বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১০:৫৪ অপরাহ্ন

সাতক্ষীরায় টমেটো চাষে সফলতা উৎপাদিত টমেটো যাচ্ছে রাজধানী সহ অন্য এলাকায়

দৃষ্টিপাত ডেস্ক :
  • আপডেট সময় মঙ্গলবার, ৩১ জানুয়ারী, ২০২৩

মাছুদুর জামান সুমন \ আমাদের দেশে নানান ধরনের সবজি উৎপাদিত হয়। দৈনন্দিন জীবনযাত্রায় সবজির অপরিহার্যতার বিষয়টি উলে­খ করার প্রয়োজন নেই। এক কথায় ভাত খাওয়ার তথা আহারের প্রথম শর্ত সবজি। দেশে শীতকালীন সময় গুলোতে বহুবিধ সবজির উপস্থিতি দেখা যায়। আমাদের দেশে অতিপরিচিত এবং ভিটামিন ও পুষ্টি সমৃদ্ধ সবজি হিসেবে টমেটো গুনের শেষ নেই। টমেটো দৃশ্যতঃ সালাদ সবজি হিসেবে ও পরিচিত ভিটামিন এ ভিটামিন সি সমৃদ্ধ টমেটোর গুনাগুনের শেষ নেই এই সবজি রাতকানা রোগের মহাষৌধ হিসেবে কাজ করে। ভেসজ গুনাগুন সমৃদ্ধ টমেটোতে আছে আমিষ, শর্করা, খনিজ পদার্থ যা ক্যান্সার প্রতিরোধী হিসেবে কাজ করে। দৈনন্দিন সবজি বা সালাদ হিসেবে ব্যবহারের পাশাপাশি টমেটো খাদ্য হিসেবেও অনেকে খেয়ে থাকে। আমাদের দেশে ইতিপুর্বে কম ফলনশীল এবং শীত মৌসুমে কেবল মাত্র টমেটো চাষ হলেও আধুনিক তথ্য প্রযুক্তি আর নতুন নতুন উদ্ভাবিত জাতের কল্যানে সারা বছরই টমেটো চাষ হচ্ছে এবং চাষীরা লাভবান হচ্ছে। সাতক্ষীরার বাস্তবতায় সা¤প্রতিক বছর গুলোতে বানিজ্যিক ভাবে টমেটোর চাষ হচ্ছে। একাধিক সফল টমেটো চাষী দৃষ্টিপাতকে জানান ধান, সহ অপরাপর কৃষি পন্য বাদ দিয়ে টমেটো চাষ করাটা ঝুকি হিসেবে মনে করা হলেও টমেটো চাষ এবং উৎপাদন সেই সাথে লাভবান হওয়ার কল্যানে দিনে দিনে এই চাষে অনেকে ঝুকছে। সাতক্ষীরার সদর উপজেলা, কলারোয়া, পাটকেলঘাটা, তালা দেবহাটা, কালিগঞ্জ সহ অপরাপর এলাকায় বিঘা কি বিঘা জমিতে টমেটো চাষ করা হচ্ছে। জেলার চিংড়ী ঘেরের ভেড়িবাঁধের উপর সুদৃশ্য এবং অধিকতর উৎপাদনশীল টমেটো বাগান অপার সৌন্দর্য বিকিরন করছে এবং ব্যাপক ফলন হওয়ায় চাষীরা আনন্দিত হচ্ছে। সাতক্ষীরার প্রেক্ষিতে লবনাক্ত মাটিতে ও টমেটো চাষ হচ্ছে বিধায় ব্যাপক ভিত্তিক টমেটো চাষ হচ্ছে। সাতক্ষীরার টমেটো চাষীরা জানান উদ্ভাবন করা টমেটো জাতের মধ্যে বাহার, বিনা টমেটো-৪, বিনা টমেটো-৫, বারি টমেটো-২, রতন, মিন্টু, টমেটো-৫ অধিক ফলন দিচ্ছে। টমেটো গাছ রোপনের পর থেকে ৬০ থেকে ৯০ দিনের মধ্যে টমেটো বাজার জাত করনের সময় সৃষ্টি হয়। প্রতিগাছ থেকে ৬/৭ বার টমেটো সংগ্রহ করা যায়। মানব দেহের রোগ প্রতিরোধকারী সবজি হিসেবে টমেটোর বিকল্প নেই। যথাযথ উৎপাদন হলে এবং টমেটো খেতের পরিচর্যা সময় মত নিলে একর প্রতি ১০ থেকে ১২ মেট্রিক টন টমেটোর ফলন পাওয়া সম্ভব। সাতক্ষীরার টমেটো চাষের সফলতা এবং উৎপাদন এমন পর্যায়ে বেড়েছে যে জেলার চাহিদা মিটিয়ে রাজধানী ঢাকা সহ অপরাপর জেলায় সাতক্ষীরার টমেটো বাজার জাত হচ্ছে। নতুন নতুন টমেটো চাষী টমেটো চাষে এগিয়ে আসছে। জেলার বিপুল সংখ্যক মানুষ বর্তমান সময়ে এই চাষের সাথে সংশ্লিষ্ট হওয়ায় বহু শ্রমজীবী পরিবার জীবনজীবিকার ক্ষেত্র হিসেবে টমেটো চাষে নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে। এক শ্রেনির অসাধু ব্যবসায়ীরা সাতক্ষীরার উৎপাদিত গুনাগুন সমৃদ্ধ টমেটো সুনাম নষ্ট করতে কাঁচা টমেটো বাগান হতে তুলে তাতে নানান ধরনের মেডিসিন মিশ্রন করে কৃত্রিম ভাবে পাকানোর চেষ্টা করছে। যা স্বাস্থ্য হানীর কারন এবং মানব দেহের জন্য বিশেষ ক্ষতিকর। চাষীরা জানান টমেটো চাষের সাফল্য ধরে রাখতে হলে কৃষি বিভাগকে এগিয়ে আসতে হবে। চাষীদেরকে কম সূদে বিনা সুদে ঋন দিতে হবে এবং প্রয়োজনে প্রনোদনার ব্যবস্থা করতে হবে। সাতক্ষীরার দিনে দিনে বৃদ্ধি পাচ্ছে টমেটো চাষ আর এই চাষ অব্যাহত থাকলে অর্থনীতিতে সুবাতাস বইবে এমন প্রত্যাশা চাষের সাথে সংশ্লিষ্টদের।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর
© All rights reserved © 2013-2022 dainikdristipat.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com