মঙ্গলবার, ১৪ জানুয়ারী ২০২৫, ০৬:৪২ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম ::
দেবহাটায় তারুণ্যের উৎসব উদ্বোধন সাতক্ষীরায় প্রাথমিক বিদ্যালয় ফুটবল টুনামেন্টের আলো ছড়ানো উদ্বোধন \ প্রথম খেলায় হাসলো দেবহাটা বালিকা দল দেবহাটায় নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নেত্রী নিশি গ্রেফতার ডুমুরিয়ায় তারুণ্য উৎসবে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মেলা অনুষ্ঠিত ডুমুরিয়ায় তারুণ্যের উৎসব’২৫ উদযাপিত সাতক্ষীরায় পুলিশ নারী কল্যাণ সমিতি ব্যাডমিন্টন টুর্নামেন্ট উদ্বোধন লস অ্যাঞ্জেলসে দাবানলে মৃত্যু ২৪ সাতক্ষীরা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা ও পুরস্কার বিতরণ না ফেরার দেশে চলে গেলেন সাংবাদিক মিজানুর আশাশুনি পানিতে ডুবে বৃদ্ধের মৃত্যু

সাতক্ষীরায় জমি রেজিষ্ট্রিতে চরম ভোগান্তি \ অফিস গুলোতে হাটের ভীড় \ সকাল হতে রাত পর্যন্ত অপেক্ষা \ তিন জন সাব রেজিষ্ট্রার দিয়ে চলছে কার্যক্রম

দৃষ্টিপাত ডেস্ক :
  • আপডেট সময় বুধবার, ৩ আগস্ট, ২০২২

মাছুদুর জামান সুমন/মীর আবু বকর \ সাতক্ষীরায় সাব রেজিষ্ট্রিটার সংকটের কারনে জমি ক্রেতা বিক্রেতারা ভোগান্তীতে পড়ছে। জেলা সদর সহ সাত উপজেলার সাতজন সাব রেজিষ্ট্রারের পদ থাকলেও সেখানে অনধিক তিন জন সাব রেজিষ্ট্রার দিয়ে চলছে সরকারের অভ্যন্তরীন রাজস্ব উপার্জনের অন্যতম মাধ্যমটি কর্মযজ্ঞ। বর্তমান সময়ে ভূমি সেবা এবং জমিজমা রেজিষ্ট্রেমন গতানুগতিক এবং সনাতন পদ্ধতির পরিবর্তে তথ্য প্রযুক্তি নির্ভর এবং বিধি বিধান মেনে হওয়ার ব্যবস্থা বিদ্যমান। জমি ক্রেতা বিক্রেতা সহ ক্রয় বিক্রয়ের সাথে সংশ্লিষ্টদের সাথে কথা বলে জানা গেছে জমি রেজিষ্ট্রেশনের শর্ত তথা খাজনা দাখিলা, দলিল, পচ্চা, ভোটার আইডি কার্ড, খতিয়ান, সরকারি ফি সহ আনুসাঙ্গিক অপরাপর বিধি যথাযথ থাকলে মাত্র কয়েক মিনিটের মধ্যে সংশ্লিষ্ট সাব রিজিষ্ট্রার যাচাই পরবর্তি জমি রেজিষ্ট্রি করেন। কিন্তু জেলার সাব রেজিষ্ট্রি অফিস গুলোর চিত্র যেন হাটের ভিড়, সাত উপজেলার কোনটি সপ্তাহে এক দিন আবার কোনটিতে সপ্তাহে দুই দিন তিন দিন জমি রেজিষ্ট্রি হচ্ছে যে কারনে ক্রেতা বিক্রেতাদের ব্যাপক উপস্থিতি, দিনের পর দিন অপেক্ষা, তার পর নির্দিষ্ট দিনে রেজিষ্ট্রি অফিসে উপস্থিত হয়ে