শনিবার, ০৪ মে ২০২৪, ১০:৫৪ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম ::

সাতক্ষীরার মাঠে মাঠে চলছে ধান কাটার উৎসব

দৃষ্টিপাত ডেস্ক :
  • আপডেট সময় বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪

দৃষ্টিপাত রিপোর্ট ॥ প্রচণ্ড তাপদাহের মাঝে ও কৃষকের মাঝে আলোর দ্রুতি, উৎসব, উচ্ছ্বাস আর খুশির ঝিলিক। রোপন করা ইরি বরোধান ঘরে উঠছে মাঠেমাঠে তাপদাহ আর প্রখর সুর্যতাপ উপেক্ষা করে চলছে ধানকাটা, বহন আর মাড়াই,গ্রীস্মের খরতাপে প্রাণ যখন ওষ্ঠাগত, রৌদ্রের প্রখরতা যখন জীবন হ্যাঁস ফ্যাঁস করার উপক্রম সেই অসহনীয় অবর্ণনীয় দুর্ভোগময় পরিস্থিতিকে মোকাবিলা করে চলছে সাতক্ষীরার দিগন্ত বিস্তৃত ধান ক্ষেত্রে ধান কাটা উৎসব, বৃষ্টির পানি নয় সেচ নির্ভর ইরি বরো চাষ কৃষকের জন্য কোন কোন সময় সর্বনাশ ডেকে আনে আর তার একমাত্র কারন পোকা মাকড়ের উপক্রম এবং সেচ কার্যক্রমের বিঘ্ন। খোজ নিয়ে জানাগেছে এবারের ইরি বরো মৌসুমে সাতক্ষীরার কৃষকরা নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুতের সুবিধা পাওয়ায় সেচ কার্যক্রম ছিল সচল,তবে বাস্তবতা হলো উৎপাদন খরচ গত কয়েক বছরের ধারাবাহিকতায় অনেকগুন বৃদ্ধি পেয়েছে। বিশেষ করে শ্রমিক মজুরী, বীজ, সার সেচ খরচ অতীতের যে কোন সময় অপেক্ষা অনেক অনেক গুন বৃদ্ধি পেয়েছে। সাতক্ষীরার কৃষকদের একটি উল্লেখযোগ্য সংখ্যক অন্যের জমিতে বর্গা চাষাবাদ করে থাকে, আর এ ক্ষেত্রে জমি মালিককে উৎপাদিত ধানের একটি অংশ দিয়ে অন্যান্য খরচমিটিয়ে লাভ থাকে যৎসামান্য। এবারের বাস্তবতায় সাতক্ষীরার ইরি বরো ধানের বাম্পার ফলন ঘটেছে। কৃষকরা ধানের মুল্য যথাযথ পাচ্ছে। কৃষকদের সাথে কথা বলে জানাগেছে এ বছর ইরি বরো ধান বিঘা প্রতি উৎপাদন হয়ে পনের থেকে ষোল বস্তা, পাইকারধান ব্যাপারীরা কৃষকের ক্ষেত থেকে মাড়াই করা ধান ক্রয় করে নিচ্ছে। সঙ্গত কারনে কৃষকের মনে আনন্দ। কৃষকরা জানান বর্তমান সময়ে বস্তা প্রতি মোটা শুকনো ধান পনেরশত আশি হতে নব্বই টাকায় বিক্রি হচ্ছে এবং অপেক্ষাকৃত নরম মোটা ধান বস্তা প্রতি পনের শত কুড়ি হতে ত্রিশ টাকা। ইরি বরো মৌসুমে কৃষকদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক চিকন প্রকৃতির ধান চাষ করেছে। অপেক্ষা কৃত চিকন ধরনের ধানের ফলনকম হয় যে কারনে উৎপাদন খরজ বেশী এবং মুল্য মোটা ধান অপেক্ষা বেশী বর্তমানে বাজারে চিকন প্রকৃতির ধান বস্তা প্রতি সতেরশত টাকাহতে সতের শত পঞ্চাশ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

 

কৃষকের মুখে যেমন হাসি খুশি আর উচ্ছ্বাসে ভরপুর অনুরুপ ভাবে কৃষানীদের ব্যস্ততাও বহুগুনে বৃদ্ধি পেয়েছে। প্রচন্ড গরমেরমাঝে ধান সেদ্ধ, শুকানোর কাজ করছে। ধান সেদ্ধ, শুকনোর পর মাড়াই করে চকচকে সোনার চাল কৃষক কৃষাণীর মন জুড়িয়ে যাচ্ছে। ইরি বরো ধান উৎপাদন পবরর্তি প্রক্রিয়াজাত করনে সেকেলি সনাতন পদ্ধতির পরিবর্তে যন্ত্রচালিত ব্যবস্থার প্রবর্তন ঘটেছে। ধান মাড়াই চলছে যন্ত্রদ্বারা। ধান বিক্রিই শেষকথা নয়, কৃষকের অন্যতম পাথেয় বিচুলী। ইরি ধানের বিচুলি গরুর খাদ্য হিসেবে পাইকারী ভাবে বিক্রি করছে কৃষকরা। সাতক্ষীরার সর্বত্র চলমান ধান কাটা এবং মাড়াইয়ের উৎসবের মাঝেও চলছে পাকতে যাওয়া, ফোলা ধানের শেষমুহুর্তের পরিচর্যা। একদিকে চলছে ধান কাটা অন্যদিকে মাজরা পোকার আক্রমন রোধে চলছে কীটনাশক ছিটানোর প্রক্রিয়া। সব মিলে সাতক্ষীরার প্রত্যন্ত জনপদে বিশেষ করে গ্রামে গ্রামে, গ্রাীমন জনপদে বইছে কৃষকের মুখের হাসি, ধান উৎসব,ধান কাটা উৎসব,ধান বিক্রি পরবর্তি কৃষকের স্বচ্ছলতা ফিরেছে। ঋন দায়ে জর্জরিত কৃষকরা ধান বিক্রি করে ঋন পরিশোধের পাশাপাশি প্রয়োজনীয় সাংসারিক ব্যয়ভার মিটাচ্ছে। সব মিলে সাতক্ষীরায় অর্থনীতিতে বর্তমান সময়ে বইছে সুবাতাস।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর
© All rights reserved © 2013-2022 dainikdristipat.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com