স্টাফ রিপোর্টার ঃ সাতক্ষীরা পৌরসভার কাউন্সিলরগণ স্বার্থনেষী মহলের ইন্ধনে অসৎ উদ্দেশ্যে মিথ্যা ভিত্তিহীন হয়রানীমূলক তথ্য প্রচার করছে। অভিযোগ এনে গতকাল বেলা ১১টায় সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেছেন পৌর মেয়র তাজকিন আহমেদ চিশতী। তিনি লিখিত বক্তব্যে বলেন, সাতক্ষীরা পৌরসভার মেয়র পদে বিপুল ভোটে দ্বিতীয় মেয়াদে নির্বাচিত হয়ে সততা, নিষ্ঠা ও নিরপেক্ষতা বজায় রখে দায়িত্ব পালন করছেন। বিধি মোতাবেক সকল ধর্ম ও সকল রাজনৈতিক মতাদর্শের জনগণের একজন সেবক হিসাবে কাজ করে যাচ্ছি। দায়িত্ব গ্রহন করার পর হতে পৌরসভার সকল স্তরের অনিময় ও দুর্নীতি বন্ধ করতে নানাবিধ কার্য্যকরী ও বলিষ্ঠ ভূমিকা সহ পদক্ষেপ গ্রহণ করি। ফলশ্র“তিতে কতিপয় স্বার্থনেষী মহলের ইন্ধনে ও হীন স্বার্থ চরিতার্থ করার অসৎ উদ্দেশ্যে গত ১৩ জানুয়ারী ২২ পৌর কাউন্সিল গন কর্তৃক আমার বিরুদ্ধে কতিপয় মিথ্যা বানোয়াট, ভিত্তিহীন ও উদ্দেশ্য প্রনোদিত হয়রানীকর অভিযোগ আনায়ন করেছেন। করোনা মহামারিতে পৌর এলাকার নাগরিকগণ অর্থনৈতিক ভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়ে কর মওকুফের আবেদন করেছিল বিধি মোতাবেক পূর্বের সকল মেয়র বৃন্দের কার্য্যক্রমের ধারাবাহিকতায় আমিও পৌর কর ট্রেড লাইসেন্স, পানির বিল গুলি পৌর আইন মোতাবেক গ্রহণ করি। এর বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য দপ্তরে প্রেরণ করি। জনকল্যাণে কাজ করলে কি ক্ষমতার অপব্যবহার করা হয়। বাজার ও ব্যবস্থাপনায় অনিয়ম এর মাধ্যমে অর্থনৈতিক আর্থিক সুবিধা গ্রহণে যে অভিযোগ করেছেন সেটি সম্পূর্ণরুপে মিথ্যা ভিত্তিহীন উদ্দেশ্যে প্রনোহিত, বিগত ২০১৬ আমি ১ম বারের মত মেয়র হিসাবে দায়িত্ব গ্রহণ করি। ক্ষমতাপ্রাপ্ত প্রথমে দুর্ণীতি ও অনিয়মের বিরুদ্ধে সোচ্চার হই। যার ফলশ্র“তিতে সুলতানপুর বড় বাজার একক ইজারা গ্রহীতার হাত থেকে মুক্ত করে ৬টি ভাগে ভাগ করা হয়। যার ফলে ২০১৭ সাল হতে এই খাতে সাতক্ষীরা পৌরসভা পূর্বের তুলনায় অনেক বেশি রাজস্ব আয় করে আসছে। সরকারি নিয়ম নীতি মেনে টেন্ডার কমিটির মাধ্যমে বিধি মোতাবেক ইজারা বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়। উক্ত বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী ১ম বার ১৬ মার্চ ২১ সে সময় সরকারী মূল্য অতিক্রম না করায় ২য় বার ২৪ মার্চ ২১ এবং যথাক্রমে ৩য় বার ৩১ মার্চ দরপত্রের জন্য নির্ধারণ করা হয়ে থাকে। প্রতিটি কার্য পরিচালনার জন্য সুনির্দিষ্ট টেন্ডার কমিটি আছে যার আহবায়ক পদঅধিকার বলে প্যানেল মেয়র (১) (অভিযোগকারী) এবং সদস্য একজন সহকারী পরিচালক স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়, যাদের লিখিত সুপারিশে এ সকল সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। বাজেট ছাড়া টেন্ডার ও আর্থিক বিষয়ে বলেন পৌরসভা আইন ২০০৯ এর ধারা ৬৪ মতে স্থায়ী কমিটির মতামত এবং সিদ্ধান্ত বিবেচনা করে পৌরসভার বাজেট প্রণয়ন এবং বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিভূক্ত প্রকল্প গ্রহণ স্থায়ী কমিটির মতামতের সিদ্ধান্তের ভিত্তিতে গৃহীত হয়। পৌর কাউন্সিলরগণ কর্তৃক স্ব-নির্ধারিত পরিমান অর্থ প্রদান, পৌর কাউন্সিলরগণ কর্তৃক সুপারিশকৃত অর্থ প্রদান এবং মেয়র কর্তৃক অর্থ প্রদান করা হয়ে