মঙ্গলবার, ২১ জানুয়ারী ২০২৫, ১০:২২ পূর্বাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম ::
প্রতিনিয়ত ভাংগনে ইছামতি ও কালিন্দী নদী \ ছোট হয়ে আসছে সাতক্ষীরা \ বাংলাদেশ হারাচ্ছে ভূ—খন্ড \ স্থায়ী সমাধান জরুরী প্রয়োজন মেগা প্রকল্প গ্রহণ \ এখনই সময় দেবহাটা সর: পাইলট হাইস্কুলের শহীদ মিনার উদ্বোধনী ও পুরস্কার বিতরণ দেবহাটা রিপোটার্স ক্লাবের শীতবস্ত্র বিতরণ দেবহাটায় তারুণ্যের উৎসব উদযাপনে পরিচ্ছন্নতা অভিযান শ্যামনগরে গর্ভবতী গরু জবাই \গ্রাম্যমান আদালতে ব্যবসায়ীকে জরিমানা সাতক্ষীরায় গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্ট উদ্বোধন সাতক্ষীরায় প্রেসব্রিফিংয়ে পুলিশ সুপার মনিরুল ইসলাম রসুলপুর জান্নাতুল ফিরদাউস কুরআনিয়া মাদ্রাসা ও এতিমখানার ছাদ ঢালাই উদ্বোধন ডুমুরিয়ার বিল ডাকাতিয়ায় সাড়ে ৪ হাজার হেক্টর আবাদী জমিতে বোরো চাষ অনিশ্চিত খুলনায় যুবদল নেতাকে কুপিয়ে হত্যা

সাতক্ষীরায় শিক্ষা ক্যাডারের ন্যায্য দাবি আদায়ে বিসিএস সাধারণ শিক্ষা সমিতির সংবাদ সম্মেলন

দৃষ্টিপাত ডেস্ক :
  • আপডেট সময় বুধবার, ২৭ সেপ্টেম্বর, ২০২৩

স্টাফ রিপোর্টার: ক্যাডার কম্পোজিশনের সুরক্ষা, পদোন্নতি পদসৃজন স্কেল আপগ্রেডেশন ও আন্ত:ক্যাডার বৈষম্য নিরসন সহ বিসিএস সাধারন শিক্ষা ক্যাডারের ন্যায্য দাবি আদায়ে বিসিএস সাধারন শিক্ষা সমিতি সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। সাতক্ষীরা জেলা বিসিএস শিক্ষা সমিতির আয়োজনে গতকাল বেলা ১১টায় সাতক্ষীরা কেন্দ্রীয় পাবলিক লাইব্রেরী মিলনায়তনে সংগঠনের জেলা সভাপতি ও সাতক্ষীরা সরকারী মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর বাসুদেব বসুর সভাপতিত্বে সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা বলেন, বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিসের অন্যতম বৃহৎ ক্যাডার সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারের নানা ক্রান্তিকালে সাংবাদিকদের পাশে পেয়েছে। বর্তমান সময়ে শিক্ষা ক্যাডার আবারও বেশ প্রতিকূল অবস্থার মধ্যে পড়েছে। প্রতিকুলতা দুর করার ক্ষেত্রে বিসিএস সাধারণ শিক্ষা সমিতি বিভিন্ন সাংগঠনিক কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। বাংলাদেশের প্রাথমিক শিক্ষা থেকে উচ্চশিক্ষা পর্যন্ত সার্বিক শিক্ষা ব্যবস্থা পরিচালনা ও নিয়ন্ত্রণের জন্য শিক্ষা ক্যাডার সৃষ্টি করা হয়। বঞ্চনা আর বৈষম্যের মাধ্যমে এপেশার কার্যক্রমকে সংকুচিত করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকার যেসকল অভীষ্ট নির্ধারণ করেছে তার মধ্যে শিক্ষাকে বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছেন। তিনি স্মার্ট বাংলাদেশ গঠনে স্মার্ট শিক্ষা ব্যবস্থার প্রতি গুরুত্ব