বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ০১:৪১ পূর্বাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম ::

সাতক্ষীরায় সদর থানা পুলিশের অভিযানে অপহরণের ১ মাস পর ছাত্রীকে উদ্ধার

দৃষ্টিপাত ডেস্ক :
  • আপডেট সময় রবিবার, ৪ জুন, ২০২৩

স্টাফ রিপোর্টার \ সাতক্ষীরায় সদর থানা পুলিশের অভিযানে অপহরণের ১ মাস পর ছাত্রীকে উদ্ধার করা হয়েছে। গত ২ জুন ঢাকা যাত্রাবাড়ি কাজীরগাও এলাকা থেকে ভিকটিম কে উদ্ধার ও অপহরণকারী কে আটক করে পুলিশ। ভিকটিম শহরের রসুলপুর গ্রামের নুর উদ্দিন মুহাম্মদ জাহাঙ্গীরররে কন্যা ও রসুলপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয় দশম শ্রেণীর ছাত্রী মোছাঃ সুমাইয়া সুলতানা (১৭)। অপহরণকারী ঢাকা যাত্রাবাড়ি শেখদি এলাকা জাহাঙ্গীর আলমের পুত্র মুন্না(২৪)। গতকাল বেলা সাড়ে ১১ টায় সাতক্ষীরা পুলিশ সুপারের সম্মেলনে প্রেস বিফ্রিংয়ে অতিঃ পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস্) আমিনুর রহমান এসব কথা বলেন। তিনি আরো বলেন, গত ২৯ এপ্রিল সকালে নিজ বাড়ি শহরের সংগ্রাম হাসপাতালের সামনে থেকে রসুলপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের কোচিংয়ে যাওয়ার পথে সুমাইয়াকে মুখে রোমাল দিয়ে অজ্ঞান করে অপহরণ করা হয়। পরে ভিকটিম কে নিয়ে ঢাকা যাত্রাবাড়ী এলাকায় একটি পরিত্যক্ত ঘরে ১ মাস আটকিয়ে রেখে নির্যাতন করে। ভিকটিম লুকিয়ে অপহরণকারী মোবাইল ফোন থেকে বাড়িতে তার চাচার ফোনে ইমোতে কল দিয়ে বাচার আকুতি জানায়। এঘটনায় ভিকটিমের পিতা বাদী হয়ে সদর থানার গত ১৯ মে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা দায়ের করে। পুলিশ তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় ভিকটিমকে উদ্ধার করেছে। একই সঙ্গে অপহরণকারী মুন্নাকে আটক করে।

