ধুলিহর প্রতিনিধি ॥ সাতক্ষীরা টু আশাশুনি সড়কের দুইধারের কয়েক শতাধিক মরা গাছ এখন মরণ ফাঁদ হয়ে দাঁড়িয়েছে পথচারীসহ এলাকার মানুষের। রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকা এসব গাছে যে কোনো সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে-এমন আতঙ্ক ও আশংকা নিয়ে চলাচল করছে ওই এলাকার পথচারীরা। প্রতিনিয়ত ঘটছে ছোটো-খাটো দুর্ঘটনাও। ভুক্তভোগিদের অভিযোগ সংশ্লিষ্ট জেলা পরিষদ ও সামাজিক বনবিভাগের কর্মকর্তাদের দায়িত্বহীনতার কারণে সড়কটি অনিরাপদ হয়ে পড়ছে। ওই সড়কে মরা শুকনা গাছের ডাল ভেঙে পড়ে অনেক পথচারী আহত হয়েছেন। স্কুল কলেজগামী শিক্ষার্থীসহ, মোটরসাইকেল, ইজিবাইক যাত্রীরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছেন প্রতিদিন। সচেতন এলাকাবাসী ও পথচারীদের প্রানের দাবি যত দ্রুত সম্ভব এই মরা গাছের কঙ্কালগুলো অপসরণ করে সড়ক অভয়মুক্ত করা হোক। মরাগাছের ডাল ভেঙে পড়ে ঘটছে দুর্ঘটনা, বাড়ছে প্রাণহানির ঝুঁকিও। অতি সম্প্রতি এমনই এক দুর্ঘটনার শিকার হয়েছেন উপজেলার ফিংড়ি ইউনিয়নের গোবরদাড়ি গ্রামের হায়দার সরদারের ছেলে সিঙ্গাপুর প্রবাসি বাবলু সরদার। গত বুধবার সন্ধ্যায় সাতক্ষীরা থেকে নিজ বাড়িতে ফেরার পথে সাতক্ষীরা-আশাশুনি সড়কের চাঁদপুর একটি মরাগাছের (রেইন ট্রি) ডাল ডেঙে গায়ে পড়ে গুরুতর আহত হন তিনি। এসময় ক্ষতিগ্রস্ত হয় তার মোটরসাইকেলটিও। সরেজমিনে- সাতক্ষীরা-আশাশুনি সড়কের সাতক্ষীরা আলিয়া মাদ্রাসা মোড় থেকে যতনমালী মোড় পর্যন্ত কয়েক কিলোমিটার রাস্তা ঘুরে দেখা গেছে, সড়কের দুই ধারে সারি সারি মরা গাছের কঙ্কালসার দাঁড়িয়ে আছে। যা ক্রমেই ক্ষয়প্রাপ্ত হচ্ছে প্রকৃতির নিয়মে। আর ভয়টা সেখানেই।এসব মরা গাছের ডাল আকস্মিকভাবেই ভেঙে পড়ে সড়কের ওপর। অল্পবাতাসে ভেঙ্গে পড়ছে সেসব মরা গাছ ও গাছের ডালপালা। এসব ঝুঁকি নিয়েই রাস্তায় চলাচল করছে পথচারীরা এবং জমিতে আবাদ করছে রাস্তার পাশের জমির মালিকরা। ভ্যানচালক কবিরুল ইসলাম জানান, প্রতিদিন তাকে এই রাস্তায় চলাচল করতে হয় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে। কয়েকদিন আগের ঝড়ে একটি গাছের ডাল ভেঙ্গে পড়ায় অল্পের জন্য রক্ষা পেয়েছেন তিনি। এজন্য তার আতঙ্ক আরও বেড়ে গেছে বলে জানান তিনি। জাহানাবাজ গ্রামে ওই রাস্তার পাশের জমিতে বোরো চাষ করা লুৎফর রহমান নামে এক কৃষক বলেন, রাস্তার পাশে জমিতে বোরো চাষ করছি, জমির পাশেই রাস্তার সব গাছগুলো মরে গেছে। তাই সবসময় ভয়ে থাকি-কখন যে মরা গাছ মাথার উপর ভেঙ্গে পড়ে। স্থানীয় ধুলিহর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান বাবু সানা বলেন, গাছগুলো মরে যাওয়ায় ওই রাস্তা দিয়ে মানুষ ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে। গাছগুলো কাটার জন্য কর্তৃপক্ষকে বার বার বলা হলেও কোনো লাভ হয়নি। এ ব্যাপারে সাতক্ষীরা জেলা পরিষদের প্রশাসনিক কর্মকর্তা খলিলুর রহমান জানান, ফেব্রুয়ারি মাসের মধ্যে এসব মরা গাছ কর্তন বা অপসারণ করা হবে। তিনি বলেন, সামাজিক বনবিভাগের নিকট পত্র প্রেরন করা হয়েছে এসব গাছের আনুমানিক মূল্য নির্ধারণ করার জন্য। সম্ভাব্য মূল্য নির্ধারণ করার পরই টেন্ডার আহবান করে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানান তিনি। এব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে সামাজিক বনবিভাগ সাতক্ষীরা জেলা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জিএম মারুফ বিল্লাহ জানান, আশাশুনি সাতক্ষীরা সড়কের পাশে যে সমস্ত গাছ আছে তার মালিক জেলা পরিষদ। তবে মরা গাছের মুল্য নির্ধারণ করে এক বছর আগে সাতক্ষীরা জেলা পরিষদকে জানিয়ে দেয়া হয়েছে। তার পরও কেন তারা গাছ কর্তনের জন্য টেন্ডর আহবান বা অন্য কোনো প্রক্রিয়া গ্রহণ করেননি তা বলতে পারবো না।