দৃষ্টিপাত রিপোর্ট \ সাতক্ষীরা শহর যানজটের শহর হিসেবে সা¤প্রতিক সময়ে পরিচিত পেয়েছে এবং জনসাধারন প্রতিনিয়ত বিরক্ত, বিড়ম্বনা আর বিব্রতকর পরিস্থিতির মধ্যে নিক্ষিপ্ত হচ্ছে। বর্তমান রমজানের দিন গুলোতে যানজটের কারনে যাতায়াত যোগাযোগ ব্যবস্থাকে বিশেষ ভাবে গতিহীন, মন্থর করে তুলেছে। মিনিটের পর মিনিট শহরের প্রাণকেন্দ্রের সড়কগুলোতে রৌদ্রের মধ্যে অবস্থান রোজা দারদের জন্য চরম অস্বস্থিকর পরিস্থিতির সন্নিবেশন ঘটেছে। কর্মব্যস্ত শহরের জনসাধারন প্রতিনিয়ত, প্রতিমুহুর্ত যানজটের কারনে অস্বস্তিতে ভুগছে। চলছে জনদূর্ভোগ আর সময় ক্ষেপনের উৎসব। শহরের ব্যস্ততম এলাকা নিউ মার্কেট মোড়, খুলনা রোড, পাকাপুল, থানা সড়ক, প্রেসক্লাব সড়ক, তুফান মোড়, ইটাগাছা হাটের মোড়, সর্বত্র যানজট আর যানজট। সা¤প্রতিক সময় গুলোতে যানজটের সাথে যোগ হয়েছে শব্দদুষন। শহরবাসি দৃশ্যতঃ ভয়ানক যানজট আর শব্দদূষনে কেবল অস্বস্তিতে নয়, চরমভাবে বিরক্ত, বিব্রত এবং বিড়ম্বনায় শিকার হচ্ছে। শহরের মোড়ে মোড়ে জনভোগান্তী দূরকরনে, যান নিয়ন্ত্রনে ট্রাফিক পুলিশের প্রচেস্টা আর দায়িত্ব পালনের আন্তরিকতার ঘাটতি দেখা না গেলেও এক শ্রেনীর যান চালকদের যত্রতত্র গাড়ী চালানো, কথিত যানবাহন মহেন্দ্র, ইজিবাইক, ট্রলি, ইঞ্জিনভ্যান, নছিমন করিমনের অবাধ এবং নিয়ন্ত্রহীন গতিতে চলাচলের কারনে ট্রাফিক ব্যবস্থা অনেকটা কাহিল হয়ে পড়েছে। সাতক্ষীরা জেলা বিশলক্ষাধীক মানুষের নিত্য দিনের কর্ম প্রবাহের ক্ষেত্র। বহুমুখি কাজে জেলার বিভিন্ন উপজেলা সহ এলাকা হতে জন সাধারন শহরমুখি হয়ে থাকে। বাস্তবতা হলো যানজটের পরিস্থিতি এমনই ভয়ানক পর্যায়ে পৌছেছে যে রোগী বহনের এ্যাম্বুলেন্সগুলো ও যথাসময়ে রোগী নিয়ে চিকিৎসা কেন্দ্রে পৌছাতে পারছে না। সাতক্ষীরা টার্মিনাল হতে হাটের মোড় মোটর সাইকেল চালিয়ে আসা যাওয়া করতে দীর্ঘ সময় অতিবাহিত হয়। অথচ মোটর সাইকেল দুই চাকার, সাতক্ষীরা কালিগঞ্জ সড়কটি জেলার বিশলক্ষাধিক মানুষের যাতায়াত ও যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম আর এই সড়কটি সাতক্ষীরা শহরের প্রাণকেন্দ্র দিয়ে চলমান। যাত্রীবাহী যানবাহন গুলোর কোন কোনটি খুলনা রোডে, নিউ মার্কেট মোড়ে, হাটের মোড়ে, যাত্রী নামাতে ও উঠাতে যাত্রা বিরতি করে যানজটের ক্ষেত্র নিশ্চিত করে, দুই দিক দিয়ে দুইটি যানবাহন যখন মুখোমুখি অবস্থান করে তখন সঙ্গত কারনেই যানজটের সৃষ্টি হয়, প্রাণ কেন্দ্রে অবিরাম চলছে বেহিসেবি ভাবে অপরাপর যানবাহন যার মধ্যে কথিত যানবাহনের সংখ্যাও কম নয়, শহরের সংযোগ সড়ক গুলোর কোন কোন প্রবেশ পথে বা শেষ প্রান্তে প্লিয়ার স্থাপনের জন্য যানবাহন গুলো সহজে প্রবেশ ও বের হতে না পারা ও যানজটকে ত্বরান্বিত করছে। অপেক্ষাকৃত মাঝারী যানবাহন সংযোগ সড়ক গুলোতে প্রবেশ করতে না পারাটা যানজটের কারন। শহরের থানা সড়ক, প্রেসক্লাব সড়ক, হাটের মোড় এলাকায় প্রায় সময় দেখা যায় যত্রতত্র, ট্রাক, মাইক্রোবাস পার্কিং করে রাখতে যানজটের অন্যতম কারন। বড় বাজারে সকাল নয়টার পর পায়ে হেটেও প্রবেশ করতে রীতিমত যুদ্ধে নামার প্রস্তুতি নিতে হয়। এ বাজারে সকাল, দুপুরে যানবাহন নিয়ে প্রবেশ সাধ্যমত আছে কার সাতক্ষীরা শহরের বর্তমান পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌছেছে যে, পায়ে হেটেও চলাচলে যানজটের ভয়ানক প্রভাবের কবলে পড়তে হয়। শহরের বুক চিরে যেমন যানজট অনুরুপ কোন কোন চালক নিয়ন্ত্রনহীন গতিতে যানবাহন দাপিয়ে চলছে। উভয়ের আমেজে হাইড্রোলিক্স হর্ণ বেজেই চলেছে। অথচ হাইড্রোলিক্স হর্ণ বাজানো দেশের প্রচলিত আইনে অপরাধ। শহরবাসির জন্য বা শহরে আগতদের বিশেষ বিড়ম্বনার কারন হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে শব্দদুষণ। ডাক্তার দেখানো হতে শুরু করে ইলিশ মাছ বিক্রি, পোল্ট্রি, মহিষের মাংস সহ বিভিন্ন ধরনের পন্যের বিজ্ঞাপন অবিরাম মাইকে বেজেই চলেছে। শহরের আবাসিক এলাকাগুলোতে মাইকিং করার যে আইনি বাধ্যবাধকতা আছে এক্ষেত্রে সেই আইনকেও বৃদ্ধাঙ্গলী প্রদর্শন করা হচ্ছে। কর্মব্যস্ত এবং শান্ত সাতক্ষীরার জনগোষ্ঠী যানজট, শব্দদুষন ও হাইড্রোলিক্স হর্ণ মুক্ত পরিবেশ চায়, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ শহরবাসির ইচ্ছা, আশা, আকাঙ্খাকে বাস্তবায়নে পরিকল্পিত গ্রহন করবেন এমন প্রত্যাশা ভুক্তভোগীদের।