জৈষ্ঠ্যের আগুনে পুড়ছে জনপদ ঃ অস্বস্তিতে সাতক্ষীরার জনজীবন, প্রতিবন্ধকতায় উৎপাদন
দৃষ্টিপাত রিপোর্ট \ জৈষ্ঠ্যের খরতাপে পুড়ছে দেশ, তাপদাহ আর লু-হাওয়ার অসহনীয় নির্যাস সর্বত্র। ভ্যাপসা গরম, তপ্ত পরিস্থিতি সেই সাথে সর্বত্র বিপর্যস্থ পরিস্থিতি সব মিলে জনজীবন মোটেই ভাল নেই। দেশের অন্যান্য এলাকার ন্যায় সপ্তাহের বেশী সময় যাবৎ সাতক্ষীরার উপর দিয়ে বয়ে চলেছে চরম উষ্ণতা, জৈষ্ঠ্যের অসম্ভব ধরনের বাতাসহীন রৌদ্র আর তাপের কল্যানে জেলার জনমানুষের স্বস্তিই কেবল কেড়ে নেইনি উৎপাদন ব্যবস্থায় ছন্দ পতন ঘটিয়েছে। বাতাসে আর্দ্রতা নেই, শরীরের সাথে মিশে যাওয়া তাপদাহ পুরো শরীরকে বিষন্নতায় এবং এক ধরনের অজানা কষ্টে নিক্ষেপ করে চলেছে। গরমে কাহিল অনেকে জানান প্রচন্ড তাপে শরীর জ্বালাপোড়া শুরু হচ্ছে এবং শ্বাস প্রশ্বাস নিতেও কষ্ট হচ্ছে, শরীর থেকে খুব বেশী ঘাম বের না হলেও গরমের আর অস্বস্থির শেষ নেই। প্রচন্ড গরমে হ্যাঁস ফ্যাঁস করা মানুষগুলো কোথাও শান্তি পাচ্ছে না। জীবন অতিষ্টকরা গরমের সাথে পাল­া দিয়ে চলছে। বিদ্যুতের লোডশেডিং দিন রাতের ঘন ঘন লোডশেডিং ঘরেও শান্তি ও স্বস্তি পাচ্ছে না মানবকুল। অতীতের যে কোন সময় অপেক্ষা প্রকৃতির আচরন যেমন অসহনীয় তাপদাহ আর তাপদাহ যা সয্যকরা কঠিন অন্য দিকে বিদ্যুৎহীনতার সময় ও ক্ষন প্রতিনিয়ত বেড়েই চলেছে। বিদ্যুতের অভাবে ঘরেও শান্তি করে ঘুম বা বিশ্রাম নিতে পারছে না। ভয়াবহ তাপদাহের সময় গুলোতে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের পরামর্শ বিনা প্রয়োজনে ঘরের বাইরে বের না হওয়াই ভাল, বিশেষ প্রয়োজনে ঘরের বাইরে গেলে সাথে রাখতে হবে ছাতা এবং পানি। কোন পুরো শাট পরা হতে বিরত থাকতে হবে। সুতি শার্ট পরাই শ্রেয়, প্রচন্ড গরমের সময়গুলোতে রৌদ্রে বা বন্ধ স্থানে কোন ধরনের কষ্টের শারিরীক কাজ করার ক্ষেত্রে নিজেকে গুটিয়ে রাখতে হবে। অসহনীয় সর্যহীন তাপদাহ যে কোন সময়ে হিটস্টোকের কারন হতে পারে। সাতক্ষীরার কৃষি উৎপাদনে ও মৎস্য চাষে চলমান তপ্ত আবহাওয়া কার্যকর ভূমিকা রাখছে। গত কয়েক দিনের ব্যবধানে খাদ্য শষ্য উৎপাদনে সেচের সাহায্য নিতে হচ্ছে, সবজি ও কাটাখন্দকের জমিতেও সেচ চালিত পানি সরবরাহ করা হচ্ছে বিদ্যুতের অব্যাহত লোডশেডিং এর কারনে এখানেও প্রতিবন্ধকতার দেওয়াল তৈরী হয়েছে। সবজি খেতের সবজি অংশ বিশেষ হলুদাভাব হয়ে উঠেছে। লবনাক্ত পানিই চিংড়ী চাষের সহায়ক তারপরও বৃষ্টির পানি শেষ কথা, দীর্ঘ সময় বৃষ্টিপাত না হওয়ায় চিংড়ী ঘেরের পানি যেমন লবনের মত লবনাক্ত আকার ধারন করেছে অনুরুপ জেলার বিপুল সংখ্যক চিংড়ী ঘেরের পানি শুকিয়ে চিংড়ী মরতে শুরু করেছে। চিংড়ী উৎপাদনের পাশাপাশি সাদা প্রজাতির মাছ চাষেও বিপর্যয় নিয়ে এসেছে জৈষ্ঠ্যের খরতাপ। বৃষ্টির পানির অভাব হেতু সাদা প্রজাতির মাছ চাষীরা ঘেরের সাদা মাছ বড় করতে পারছে না অনুরুপ ভাবে প্রচন্ড গরম আর তাপদাহে মাছ মরছে তো মরছেই। বিরামহীন গরমে তাপ বাহিত নানান ধরনের রোগ ছড়িয়ে পড়ছে বিশেষ করে ডায়রিয়া, আমাশয়, ছর্দিজ্বর, এ্যালার্জি, হ্যাঁপানি, নিউমোনিয়া সহ বহুবিধ রোগ ছড়িয়ে পড়ছে। গরমের প্রচন্ডতায় শ্রমিক শ্রেনি বিশেষ করে দিন আনা দিন খাওয়া মানুষগুলো কাজ করতে পারছে না। নিকট অতীতে জ্যৈষ্ঠ মাসে এমন ভয়ানক গরমের মুখোমুখি হইনি দেশ। বিদ্যুতের লোডশেডিং সেই সাথে তাপের কল্যানে ছোট খাট শিল্প উৎপাদনে জড়িতরা মিল কলকারখানায় কাজ করতে পারছে না। সাতক্ষীরা কালিগঞ্জ সড়কের যাত্রীবাহী যানবাহন গুলোর চিরচেনা রুপ গাদাগাদি, ঠাসাঠাসি করে যাত্রীদের অবস্থান সে দৃশ্য নেই। হাত পাখার কদর বেড়ছে। গত কয়েক দিনের সাতক্ষীরা শহরস্থ মফস্বল এলাকাগুলোতে হাতপাখা বিক্রেতাদের তালপাখা বিক্রি ও ক্রয় চোখে পড়ার মত। শরবত এবং পানীয় বিক্রি বেড়েছে। এক শ্রেনির শরবত বিক্রেতারা জনস্বাস্থ্যের ধার ধরছে না। অপরিচ্ছন্ন পরিবেশে তৈরী শরবত বিক্রি করছে। জনস্বাস্থ্য হুমকির মুখে পড়েছে। সব মিলে গ্রীষ্মের তাপদাহ, জৈষ্ঠ্যের আগুন ঝড়া, আগুন ছড়ানো তাপদাহ, প্রখর রৌদ্রতাপ গোটা জনপদকে অভিশপ্ত করে তুলেছে, এই মুহুর্তে প্রয়োজন বৃষ্টিপাত তবেইনা জনপদে, মানবতায় এবং উৎপাদনে গতিশীলতা ফেরবে।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর
© All rights reserved © 2013-2022 dainikdristipat.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com