এফএনএস: আইএমএফ থেকে সাড়ে ৪ বিলিয়ন ডলারের আর্থিক সহায়তার আশ্বাস পেল বাংলাদেশ। বাংলাদেশে সংস্থাটির সঙ্গে চ‚ড়ান্ত দর-কষাকষির পর তিন কিস্তিতে ছাড় হবে এ অর্থ। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর আবদুর রউফ তালুকদার জানান, এর বাইরেও বিশ্বব্যাংক থেকে আলাদা দুটি প্রকল্পে ১ বিলিয়ন ডলার বাজেট সহায়তা পাওয়া যাবে। তবে সাড়ে চার বিলিয়ন মার্কিন ডলার সহায়তা পেতে বাংলাদেশকে নানামুখী শর্ত দিয়েছে আইএমএফ। গতকাল রোববার যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন ডিসিতে সংস্থাটির বাংলাদেশ অফিসে এক সংবাদ সম্মেলনে গভর্নর এসব কথা জানান। গভর্নর বলেন, মূল্যস্ফীতির চাপ, ডলারের বিপরীতে টাকার মান কমে যাওয়াসহ নানা সংকটে চলতি বছর রিজার্ভে টান পড়ে বাংলাদেশের। সংকট সামাল দিতে কয়েক মাস আগে সরকার আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের কাছে সাড়ে চার বিলিয়ন বা ৪৫০ কোটি ডলার ঋণ চায়। এরই পরিপ্রেক্ষিতে আইএমএফের বার্ষিক বৈঠকে আশ্বাস মিলেছে বাজেট সহায়তার। আবদুর রউফ তালুকদার বলেন, দ্রুত আইএমএফ-বিশ্বব্যাংকের ঋণ পাওয়া গেলে কাটবে ডলার সংকট। রেমিট্যান্স, রপ্তানি ঠিক থাকলে আগামী বছরের শেষ নাগাদ বাংলাদেশ কিছুটা স্বস্তিতে থাকবে বলে প্রত্যাশা গভর্নরের। তিনি আরও বলেন, আইএমএফ বাংলাদেশ সরকারের রাজস্ব সংগ্রহ কার্যক্রমকে গতিশীল করার অনুরোধ জানিয়েছে। দেশে কর বনাম মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) অনুপাত অনেক কম। এই অনুপাত দীর্ঘদিন ধরে ৭ দশমিক ৬ শতাংশে আটকে আছে, যা দক্ষিণ এশিয়ায় সর্বনিম্ন এবং বিশ্বের সবচেয়ে কম অনুপাতের মধ্যে অন্যতম। রাজস্ব বাড়াতে আইএমএফ ভ্যাট অবকাঠামোর সরলীকরণ, রাজস্ব প্রশাসনের আধুনিকায়ন ও বড় করদাতাদের কাছ থেকে ঠিক মতো কর আদায় করতে না পারার ঝুঁকি কমানোর ব্যবস্থাপনার মতো লক্ষ্য নির্ধারণের সুপারিশ করেছে বলে জানান তিনি। আইএমএফ আরও উলেখ করেছে, ব্যাংক খাতে উচ্চ মাত্রার নন-পারফর্মিং ঋণ বাংলাদেশের জন্য একটি বড় সমস্যা। রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোতে এ সমস্যা অনেকটাই প্রকট। আইএমএফ এই খাতে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে বেশ কিছু উদ্যোগের সুপারিশ করেছে। আইএমএফ যেসব সংস্কার কার্যক্রমকে প্রাধান্য দেওয়ার সুপারিশ করেছে সেগুলো হলো- করপোরেট সুশাসন আরও বলিষ্ঠ করা, বর্তমান অবকাঠামোর ওপর তদারকি আরও কঠোর করা ও এর প্রয়োগ নিশ্চিত করা, ঋণদাতাদের অধিকার প্রয়োগের জন্য আরও বলিষ্ঠ সহযোগিতা ও ঋণগ্রহীতাদের ঋণ পরিশোধের জন্য প্রণোদনা নিশ্চিতের জন্য আইনি ব্যবস্থার যথোপযুক্ত সংস্কার। সাড়ে ৪ বিলিয়ন ডলার ঋণের মধ্যে বাংলাদেশ ব্যালেন্স অব পেমেন্ট ও বাজেট সহায়তার জন্য দেড় বিলিয়ন করে ৩ বিলিয়ন ডলার চেয়েছে। বাকি দেড় বিলিয়ন চাওয়া হয়েছে আইএমএফের নতুন উদ্যোগ, সহনশীলতা ও টেকসই সহায়তা তহবিল (ট্রাস্ট) থেকে।