মঙ্গলবার, ২২ এপ্রিল ২০২৫, ০২:১৪ অপরাহ্ন

সিন্ডিকেটের কবলে পোলট্রি মুরগির বাচ্চা

দৃষ্টিপাত ডেস্ক :
  • আপডেট সময় সোমবার, ২ ডিসেম্বর, ২০২৪

এফএনএস এক্সক্লুসিভ: সিন্ডিকেটের কবলে পোলট্রি মুরগির বাচ্চা। মুরগির দাম সহনীয় পর্যায়ে রাখতে অন্তর্বর্তী সরকার দর বেঁধে দেয়াসহ নানা পদক্ষেপ নিলেও একটি সিন্ডিকেট মুরগির বাচ্চার দাম দ্বিগুণ বাড়িয়ে অস্থির করে তুলছে। তারা সাধারণ খামারিদের কাছ থেকে নির্ধারিত দামের চেয়ে প্রতিটি মুরগির বাচ্চায় ৩০ টাকা অতিরিক্ত হাতিয়ে নিচ্ছে। এর মাধ্যমে গত দু’মাসে মাসে মুরগির বাচ্চায় অতিরিক্ত ৫৪০ কোটি টাকা মুনাফা করেছে। পোলট্রি শিল্পখাত সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়। সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার গত ১৫ সেপ্টেম্বর ডিম ও মুরগির বাচ্চার দাম সরকার নির্ধারণ করে দেয়। ওই দিন প্রতিটি মুরগির বাচ্চা ৩০ থেকে ৩৫ টাকায় বিক্রি হলেও একদিন পর থেকেই মুরগির বাচ্চার দাম বাড়াতে থাকে। সিন্ডিকেট সদস্যরা এসএমএসের মাধ্যমে এক দিনের বাচ্চা ৫৫ থেকে ৮০ টাকায় বিক্রি শুরু করে। আবার কোনো কোনো প্রতিষ্ঠান ব্রয়লার, সোনালি, লেয়ার মুরগির বাচ্চা ৫৫ থেকে ১১০ টাকায় বিক্রি করছে। সব ধরনের মিলিয়ে দেশে প্রতিদিন ৩০ লাখ মুরগির বাচ্চা উৎপাদন হয়। ওই হিসাবে প্রতিটি মুরগির বাচ্চায় গড়ে ৩০ টাকা বেশি মুনাফা করা হয়েছে। এভাবে প্রতিদিন ৯ কোটি টাকা করে গত ৬০ দিনে শুধু মুরগির বাচ্চার দাম বাড়িয়ে ৫৪০ কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়া হয়েছে। সূত্র জানায়, সিন্ডিকেটের কারণে পোলট্রি খামারিদের উৎপাদন খরচ উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়ে গেছে। ফলে প্রান্তিক খামারিরা ন্যায্য লাভ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে এবং অনেকেই পোলট্রি খাত থেকে সরে যাচ্ছে। আর করপোরেট কোম্পানিগুলো কৃত্রিম সংকট তৈরি করে বাজার অস্থির করে তুলছে। এমন পরিস্থিতিতে যদি প্রান্তিক খামারি কমে যায়, তাহলে ডিম ও মুরগির সরবরাহও কমে যাওয়ার ঝুঁকি রয়েছে, যা সরাসরি ভোক্তাদের জন্য বেশ খরচের কারণ হয়ে দাঁড়াবে। এমন পরিস্থিতিতে পোলট্রি খাত বাঁচাতে সরকারের কঠোর পদক্ষেপ প্রয়োজন। মুরগির বাচ্চা ও ফিডের বাজারে সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া জরুরি। কৃত্রিম সংকট রোধে নিয়মিত নজরদারি চালাতে হবে। মুরগির বাচ্চা ও ফিডের জন্য সুনির্দিষ্ট মূল্য নির্ধারণ করে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে হবে। তাছাড়া মুরগির বাচ্চা ও ফিডের চাহিদা এবং সরবরাহ পর্যবেক্ষণ করতে একটি নির্দিষ্ট কমিটি গঠন করা যেতে পারে। পাশাপাশি খামারিদের উৎপাদন খরচ কমাতে প্রয়োজনীয় উপকরণ সঠিক মূল্যে সরবরাহ নিশ্চিত করতে হবে। একই সঙ্গে ক্ষুদ্র খামারিদের টিকিয়ে রাখতে আর্থিক প্রণোদনা এবং সহজ শর্তে ঋণ দেয়াও প্রয়োজন। এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ পোলট্রি অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সুমন হাওলাদার জানান, বর্তমানে গভীর সংকটের মুখে বাংলাদেশের পোলট্রি খাত। ফিড (খাবার) ও মুরগির বাচ্চার বাজারে করপোরেট সিন্ডিকেটের কারণে প্রান্তিক খামারিরা আর্থিক ক্ষতির শিকার হচ্ছেন। এমন পরিস্থিতিতে শুধু খামারিরাই নন, দেশের ডিম ও মুরগির বাজারের স্থিতিশীলতাও নষ্ট হচ্ছে। গত ১৫ সেপ্টেম্বর সরকার ডিম ও মুরগির দাম নির্ধারণ করলেও মুরগির বাচ্চার ক্ষেত্রে কোনো সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা দেয়া হয়নি। এর সুযোগ নিয়ে করপোরেট কম্পানিগুলো সিন্ডিকেট করে মুরগির বাচ্চার দাম বাড়িয়েছে। কৃত্রিম সংকট দেখিয়ে অতিরিক্ত মুনাফা নেয়া হচ্ছে, যা সাধারণ খামারিদের জন্য একটি বড় সমস্যায় পরিণত হয়েছে। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে দেশের পোলট্রিশিল্প।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর
© All rights reserved © 2013-2022 dainikdristipat.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com