সকাল হতে সন্ধ্যা কোন কোন দিন রাত পর্যন্ত ভোগান্তী নিয়ে অপেক্ষা প্রহর শেষে জমি রেজিষ্ট্রি করে বাড়ী ফিরছে। সুত্র জানায় জমিজমা ক্রেতা এবং বিক্রেতাদের একটি বড় অংশ ক্রয় বিক্রয়ের উদ্দেশ্যে জেলার বাইরে হতে আগমন করেন, সাতক্ষীরার নাগরিক হলেও তারা কর্মসংস্থান বা ব্যবসা বাণিজ্যের জন্য দেশের বিভিন্ন এলাকাতে অবস্থান করেন অন্যদিকে মহিলা ক্রেতা এবং বিক্রেতাদের একটি বড় অংশ শ্বশুর বাড়ী অর্থাৎ স্বামীর বাড়ীতে অবস্থান করা, সেখান হতে তারা জমি রেজিষ্ট্রির জন্য আসলে নির্দিষ্ট দিনে সম্পন্ন করতে না পেরে যথা সময়ে গন্তব্যে পৌছাতে পারে না। সাব রেজিষ্টারের অভাব হেতু এভাবে দিনের পর দিন অপেক্ষা করতে হচ্ছে ভুক্তভোগীদের। গতকাল সাতক্ষীরা সদর সাব রেজিষ্ট্রি অফিসের চিত্র ছিল এমন শত শত ভুক্তভোগী, সেবা গ্রহীতা জমি ক্রেতা বিক্রেতারা উপস্থিতি দম বন্ধ হওয়ার উপক্রম। যেন লোকে লোকারন্য, স্বাস্থ্য বিধির উপস্থিতি নেই। পরিস্থিতি এতটুকু লোকসমাগম যে মাইকের মাধ্যমে ক্রেতা বিক্রেতাকে ডাকা হচ্ছে। জমি ক্রয় বিক্রয়ের ক্ষেত্রে বরাবরই দালাল চক্র, জাল জালিয়াতি মহল এবং প্রতারক সিন্ডিকেট সক্রীয় থাকে যে কারনে এমন বেহিসেবি ভিড়, জটলা, দীর্ঘ সুত্রিতায় এলোমেলো পরিস্থিতির কল্যানে অতি সহজে জাল ও প্রতারক চক্র তাদের অশুভ কাজ সমাধা করতে পারে। ক্রেতা বিক্রেতা, স্বাক্ষী, সনাক্তকারী, জমির দাগ, খতিয়ান, পরিমান এর ক্ষেত্রে ক্রেতা বিক্রেতা প্রতারনার শিকার হতে পারেন, অবশ্য এমন ঘটনা হরহামেসাই ঘটে থাকে। সাব রিজিষ্টারের সংকটকালীন সময় গুলোতে এক শ্রেনির দলিল লেখক, সহ সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীলদের প্রতারনা, দলির রেজিষ্ট্রিতে অধিক অর্থ আদায় সরকারি চালানে কারচুপি, কোন কোন ক্ষেত্রে ভুয়া চালানে জমি রেজিষ্ট্রার ঘটনাও যে ঘটছে না বা ঘটবে না এমন নিশ্চয়তা কোথায়? আর নিকট অতীতে সদর সাব রেজিষ্ট্রি অফিসে এমন ঘটনা ঘটছে এবং তদন্তে তা প্রমান ও হয়েছে। গ্রামের সহজ সরল সরকারি ফি সম্পর্কে অবগত নন এমন ক্রেতা বিক্রেতাকে এক শ্রেনির দলিল লেখকরা হেবা, কোবলা, আমমোক্তার নামা, ঘোষনা পত্র, নাদাবি পত্র সহ জমি হস্তান্তর বিষয়ে সরকারি নির্ধারিত ফি অপেক্ষা অধিক ফি নিচ্ছে এমনটি প্রায় ঘটছে আর এ ক্ষেত্রে অনৈতিকতার পাশাপাশি ভিড়ের সুযোগ নিচ্ছে সংশ্লিষ্টরা। অতিরিক্ত ভীড় আর ভোগান্তীর সাথে সঙ্গী হতে পারে জমির শ্রেনি পরিবর্তন, দাগ খতিয়ান ভুল বা ইচ্ছাকৃত ভুল, বিলান, বাস্তু, ভিটা, বাড়ী ভিন্ন ভিন্ন সরকারি ফি থাকওে জনবল সংকটের কারনে প্রচারনার মাধ্যমে সরকারের রাজস্ব ফাঁকির ঘটনা অমুলক নয়, সাব রেজিষ্ট্রারদের অনেকে অধিনস্থ কর্মচারির মাধ্যমে দলিল যাচাই বাছাই করে এবং দলিল লেখকদের বিশ্বাস করে অবশ্য কেউ কেউ যেন অনিয়মের সুযোগ নেন না এমনটি নয় তবে এ সকল অঘটনা ঘটার ক্ষেত্রে অধিক চাপ, নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে জমা হওয়া দলিল রেজিষ্ট্রি করা। অন্যান্য সরকারি অফিস গুলোর ন্যায় সাব রেজিষ্ট্রারদের কর্ম দিবস সপ্তাহে পাঁচ দিন, এ ক্ষেত্রে কোন কোন রিজিষ্ট্রি অফিসে কাজ হচ্ছে এক, দুই, তিন দিন। জনসাধারন সরকারের সব শর্ত পুরন করেই রেজিষ্ট্রি অফিসে আসছে আর ঘন্টার পর ঘন্টা অপেক্ষায় থাকছে। দীর্ঘদিন যাবৎ সাতক্ষীরার সাব রেজিষ্টার সংকটে তার উপর স¤প্রতি শ্যামনগর এর সাব রেজিষ্টার ইসলামকাঠির সাব রেজিষ্ট্রার বদলি হওয়ায় সংকট ও শুন্যতা অধিকতর ঘনিভূত হয়েছে। জমিজমা বিক্রি করে নেহায়েত প্রয়োজনে, বিবাহ, হজ্বেগমন, বাড়ী তৈরী, বিদেশ গমন, পড়ালেখা খরচ, এক স্থানের জমি বিক্রয় করে অন্য স্থানে জমি ক্রয় প্রভৃতি অন্য দিকে অসুস্থ, বৃদ্ধরা তাদের উত্তরাধিকারীদের জমি দান করে। এ ক্ষেত্রে সময় মত প্রয়োজনে যদি জমি রেজিষ্ট্রি না করতে পারে তাহলে লক্ষ্য উদ্দেশ্য সফল হয় না, বরঞ্চ ক্ষতিগ্রস্থ হয়। একই সাথে বৃদ্ধ ও অসুস্থরা সাব রেজিষ্ট্রি অফিসে অপেক্ষার প্রহর গুনতে অধিকতর অসুস্থ হয়ে পড়ে। জেলা ব্যাপী জমি ক্রয় বিক্রেতাদের ভোগান্তী, বিরক্ত, বিব্রত এবং বিড়ম্বনার পাশাপাশি ক্ষোভ বৃদ্ধি পাচ্ছে, এ বিষয়ে জেলা রেজিষ্টার আঃ হাফিজের কাছে জনভোগান্তী ও সাব রেজিষ্টারের সংকটের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন সাব রেজিষ্টার জেলায় কর্মরত তিন জন উক্ত তিনজনকে দিয়ে কাজ চালানো হচ্ছে, জনভোগান্তীর বিষয়টি স্বীকার করলেও সরকারের রাজস্ব উপার্জনে সামান্য ঘাটতি হচ্ছে না বলে জানান।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর
© All rights reserved © 2013-2022 dainikdristipat.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com