দৃষ্টিপাত রিপোর্ট \ গত কয়েকদিন যাবৎ সাতক্ষীরার আলোচিত বিষয় জেলা প্রশাসন কতৃর্ক সরকারি খাস জমি উদ্ধার এবং সরকারি জমিতে অবৈধভাবে নির্মিত স্থাপনা উচ্ছেদ। সাতক্ষীরার বাস্তবতায় জেলা শহর, সদর উপজেলা সহ শ্যামনগর, কালিগঞ্জ, আশাশুনি, তালা, কলারোয়া সহ প্রতিটি উপজেলায় অতি দ্রুততার সাথে খাস জমি উদ্ধারে কতৃর্পক্ষ তৎপর হবেন এমন প্রত্যাশা জনসমাজের। গত কয়েকদিনে জেলা প্রশাসন দৃশ্যত: উদ্ধার অভিযানে নেমে বিশেষভাবে প্রশংসিত হয়েছে। সাতক্ষীরার বাস্তবতায় খাস জমি দখল খাস জমি জাল জালিয়াতির মাধ্যমে রেকর্ড করা, ব্যক্তিমালিকানার জমি খাস জমি বলে কথিত ভূমিহীনদের অবৈধ দখলদারিত্ব সহ বহুবিধ বিষয় সম্পৃক্ত। জেলা প্রশাসকের মহতি উদ্যোগ বিশেষভাবে সফল হতে পারে জেলার খাস জমি গুলো চিহ্নিত করণের মাধ্যমে। ভূমি আইনে জেলার সকল খাস সম্পত্তির মালিক জেলা প্রশাসক এবং উক্ত খাস জমি চিহ্নিতকরণের প্রক্রিয়া এবং পদ্ধতি জেলা প্রশাসকের নিয়ন্ত্রণ নেই। খাস জমি চিহ্নিত করণের পদ্ধতি গুলো অনুসরণের মাধ্যমেই খাস জমি চিহ্নিত করা সম্ভব। প্রতিটি ইউনিয়ন ভূমি অফিসের ৮নং রেজিস্টার বইয়ে সরকারি খাস জমির রেকর্ড বিদ্যমান, খাস জমি সরকারের নিজস্ব মালিকানাধীন ভূমি। এই জমি কোন ব্যক্তিগত বা কর্পোরেট সম্পত্তি থাকে না। এই জমি সাধারণত জেলা প্রশাসকের নিয়ন্ত্রণাধীন থাকে খাস জমির জন্য কোন ধরনের খাজনা (কর/ট্যাক্স) দিতে হয় না। এর বাইরে গণবিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জনসাধারণের মাধ্যমে খাস জমির সন্ধান জানা সম্ভব। সরকারের ১নং এবং ১/১ নং খতিয়ান ভূক্ত জমি সাতক্ষীরার বাস্তবতায় কেবল অবৈধভাবে দখল প্রক্রিয়া হয়েছে তা নয় এক শ্রেণির দায়িত্বশীল কর্মকর্তা কর্মচারীদের সহায়তায় সরকারি জমি জাল জালিয়াতি কাগজপত্রাদির মাধ্যমে ব্যক্তি মালিকানায় রেকর্ড হওয়ার বিষয়টিও অমূলক নয়। সাতক্ষীরার বিশলক্ষাধিক জনসাধারণ জেলা প্রশাসকের পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়ে সারা জেলা ব্যাপী উদ্ধার অভিযান ত্বরানিত করার যে ঘোষণা দিয়েছে তা কার্যকর হবে বলে প্রত্যাশা করছেন। গতকাল সরকারি খাস জমি দখলমুক্ত করণের টাস্কফোর্স এর সভা জেলা প্রশাসক মোস্তাক আহমেদের সভাপতিত্বে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত হয়েছে। সভায় সরকারের খাস জমি অবৈধভাবে ভূমি দস্যুদের দখলে আছে তা উদ্ধারের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে। ইতিমধ্যে সেনাবাহিনীর সহায়তায় সাতক্ষীরার আলিপুরে প্রায় ত্রিশ বিঘা সরকারি খাস জমি উদ্ধার করা হয়েছে বলে সভায় জানান জেলা প্রশাসক। সভায় আরও জানানো হয় জেলার বিভিন্ন স্থানে যে সকল সরকারি খাস জমি রয়েছে যেগুলো ভূমিদস্যুরা অবৈধভাবে দখল করেছে সে গুলো উদ্ধারে কার্যকরী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। খাস জমি উদ্ধার অভিযান চলমান আছে। একই সাথে পানি উন্নয়ন বোর্ড এবং সড়ক ও জনপদের আওতাধীন জেলার বিভিন্ন স্থানে যে সমস্ত সরকারি খাস জমি অবৈধভাবে দখলে রয়েছে সেগুলো স্ব স্ব বিভাগকে চিহ্নিত করতে বলা হয়েছে। সেগুলো পর্যায়ক্রমে অভিযান চালিয়ে উদ্ধার করা হবে। জেলা প্রশাসক মোস্তাক আহমদের সভাপতিত্বে সভায় উপস্থিত ছিলেন সাতক্ষীরা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মনিরুল ইসলাম, সাতক্ষীরা সেনা ক্যাম্পের লেঃ: লাবিব, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) শেখ মঈনুল ইসলাম মঈন, আর ডিসি মো: পলাশ আহমেদ, সদর নির্বাহী অফিসার শোয়াইব আহমাদ, সহকারী কমিশনার ভূমি অতিশ কুমার সরকার, সড়ক ও জনপদের নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ আনোয়ার পারভেজ, পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সালাহ উদ্দীন আহমেদ, এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী কামরুজ্জামান প্রমুখ। জেলা প্রশাসক সভায় আশাবাদ ব্যক্ত করেন সরকারের জমি সরকারেই থাকবে। এক খন্ড খাস জমি ভূমি দস্যুদের দখলে থাকবে না।