রবিবার, ১৯ জানুয়ারী ২০২৫, ০৩:১৩ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম ::
শ্যামনগরে বিস্ফোরক মামলায় ছাত্রলীগ নেতা সাগর গ্রেপ্তার সাতক্ষীরা পাবলিক স্কুল এন্ড কলেজের পিঠা উৎসবের সমাপনী ও পুরস্কার বিতরণ শ্যামনগরে হাজী ব্রিকস ভাঙচুর, মালামাল লুটপাটে ১কোটি টাকার বেশি ক্ষতি আশাশুনি যুব দায়িত্বশীল শিক্ষা শিবির অনুষ্ঠিত সাতক্ষীরা সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় বার্ষিক প্রীতিভোজ উপলক্ষে রাফেল ড্র আশাশুনি উপজেলা বিএনপির প্রস্তুতি সভা তালায় চুরির আতঙ্কে ব্যবসায়ী ও গ্রামঞ্চলের মানুষ বড়দলে হরতালের প্রতিবাদে প্রতিবাদ মিছিল কয়রায় জাতীয় গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্ট অনুর্ধ্ব—১৭ ফাইনালে সদর ইউনিয়ন চ্যাম্পিয়ন কয়রায় সুধি সমাবেশে পুলিশ সুপার বনদস্যু, মাদক ও সন্ত্রাস মুক্ত উপজেলা গড়ার প্রত্যয়

সাতক্ষীরার চিংড়ী কেবল বিশ্ব বাজারে নয়, দেশীয় বাজারেও বিক্রি হচ্ছে অর্থনীতিতে বইছে সুবাতাস