থাকে। ময়লা ও সেফটিক ট্যাংকঃ- স্বাস্থ্য, পানি, সেনিটেশন, আবর্জনা অপসারণ ও হস্তান্তরের জন্য সুনির্দিষ্ট কমিটি ০১ জন পৌর কাউন্সিলর এর সভাপতিত্বে গঠিত আছে। যেখানে মেয়রের সরাসরি হস্তক্ষেপের কোন সুযোগ নেই। এই বিভাগে অনিয়মের তথ্য অবগত হওয়ার পর উক্ত বিভাগের স্থায়ী কমিটির সদস্য জনাব মোঃ ইদ্রিস আলী কনজারভেন্সী ইন্সপেক্টর, গত ১২ জানুয়ারী চাকুরি বিধিমালা অনুযায়ী প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা বিভাগীয় মামলা রজু ও কারন দর্শনের নোটিশ প্রদান করেন। সেটি এখনো চলমান। সেক্ষেত্রে আমার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ অগ্রহণযোগ্য। পৌরসভা কার্য্য বিধিমালা ২০১২ ধারা ৫, মেয়র এর দায়িত্ব ও কার্য্যবলী সুনির্দিষ্টভাবে বর্ণিত সাথে সাথে মেয়র ও কাউন্সিলরগণের সুবিধা, কর্তব্য, দায়িত্বভার বিধিমালা ২০১০ ধারা এ সুনির্দিষ্ট ভাবে বর্ণিত যেগুলির অপব্যবহার আমি করিনি বা করার প্রশ্নই আসে না বা উহা আদৌ পরিলক্ষিত হয়না। পৌর কাউন্সিলরবৃন্দ যে অভিযোগগুলো আমার বিরুদ্ধে করেছেন সেগুলো পক্ষান্তরে তারা তাদের বিরুদ্ধেই করেছেন। কারণ আইন অনুযায়ী প্রতিটি স্থায়ী কমিটি ও টেন্ডার কমিটি এর সভাপতি পৌর কাউন্সিলরবৃন্দ (পৌরসভা) আইন ২০০৯ ধারা ১০৪ মোতাবেক চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা তাদের হাতেই। হঠাৎ আমার বিরুদ্ধে কাউন্সিলরবৃন্দ অভিযোগগুলো করার কারণ তাদের অনৈতিক এবং দুর্ণীতির প্রশ্রয় না দেওয়া এবং টি, আর (গ্রামীন অবকাঠামো রক্ষণাবেক্ষণ) প্রকল্প পৌর কাউন্সিলরবৃন্দের দুর্ণীতি প্রমাণ পৌরসভার ১০ জন কাউন্সিলর তথ্য আমার হাতে আসায় তারা ভীত সন্ত্রস্ত হয়ে আমার বিরুদ্ধে আগেই কথিত মিথ্যা ও ভিত্তিহীন অভিযোগ করেন। পৌরসভার ২নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর সৈয়দ মাহমুদ পাপা অনৈতিক ভাবে পৌরসভার ০৬টি দোকান সরাসরি নিজের নামে বরাদ্ধ নিয়েছেন। এবং অন্য একজন কাউন্সিলর কায়সারুজ্জামান হিমেল যার ওয়ার্ড নং (১) সে তার সম্পর্কে ভাগ্নে হয়। তার বাবা ও মায়ের নামে অনৈতিক ভাবে আরো ০২টি দোকান বরাদ্ধ নিয়ে রেখেছেন বিষয়গুলো আমি অবগত হওয়ার কারণে ভীত সন্ত্রস্ত হয়ে ষড়যন্ত্র শুরু করে। অন্য দিকে প্যানেল মেয়র (১) আলহাজ্ব কাজী ফিরোজ হাসান মেয়র পদ থেকে সরিয়ে আমার স্থলে ভারপ্রাপ্ত মেয়র হিসেবে স্থলিভিসিক্ত হওয়ার জন্য দীর্ঘদিন ধরে ষড়যন্ত্র করে আসছে। যার ফলোশ্র“তিতে উক্ত কাউন্সিলর ষড়যন্ত্রমূলক ভাবে অন্যান্য কাউন্সিলরগণকে ভুল বুঝিয়ে ও প্রলুব্ধ করে তারা একত্রে সংঘবদ্ধ হয়ে আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ দায়ের করে। যাতে তারা ভবিষ্যতে পৌর সভায় দুর্ণীতি ও অনিয়মের রাজত্ব কায়েম করতে পারে। আমার বিরুদ্ধে আনীত কথিত মিথ্যা ভিত্তিহীন অভিযোগ গুলির জবাব যথাযথ ভাবে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে প্রমাণসহ প্রদান করা হয়েছে। বিষয়টি তদন্তাধীন বিধায় এ সংক্রান্তে আইনগতভাবে কোন মন্তব্য করার অধিকার আমার নেই। তদন্তকারী কর্মকর্তা ও উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের প্রতি আমার সম্পূর্ণ আস্থা আছে- এই মর্মে যে, আমারা কোন পক্ষই ন্যায় বিচার বঞ্চিত হইবে না। তিনি কথিত মিথ্যা ভিত্তিহীন ও উদ্দেশ্যমুলক অভিযোগ করেছেন মাত্র।