজারে পাওয়া যাচ্ছে। অন্যান্য বছরের ন্যায় বর্তমান মৌসুমে রেনু পোনা যথাযথ ভাবে ঘেরে ফুটেনি এমন অভিযোগ ঘের ব্যবসায়ীদের। বছরের শুরুতেই এবার রেনু মান নিয়ে প্রশ্ন ছিল, যথাযথ গুনগত মান বজায় না থাকায় সাতক্ষীরার বিপুল সংখ্যক ঘের ব্যবসায়ীরা স্থানীয় পর্যায়ে খুলনা, ডুমুরিয়া, শ্যামনগরের হ্যাচারী গুলোতে উৎপাদিত রেনুর উপর নির্ভরশীল হয়ে পড়ে এবং অপেক্ষাকৃত কম মূল্যের রেনুর ফলাফল ভাল ছিল। হ্যাচারী ও রেনু উৎপাদনের সাথে জড়িতদের সাথে কথা বলে জানাগেছে বর্তমান সময় গুলোতে নফলি মা মাদার (রেনু উৎপাদনের মাধ্যমে) এর দু®প্রাপ্যতার কারনে উৎপাদনে যেতে পাচ্ছে না অনেকে। ঘের ব্যবসায়ীদের অভিযোগ রেনুরমূল্য বৃদ্ধি গুনগত মানহীন এটাই শেষ কথা নয়। মীরে কত দেওয়া এক শ্রেনির বিক্রেতাদের যেন ব্যবসা মনে করছেন। কক্সবাজার এবং স্থানীয় পর্যায়ের রেনু মীর (গোনায়) সমান ভাবে পারদর্শী, বিষয়টি এমন সব পক্ষই মীরে কম নেওয়ায় ক্ষেত্রে অতুলনীয়। রেনু পোনার সংকট এবং গুনগত মানহীন রেনুর কল্যানে চিংড়ী উৎপাদনে যে মারাত্মক ঢস নামতে চলেছে তা কেবল ঘের ব্যবসায়ীরা লোকসানের মুখে বা সর্বশান্ত হবে না দেশ বৈদেশিক মুদ্রা উপার্জন হতে বঞ্চিত হবে। মৌসুমের শুরুতে রেনু পোনার গুনগত মান খুব বেশী ভাল ছিল না তবে মূল্য ছিল সহনশীল, বর্তমান সময়ে রেনু পোনার মান যেমন ভাল না অনুরুপ মূল্য বৃদ্ধি ক্ষেত্র অতিক্রম করেছে। দেশের চিংড়ী শিল্পের উন্নয়নে, উৎপাদনে, চিংড়ী ঘের সহ ঘের ব্যবসায়ীদের রক্ষা করতে দেশী মাদারের রেনুর বিকল্প নেই। সাতক্ষীরার মাটি, পানি দেশী মাদারের রেনুর জন্য উপযুক্ত এবং মানের দিক দিয়ে এগিয়ে যে কারনে চিংড়ী শিল্পকে বাঁচাতে দেশী মাদারের বিকল্প নেই।