দিয়েছেন। এগুলো বাস্তবায়নে প্রয়োজন জাতির পিতার দর্শনের বাস্তবায়ন। প্রয়োজন একটি দক্ষ, যুগোপযোগী ও স্বয়ংসম্পূর্ণ শিক্ষা ব্যবস্থাপনা। শিক্ষায় জাতীয় লক্ষ্য অর্জনে উপজেলা, জেলা, অঞ্চলে শিক্ষা সংশ্লিষ্ট দপ্তর, অধিদপ্তর ও প্রকল্পসমূহ পরিচালনায় শিক্ষা ক্যাডার কর্মকর্তাদের নিয়োগ সময়ের দাবি। দেশের প্রাথমিক থেকে উচ্চ শিক্ষা স্তরের শিক্ষা প্রদান, পরিচালনা, ব্যবস্থাপনা, পরিকল্পনা, গবেষণা ও প্রশাসনিক কার্যক্রম পর্যন্ত শিক্ষা ক্যাডারের কার্যপরিধি বিস্তৃত। প্রাথমিক থেকে উচ্চশিক্ষা স্তর সংশ্লিষ্ট সকল দপ্তরে নবম গ্রেডের উপরে সকল পদ শিক্ষা ক্যাডারের তফসিলভূক্ত। এসব পদে শিক্ষা ক্যাডার কর্মকর্তা বাদে অন্য কারও পদায়নের সুযোগ নেই। দীর্ঘদিন ধরে শিক্ষা ক্যাডারের তফসিলভূক্ত পদ থেকে শিক্ষা ক্যাডার বহির্ভূতদের অপসারণের দাবি জানিয়েছি কিন্তু সেটি করা হয়নি। আমরা লিখিতভাবে আপত্তি জানাবার পরেও বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারের তফসিলভূক্ত প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের ৫১২ টি পদ শিক্ষা ক্যাডারের তফসিল বহির্ভূত করে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের নিয়োগবিধি চুড়ান্ত করা হয়েছে। এটি সুস্পষ্টতই শিক্ষা ক্যাডারের অস্তিত্বের উপর আঘাত। আমরা এসকল কর্মকান্ডকে সরকারের উন্নয়ন অগ্রযাত্রাকে প্রশ্নবিদ্ধ করার শামীল মনে করি। শিক্ষা ক্যাডারকে অন্ধকারে রাখার এখতিয়ার প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নেই। আমরা শিক্ষা ক্যাডার বিরোধী কর্মকান্ডের তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি এবং অবিলম্বে বাতিলের দাবী জানাচ্ছি। শিক্ষার রুপান্তয়ের অন্যতম কারিগর বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডার কর্মকর্তাগণ। তাঁরাই প্রণয়ন করেছেন নতুন শিক্ষাক্রম, এর বাস্তবায়নেও তাঁরাই অন্যতম শক্তি। শিক্ষা ক্যাডারের ১৬ হাজার কর্মকর্তা বর্তমান সরকারের ভিশন-২০৪১ তথা স্মার্ট বাংলাদেশের স্বপ্ন পূরণে একযোগে কাজ করে যাচ্ছি। কিন্তু প্রাপ্য অধিকার ও সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছি। কোন কারণ ছাড়াই পদোন্নতি বন্ধ আছে দুই বছর। এই মুহুর্তে শিক্ষা ক্যাডারে পদোন্নতিযোগ্য কর্মকর্তার সংখ্যা ৭ হাজারের বেশি। এর মধ্যে অধ্যাপক পদে পদোন্নতি যোগ্য ১২০০ জন। সহযোগী অধ্যাপক পদোন্নতি যোগ্য ৩০০০ জন, সহকারি অধ্যাপক পদে পদোন্নতি যোগ্য কর্মকর্তা আছেন প্রায় ৩০০০ জন। এই কর্মকর্তাদের পদোন্নতির জন্য সরকারের কোন অতিরিক্ত অর্থ প্রয়োজন নেই। সবাই পদোন্নতিযোগ্য পদের বেতন স্কেলের সর্বোচ্চ সীমায় পৌছে গেছেন। ক্যাডার সার্ভিসে শুন্য পদে না থাকলে পদোন্নতি দেয়া যাবে না এমন কোন বিধান নেই। অথচ, শিক্ষা শিক্ষা ক্যাডারকে