দৃষ্টিপাত ডেস্ক :
  • আপডেট সময় শনিবার, ৮ জুলাই, ২০২৩

দৃষ্টিপাত রিপোর্ট \ বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রা উপার্জনের ক্ষেত্রে গত কয়েক যুগ যাবৎ চিংড়ী শিল্প কাঙ্খিত ভূমিকা পালন করে চলেছে। দেশের বৈদেশিক বাণিজ্যে এই শিল্প যেমন অভূতপূর্ব সাফল্য এনেছে অনুরুপ ভাবে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বৃদ্ধিতে সহায়তা করছে। সা¤প্রতিক বছর গুলোতে চিংড়ী বিশ্ব বাজারে রপ্তানীর পাশাপাশি দেশীয় বাজারেও অর্থনৈতিক গুরুত্ব বহন করছে। অন্ততঃ গত এক দুই বছর যাবৎ দেশীয় চিংড়ী রাজধানী ঢাকার বাজারে ব্যাপক চাহিদার ক্ষেত্র নিশ্চিত করেছে। এক সময় ছিল যখন চিংড়ী চাষ, উৎপাদন এবং বাজারজাত করন সবই ছিল বিশ্ব বাজার নির্ভর কিন্তু সময়ের পরিবর্তনে আর বাস্তবতার নিরিখে এদেশের জনমানুষ বাগদা চিংড়ী নিজেদের সাথে সম্পৃক্ত করেছে। মানুষের জীবন যাত্রার উন্নতি ঘটায় এবং বিশ্ব ব্যবস্থাপনার সাথে একত্রীভূত করনের মাধ্যমে এই শিল্প বিশ্ব বাজার নির্ভরতা হ্যাস করছে। চিংড়ী ব্যবসায়ী সহ এই পেশার সাথে সংশ্লিষ্টদের সাথে কথা বলে জানাগেছে আমাদের দেশের চিংড়ী রপ্তানী নির্ভর পর্যায় থেকে বেরিয়ে এসেছে। এক সময় চিংড়ী চাষীরা প্রতিনিয়ত শঙ্কায় থাকতো বিশ্ব বাজারে যদি রপ্তানী না হয় বা আন্তর্জাতিক বিশ্ব কোনক্রমে যদি চিংড়ী গ্রহনে অসম্মতি জানায় তাহলে হয়ত এই শিল্প হারিয়ে যাবে কিন্তু পরিস্থিতির প্রেক্ষিতে এটাই হলো বাস্তবতা যে চিংড়ী দেশীয় বাজার দখল করেছে। সাতক্ষীরার বিভিন্ন মৎস্য সেডে প্রতিদিনই যে পরিমান চিংড়ী বিক্রয় হয় তার একটি উলে­খযোগ্য অংশ রাজধানী ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেট সহ অপরাপর শহরে যায়। রপ্তানীতে অবশ্য এখনও পর্যন্ত চিংড়ী তার সক্ষমতা অব্যাহত রেখেছে। কয়েক বছর পূর্বে হাটবাজার গুলোতে অন্যান্য প্রজাতির মাছের ন্যায় চিংড়ী বিক্রি হওয়া ছিল বিস্ময়ের বিষয় কিন্তু বাস্তবতা হলো বিভিন্ন প্রজাতির সাদা মাছের সাথে বাজার গুলো বিক্রয়ের জন্য চিংড়ী প্রদর্শিত হচ্ছে। ব্যবসায়ীরা জানান রাজধানী ঢাকা ও চট্টগ্রামের বাজার গুলোর পাশাপাশি বড় ছোট সব ধরনের হোটেলে সরবরাহ করা হচ্ছে চিংড়ী। বিশেষ করে চাইনিজ রেস্টুরেন্টগুলোতে চিংড়ীর বিভিন্ন খাদ্যদ্রব্যের ব্যাপক উপস্থিতি। বর্তমানে দশ গ্রেটের বাগদা দেশ হতে পনেরটি প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে এগার হতে বারশত টাকায়, অনুরুপ ভাবে বিশ গ্রেটের বাগদা এক হাজার হতে এক হাজার পঞ্চাশ। পর্যায়ক্রমে বাজারে চলি­শ, পঞ্চাশ, ষাট, সত্তর গ্রেটের বাগদার উপস্থিতি লক্ষনীয়। সর্বাপেক্ষা স্বস্তির বিষয় বড় সাইজের দশ হতে বিশ, ত্রিশ গ্রেটের বাগদার উলে­খযোগ্য অংশ দেশীয় বাজারে বিক্রি হচ্ছে। দেশীয় বাজারে বাগদার চাহিদা বৃদ্ধি পাওয়ায় এই ব্যবস্থায় যেমন শৃঙ্খলা ফিরেছে অনুুরুপ ভাবে আর্থিক লেনদেন শান্তিপূর্ণ ভাবে নিষ্পত্তি হচ্ছে চিংড়ী যে সময় গুলোতে কেবলমাত্র রপ্তানী নির্ভর ছিল সেই সময়গুলো আড়ৎদার, ঘেরমালিক ও খুচরা চিংড়ী ব্যবসায়ীরা রপ্তানী কারক প্রতিষ্ঠান, ডিপো মালিক সহ রপ্তানীর সাথে জড়িতদের কাছে অনেকটা জিম্মি ছিল, স্থানীয় বাজারগুলো (মৎস্য আড়ৎ) হতে রপ্তানী কারক ও তাদের এজেন্টরা চিংড়ী সংগ্রহ করতো অনেকাংশ বাকিতে, আবার কখনও কখনও অর্ধেকমূল্য, পরবর্তিতে চিংড়ী রপ্তানী হইনি, বিদেশীরা টাকা দিচ্ছে না, আবার অনেক সময় রপ্তানী কারকরা টাকা পেলেও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী ও আড়ৎদারদের টাকা দিতে গড়িমসি করতো অথবা চিংড়ী বিক্রিত টাকা না দিয়ে আত্মগোপনে চলে যেতো। এ নিয়ে কাইজা সহ নানান ধরনের বিশৃঙ্খলার অবতরনা ঘটতো, সাতক্ষীরা অঞ্চলের বহু আড়ৎদার ও এজেন্ট ব্যবসায়ী এই ভাবে সর্বশান্ত হয়ে পথে বসেছে। কিন্তু বর্তমান সময় গুলোতে দেশীয় বাজারে চিংড়ী বিক্রি হওয়ায় ও চাহিদার ক্ষেত্র সৃষ্টি হওয়ায় নগত টাকায় চিংড়ী ক্রয় বিক্রয় হচ্ছে যে কারনে অর্থনৈতিক শৃঙ্খলা ফিরেছে। কোন বিক্রেতা বা আড়ৎদার বিক্রিত চিংড়ীর টাকা পেতে সামান্যতম অসুবিধার সম্মুখিন হচ্ছে না। চিংড়ীর বাজারে স্বস্তি ফিরলে গত কয়েক বছরের ধারাবাহিকতায় চিংড়ী উৎপাদন এবং ঘের ব্যবসায়ীরা কথিত ভাইরাস নামক রোগের কারনে কাঙ্খিত চিংড়ী উৎপাদনে প্রতিবন্ধকতা সম্মুখিন হচ্ছে। এর বাইরে জমির হারি মূল্য ও শ্রমিক মূল্য বেড়েছে। গুনগত মান নির্ভর রেনু পোনার সংকট চলমান সেই সাথে মূল্য বৃদ্ধি, চিংড়ী পরিচর্যার খাদ্য মূল্যের মূল্য নিয়মিত ভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে। সব মিলে চিংড়ী চাষিরা ভাল নেই। এই মৌসুমে সাতক্ষীরার শত সহস্র ছোট বড় চিংড়ী ঘেরে সময়মত লবনাক্ত পানির অভাব ছিল ব্যবসায়ীদের জন্য চরম পিড়াদায়ক। খাল কাটার নামে যথাসময়ে চিংড়ীঘের গুলো প্রস্তুত করতে না পারায় সাতক্ষীরায় অন্যান্য বছরের ন্যায় চিংড়ী উৎপাদন হ্যাস পাওয়ার আশঙ্কা করছেন ঘের ব্যবসায়ীরা। চিংড়ী শিল্পের জন্য অসনি সংকেত হিসেবে দেখা দিয়েছে চিংড়ীতে ওজন বৃদ্ধির লক্ষে অপদ্রব্য পুশ। সাতক্ষীরার প্রেক্ষিতে এই অপদ্রব্য পুশের মাত্রা আশঙ্কাজনক হারে বেড়েই চলেছে। অপার সম্ভাবনাময় ও পরীক্ষিত চিংড়ী শিল্প আন্তর্জাতিক ও দেশীয় বাজারে তার সুনাম এবং সুখ্যাতির আলো ছড়াচ্ছে এই শিল্পকে রক্ষা করতে আমরা আমাদের যে যার অবস্থান হতে অধিকতর এগিয়ে নিতে সচেষ্ট থাকি।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর
© All rights reserved © 2013-2022 dainikdristipat.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com