শূণ্য পদের অজুহাতে পদোন্নতি বঞ্চিত রাখা হয়। প্রধানমন্ত্রী সকল ক্যাডারের জন্য সুপারনিউমারারি পদে পদোন্নতি দিয়ে ক্যাডার বৈষম্য নিরসনের নির্দেশনা দিলেও তা পালিত হয়নি। প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা আন্তঃক্যাডার বৈষম্য নিরসনের নির্দেশ দিয়েছেন বারবার। কিন্তু সে নির্দেশনা মানা হচ্ছে না। বেতন স্কেল অনুযায়ী ৪র্থ ও ৬ষ্ঠ গ্রেড প্রাপ্য কর্মকর্তাগণের প্রস্তাব মন্ত্রণালয়ে প্রেরণ করা হয়েছে ১ বছর পূর্বে। কিন্তু এ বিষয়েও কোনো অগ্রগতি নেই। সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা আরো বলেন, বাংলাদেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহে শিক্ষক ও শিক্ষা সংশ্লিষ্ট দুপ্তরসমূহে জনবলের ব্যাপক ঘাটতি রয়েছে। পুর্বের তুলনায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বেড়েছে, শিক্ষার্থীর সংখ্যাও বেড়ছে, সিলেবাস/কোর্স বেড়েছে কয়েকগুন। কিন্তু সে তুলনায় পদ সৃজন হয়নি। বর্তমান শিক্ষা ক্যাডার নিয়ন্ত্রিত সরকারি কলেজ সমূহে উচ্চ মাধ্যমিক পদে সৃজন অপরিহার্য। বর্তমান সরকারি কলেজসহ শিক্ষা প্রশাসনের কর্মরত শিক্ষা ক্যাডার কর্মকর্তার সংখ্যা মাত্র ১৬ হাজার। শিক্ষার মতো এত গুরুত্বপূর্ণ একটি খাতে ১২৪৪৪ টি পদত সৃজনের প্রস্তাব আটকে আছে দীর্ঘ ৯ বছর। শিক্ষার মতো একটি গুরুত্বপূর্ণ সেক্টরে ৪র্থ প্রেডের উপর কোন পদ নেই। অন্য ক্যাডার কর্মকর্তারা পঞ্চম গ্রেড হতে তৃতীয় গ্রেডে পদোন্নতি পান। কিন্তু শিক্ষা ক্যাডারে সর্বোচ্চ পদ অধ্যাপক পদটি চতুর্থ গ্রেড হওয়ায় শিক্ষা ক্যাডারের পঞ্চম গ্রেড হতে তৃতীয় গ্রেডে পদোন্নতির সুযোগ নেই। অধ্যাপক পদটি তৃতীয় গ্রেডে উন্নীত করা এবং আনুপাতিক হারে প্রথম ও ২য় গ্রেডের পদ সৃষ্টি করা জরুরি হয়ে পড়েছে। ২০১৫ সালে নতুন পে স্কেলে সবচাইতে ক্ষতিগ্রস্ত ক্যাডার হচ্ছে বিসিএস সাধারণ শিক্ষা। জাতীয় বেতন স্কেল ২০১৫ তে অধ্যাপকদের ৩য় গ্রেডে (সিলেকশন গ্রেড) উন্নীত হওয়ার সুযোগ রহি হয়ে ৪র্থ গ্রেডে অবনমন ঘটে। প্রধানমন্ত্রীর নজরে আনা হলে তিনি তৎকালীন অর্থমন্ত্রীর নেতৃত্বে একটি কমিটি ও মুখ্যসচিবের নেতৃত্বে আরেকটি কমিটি গঠন করে দ্রুততার সাথে নতুন পে-স্কেলের মাধ্যমে সৃষ্ট সমস্যাসমূহ সমাধানের নির্দেশ দেন। এ কমিটি সমূহের সুপারিশে শিক্ষা ক্যাডারের অধ্যাপক পদমর্যাদা সম্পন্ন পদসমূহের মধ্যে ৪২৯টি পদ তৃতীয় গ্রেডে উন্নীত করার প্রক্রিয়া শুরু করা হয়। কিন্তু সম্পূর্ণ অজ্ঞাত কারণে মাত্র ৯৮টি পদ ৩য় গ্রেডে উন্নীত করতে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সম্মতি দেয়। এক্ষেত্রেও প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা কার্যকর করা হয়নি। শিক্ষা ক্যাডারকে অবকাশকালীন বিভাগ বিবেচনা করায় শিক্ষা ক্যাডার কর্মকর্তারা পূর্ণ গড় বেতনে অর্জিত ছুটি থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। গ্রীষ্ম ও শীতকালীন অবকাশ চলাকালীন সময়ে শিক্ষার্থীরা ছুটি ভোগ করলেও শিক্ষকগণ উচ্চ মাধ্যমিক, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আওতাধীন স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পরীক্ষাসমূহ, ভর্তি, রেজিষ্ট্রেশন, ফরম ফিলআপ এসব কারণে কর্মস্থলে উপস্থিত থাকেন। শিক্ষা ক্যাডার কর্মকর্তাদের পূরণ গড় বেতনে অর্জিত ছুটির বিষয়ে ২০০৭ সালে শিক্ষা মন্ত্রণালয় সম্মতি প্রদান করলেও প্রশাসনের আন্তরিকতার অভাবে এটি আলোর মুখে দেখেনি। তাই অবিলম্বে শিক্ষা ক্যাডারের কর্মকালকে নন ভেকেশন সার্ভিস ঘোষণা করে পূর্ণ গড় বেতনে অর্জিত ছুটি প্রদানের ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সমিতি জোর দাবি জানাচ্ছি। বর্তমান সরকার প্রতিটি উপজেলায় এক বা একাধিক কলেজ সরকারি করেছে, সেখানে উচ্চশিক্ষা চালু আছে। উপজেলায় ও জেলায় মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস থাকলেও উচ্চ শিক্ষা দেখ ভালের জন্য কোন কর্তৃপক্ষ নেই। দেশের সার্বিক শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নয়নে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের অধীনে শিক্ষা ক্যাডার নিয়ন্ত্রিত জেলা ও উপজেলা শিক্ষা প্রশাসন প্রতিষ্ঠা প্রয়োজন। শিক্ষা ক্যাডারের উল্লিখিত দাবিগুলোর মধ্যে বেশিরভাগই অনেক পুরাতন। আমরা দীর্ঘদিন ধরে সমস্যাগুলো সমাধানের জন্য সরকারের যথাযথ কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছি। কিন্তু শিক্ষা ক্যাডারের দাবিগুলো পূরণ হয়নি। দাবী আদায়ে বিসিএস সাধারণ শিক্ষা সমিতির কেন্দ্রীয় কমিটি কর্মসূচি ঘোষণা করেছে: আগামী ২ অক্টোবর ২০২৩ সারা দেশে একদিনের কর্মবিরতি পালন করা হবে। শিক্ষা ক্যাডারের ন্যায্য দাবি পূরণে দৃশ্যমান অগ্রগতি না হলে আগামী ১০, ১১ ও ১২ অক্টোবর টানা তিন দিনের কর্মবিরতি পালন করা হবে। (সারাদেশের সরকারি কলেজ, সরকারি মাদ্রাসাসহ সকল দপ্তর ও অধিদপ্তরে কর্মরত শিক্ষা ক্যাডার কর্মকর্তাগণ সর্বাত্মক কর্মবিরতি পালন করবেন। এসময় অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন অধ্যক্ষ আমানউল্লাহ আল হাদী, অধ্যক্ষ আনোয়ারুজ্জামান, অধ্যক্ষ আবুল কালাম আজাদ, সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক অলিউর রহমান, সহ বিভিন্ন কলেজের শিক্ষক উপস্থিত ছিলেন। সমগ্র অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন সাতক্ষীরা সরকারী মহিলা কলেজের শিক্ষক মো: শফিকুল ইসলাম।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর
© All rights reserved © 2013-2022 dainikdristipat.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com